ছোট পর্দা হোক কিংবা বড় পর্দা, সব তারকারই সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি হল তাদের ফিটনেস। আর সুস্থ থাকতে সকল তারকাই বিভিন্ন ফিটনেস মন্ত্র অনুসরণ করেন। আজ যে তারকার ফিটনেট মন্ত্র নিয়ে আলোচনা করব, তাঁকে কিন্তু জিমে প্রায়শই ঘাম ঝড়াতে দেখা যায়। তিনি হলেন মিমি চক্রবর্তী।
প্রথমে ছোট পর্দা, তারপর বড়পর্দায় পদার্পণ আর তার পর জনপ্রতিনিধি হিসাবে কাজ। মিমি চক্রবর্তী সব অবতারেই নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আর বহুমুখী প্রতিভাধর এই অভিনেত্রীর সুস্থ থাকার দৃঢ় সংকল্প, শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন, কাজের প্রতি তাঁর ভালোবাসাই তাঁকে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা হিসাবে গড়ে তুলেছে।

বিভিন্ন সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ওয়ার্কআউটের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন মিমি, যা দেখে একটা বিষয় স্পষ্ট যে শত কাজের ফাঁকেও শরীর চর্চার ওপর বিশেষ নজর দেন মিমি।
ফিটনেস সম্পর্কে মিমির ভাবনা
- যতই ব্যস্ততা থাকুক, সারাদিনের কাজের মাঝে যোগব্যায়ামের জন্য সময় বের করে নেন মিমি।
- আর সচেতনভাবেই কাজ আর শরীরচর্চর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করেন নায়িকা।
- জিমে গিয়ে কার্ডিও ওয়ার্কআউট, ওজন প্রশিক্ষণ (ওয়েট ট্রেনিং), এবং পশ্চার কারেকশন (বিশেষ ধরনের ওয়ার্কআউট) করে থাকেন।
- তবে যখন শ্যুটিং-এর ব্যস্ততা থাকে না তখন কিন্তু সপ্তাহে ৬দিনই জিমে যান মিমি।
- মিমির সাফ কথা, যে তিনি কখনওই মনে করেন না যে বাংলা ছবির দর্শকরা পর্দায় জিরো ফিগারের বা ২২ ইঞ্চি কোমরওয়ালা নায়িকাকে দেখতে পছন্দ করবেন বলে।
- তিনি মনে করেন যে, মানুষ পর্দায় ফিট চেহারা দেখতেই বেশি পছন্দ করেন।
মিমির ফিটনেস মন্ত্র
- জিমে গিয়ে মিমির ওয়ার্কআউট শুরু হয় ট্রেডমিলে ২৫ থেকে ৪৫ মিনিট ওয়ার্ম-আপ করে। যখন তিনি কমপক্ষে ২৮০ থেকে ৩০০ ক্যালোরি হ্রাস করাতে চান, তখন তিনি কার্ডিও ট্রেনিং-এ (বিশেষ ধরণের প্রশিক্ষণ) মনোনিবেশ করেন।
- ক্যালোরি হ্রাস করার জন্য জিমের সরঞ্জাম ব্যবহার করতে খুবই ভালোবাসেন মিমি। জিমে গেলে তাঁর ট্রেনারের পরামর্শ অনুসারে, দ্য সুইস বল জ্যাকনাইফ (The Swiss ball Jackknife), হ্যাঙ্গিং লেগ রাইস (Hanging leg raise), স্ট্যান্ডিং শোল্ডার প্রেস (Standing Shoulder Press), দ্য পেকটোরাল ফ্লাই এক্সসারসাইজ (The pectoral fly exercise)-এর মতো ওয়ার্কআউট করে থাকেন।
- প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মিমি অভিনীত গ্যাংস্টার থেকে ২০১৮ সালে তাঁর টোটাল দাদাগিরি ছবিতে তাঁর চেহারার একটা বিশাল ফারাক চোখে পড়ে।
- মিমি বরাবরই নিজের বাড়িতে যোগা করতে অভ্যস্থ, কিন্তু চেহারায় কোনও বিশেষ ছাপ আনতে জিমের সাহায্য তাঁকে নিতেই হয়।
- মিমির কথায়, নিয়মিত জিম করলে তাঁর ঘুম খুব ভালো হয়। মাথা যন্ত্রণা উপশম হয়। খাওয়া-দাওয়ার অনিয়মও আর করা হয় না।
- শুধু তাই নয়, তাঁর ডান হাতের পেশী খানিকটা দুর্বল ছিল। জিমে যাওয়ার পর থেকে ডান হাতেও শক্তি ফিরে পান তিনি।
সঠিক ডায়েট
- তবে জিমের কথা তো নয় হল। আর খাওয়া –দাওয়া? সেদিক থেকে কি কঠোর ডায়েট ফলো করেন নায়িকা? একাধিক গণমাধ্যমে সাক্ষাতকারে মিমি জানিয়েছেন, তিনি মাছ, মাংস, ডিম সবই খান।
- তিনি মাটন খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তাঁর খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে একদিন মাটন থাকবেই।
- সাধারণত জিম চলাকালীন তাঁর খাদ্যতালিকায় থাকে ডিমের সাদা অংশ এবং চিকেন স্টু। যদি তাঁর ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে তিনি ভাত খান না, তবে মাঝে মাঝে ভাত অবশ্যই চলে।
- তবে যদি স্বাভাবিক ডায়েটে চলেন, তাহলে কার্যত ঘড়ির কাঁটা ধরে খাবার খান নায়িকা। আর এর জন্য নাকি নিজের ফোনে অ্যালার্মও দিয়ে থাকেন।
- সেসব দিনে সাধারণত খুব সকালে ওঠেন সারারাত জলে ভেজানো আমন্ড খান আখরোট আর কিসমিসের সঙ্গে।
- তারপর থাকে একটি ফল- আপেল বা নাশপাতি। তারপর থাকে আমলকি এবং অ্যালোভেরার জ্যুস। এর ঠিক আধ ঘণ্টা পর নায়িকা প্রাতঃরাশ সারেন, যেখানে থাকে কর্ন ফ্লেক্স এবং শিয়া ফ্লেক্স, সঙ্গে কুমড়োর বীজ, ব্লুবেরী অথবা স্ট্রবেরী এবং আমন্ড মিল্ক।
- দুপুর ২টোর মধ্যে দুপুরের খাবার সেরে ফেলেন মিমি। দুপুরে সাধারণ নিরামিষ খান তিনি। যার মধ্যে থাকে বাড়িতে তৈরি পনির, ডাল, সবজি এবং ভাত।
- মিমি ডিনার সেরে ফেলেন সন্ধে সাড়ে সাতটার মধ্যে। ডিনারে থাকে মাল্টিগ্রেন রুটি বা ওটসের খিচুড়ি। ডায়েটিশানের পরামর্শ অনুসারে সঙ্গে রাখেন চিকেন।
মন্তব্য করুন