একটা সময় ছিল যখন পেটিকোট বা সায়া নিয়ে কেউ বেশি একটা ভাবতেন না। আপাতভাবে যে পোশাকটি বাইরে থেকে দেখাই যায় না, তা নিয়ে বেশি মাতামাতির প্রয়োজন কেউ অনুভব করেননি।
সময় বদলেছে, বদলেছে পোশাক সম্পর্কে মানুষের ধারণা। আর সেই কারণে আজ শাড়ির সঠিক লুক পেতে মানানসই পেটিকোট বাছাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাড়ির সঙ্গে পেটিকোট বা সায়া যদি মানানসই না হয়, তাহলে আপনার গোটা সাজটাই কিন্তু মাটি হয়ে যেতে পারে।
পেটিকোট বাছার সময় যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন
শিরোনাম পড়ে অনেকেরই মনে হতে পারে এটা আবার কি ভাবার বিষয়? শাড়ির ভিতরে থাকা সায়া নিয়ে এত ভাবার কি আছে? একটা পরলেই হয়। এরকম ভাবলে আপনারা ভুল ভাবছেন। কারন শাড়ি লুক বা শাড়ির সাথে সুন্দর ভাবে নিজেকে তুলে ধরতে হলে সহজ ভাষায় স্টাইল করতে হলে নজর দিতে হবে পেটিকোটের উপর। সামান্য কয়েকটা বিষয় খেয়াল রাখলেই হবে।
১) সঠিক দৈর্ঘ্যের পেটিকোট

শাড়ি পরেছেন সুন্দর করে, কিন্তু হাই হিল জুতো পরতেই আলটপকা বেরিয়ে পড়ল পেটিকোট! এমন অদ্ভূত ঘটনা আপনার সঙ্গেও ঘটেছে। এর কারণ সঠিক দৈর্ঘ্যের পেটিকোট না পরা। সবচেয়ে ভাল গোড়ালির একটু উপর পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের পেটিকোট পরা। খেয়াল রাখতে হবে আপনার শাড়ির ঝুল যেন পেটিকোটের থেকে আধ ইঞ্চি বেশি হয়। তাহলে বাইরে থেকে পেটিকোটটি কোনওভাবেই দেখা যাবে না।
২) সঠিক মাপের পেটিকোট

পেটিকোট সবসময় নিজের মাপের কিনুন। অনেকসময় রঙ মিলে যাওয়ায় মা কিংবা জেঠিমার পেটিকোট পরে বেরিয়ে পরে অনেকে। কিন্তু আজকের দিনে এসব জাস্ট ভুলে যান। নিজের শাড়ি পরা লুককে আকর্ষণীয় করে তুলতে নিজের মাপের পেটিকোট কিনুন। আপনার কোমরের মাপ অনুসারে ছ’কাট বা গোল কাটের পেটিকোট কিনুন।
৩) সঠিকভাবে পেটিকোট বাঁধা

বেশিরভাগ পেটিকোট দড়ি দিয়ে বাঁধার নিয়ম থাকে। তবে দড়ি দিয়ে বাঁধা পেটিকোটের সমস্যা হল দড়ি বেঁধে নেওয়ার পর ভাল করে কোমরে গুঁজে নিতে হয়। এতে কোমরের অংশ অনেকসময়ে ফুলে থাকে, বিশ্রি দেখায়। এখন মার্কেটে চেন দেওয়া বা হুক লাগানো পেটিকোট পাওয়া যায়। শাড়িতে সার্প লুক পেতে এগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
৪) পেটিকোটের সঠিক কালার কম্বিনেশন

পেটিকোটের সঠিক রঙ নির্বাচন করাটা ব্লাউজ বাছাইয়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। শাড়ির বেস কালারের সঙ্গে মানানসই পেটিকোট বেছে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আজকের যুগ মিক্স অ্যান্ড ম্যাচের যুগ। তাই আজকাল অনেকে শাড়ির সঙ্গে কনট্রাস্ট রঙের পেটিকোটও পরেন, সেক্ষেত্রে রঙ বাছাইয়ের ব্যপারে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়া উচিত।
৫) আরামই মূল মন্ত্র

পেটিকোট শাড়িকে সঠিকভাবে এক জায়গায় ধরে রাখতে সাহায্য করে তাই পেটিকোটটি সর্বদা আরামদায়ক হওয়া উচিত। তাই পেটিকোট কেনার আগে সেটি কি ফেব্রিক দিয়ে তৈরি, ঘের কতখানি বা স্কিনে কোনও রকম সমস্যা হচ্ছে কি না তা দেখে নেওয়া দরকার। তাই বলবো পেটিকোট ভালো দোকান থেকে কিনুন।
কোন শাড়ির জন্য কেমন পেটিকোট বাছবেন!
১) সিল্ক, শিফন ও জর্জেট শাড়ির জন্য পেটিকোট

সিল্ক, শিফন ও জর্জেট মেটিরিয়ালের শাড়ির জন্য শিফন বা সাটিন মেটিরিয়ালের পেটিকোট একেবারে মানানসই। তবে জর্জেটের শাড়ি শিফনের মতো অতটাও হাল্কা হয় না। জর্জেট শাড়ি সাধারণ ভারী হয়ে থাকে। তাই তার জন্য স্ট্রেচেবেল শেপওয়্যার পরতে পারেন। এগুলিতে সাধারনত চেন দেওয়া থাকে তাই পরতে সুবিধাও হয়।
২) সুতির শাড়ির জন্য পেটিকোট
সুতির শাড়ির জন্য অবশ্যই সুতির পেটিকোট বেছে নিন। সুতির শাড়ির রঙের সঙ্গে সুতির পেটিকোট রঙের দিক থেকে একেবারে মানানসই হয়। আর আরামটা পাবেন ফ্রিতেই।

৩) লিনেন শাড়ির জন্য পেটিকোট
আজকাল বাজারে লিনেন মেটিরিয়ালের সুন্দর সুন্দর পেটিকোট পাওয়া যায়। আগে অনেকে লিনেনের সঙ্গেও সুতির পেটিকোট পরতেন। তবে অপশন যখন রয়েছে তখন সেটা ব্যবহার করাই ভালো।
৪) বেনারসির জন্য পেটিকোট
আরামের কারণে অনেকেই বিয়েতে বেনারসির নীচে সুতির পেটিকোট পরে থাকেন। তবে বিয়েতে অনেকরকম আচার-অনুষ্ঠান থাকে, যার জন্য অনেকবার ওঠা-বসা, ঘোরা-ফেরা করতে হয়, ফলে পেটিকোট বাইরে বেরিয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বেনারসির নীচে স্ট্রেচেবল শেপওয়্যার পরে নিন। এটি আপনার লুককে ইনট্যাক্ট রাখবে আর কমফর্টও দেবে।
মন্তব্য করুন