চটজলদি চুল ফার্ণিশ করে বেরোতে গিয়ে চুলের জট ছাড়াতে নিশ্চই বেগ পেতে হয়েছে আপনাকে। শুষ্ক বা লম্বা চুলের ক্ষেত্রে এটা একটা ধুন্ধুমার চেহারা নেয়। নিজের চুলের সাথেই করতে হয় চুলোচুলি। ফলে খোয়াতে হয় বেশ কিছু চুলের গোছা। এবার আপনাদের সাজেস্ট করছি কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি যাতে এই সমস্যার মুখোমুখি আর না হতে হয়।
চুলে জট বাধার কিছু কারণ:
- মোটা ও কার্লি হেয়ার।
- লম্বা ও ফাইন হেয়ার লাইনিং।
- সূক্ষ্ম ও ড্যামেজড চুলে সাধারণত জট বাঁধে বেশি।
- ঘুমোনোর সময় চুল মাথার নীচে রেখে ঘুমোনোর ফলে এবং এই সংক্রান্ত অনিয়ম।
- ব্রাশ না করার ফলে।
চুলের আগা ট্রিম করুন:
- চুলে জট লাগে তখনই যখন দুটো রাফ এন্ড যুক্ত আগা একসাথে যোগ বেঁধে যায়।
- এর ফলে চুল এর আগা ফেটে চুল রুক্ষ হয়ে যায়।
- তাই চুলের আগা সময়মতো ছেঁটে নিন।
কন্ডিশনার মাস্ট:
- চুলে শ্যাম্পু দেবার পর আমরা অনেকসময়ই কন্ডিশনার দিতে ভুলে যাই।
- শ্যাম্পু তো চুলকে একপ্রকার ব্লিচ করে এবং ময়লা বের করে দিতে সাহায্য করে।
- কিন্তু কন্ডিশনার চুলকে তার দরকার মতো কন্ডিশন করে মোলায়েম ও স্মুথ করে তোলে। ফলে জট লাগার সম্ভাবনা কমে।
আঙুল চালনা:
- সবসময় চুলে চিরুনী না দিয়ে মাঝে মাঝে তাতে আঙ্গুল চালনা করুন।
- এতে চুল সহজে জোর আঘাতে উঠে আসবেনা এবং জট ও ছেড়ে যাবে।
- আঙ্গুল আস্তে আস্তে স্ক্যাল্প এ বুলিয়ে বিলি কেটে দিতে পারেন।
বড়ো দাঁতের চিরুনির প্রয়োগ:
- লম্বা চুলের জন্য আদর্শ সবসময়ই বড়ো দাঁতওয়ালা চিরুনী। ছোট চিরুনীর বদলে তাই বড়ো দাঁত এর চিরুনির অভ্যেস গড়ে তুলুন।
- চুলের বেশি অংশ একসাথে এর সংস্পর্শে আসে ফলে ম্যানুয়ালি চুলের গিঁট খুলতে বেশি কার্যকরী সিদ্ধ হয়।
- চেষ্টা করুন প্লাস্টিক এর বদলে কাঠের চিরুনী ব্যবহার করতে এবং ভেজা চুলে চিরুনী দেবেন না। ভেজা নরম চুল আলগা হয়ে খুলে উঠে আসতে পারে।
সঠিক প্রোডাক্ট বাছুন:
- এলকোহল, সালফেট জাতীয় শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার এর ব্যবহার বন্ধ করুন। এতে আপনার চুল শুকনো ও ট্যাঙ্গেল্ড হবার চান্স থাকে।
- এমন প্রোডাক্ট বাছুন যা জট ছাড়ানো চুলের জন্য স্পেশালি রেকমেন্ডেড।
- আয়ুর্বেদ বা ভেষজ উপাদান এর ভরসা করতে পারেন এই ব্যাপারে। কেমিকেল এড়িয়ে চলুন।
ঠান্ডা জলের বাহার:
- ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধোবেন সবসময়। যদিও শীত কালে এটা চ্যালেঞ্জিং লাগতে পারে।
- গরমজলে চুল ধুলে আপনার চুলের কিউটিকলগুলো
- পাতলা হয়ে যায় শুকনো হবার পর কিন্তু ঠান্ডা জল কিউটিকল সিল করে চুল মজবুত করে ও চুলের মসৃণতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
হেয়ারস্টাইলে আনুন বৈচিত্র্য:
- পনিটেল এ চুল বাঁধা খুবই প্রচলিত একটি পদ্ধতি।কিন্তু জানেন কি বেশিক্ষন এই স্টাইলে চুল বেঁধে রাখলে তা চুলে ভাঙ্গন ধরায় ও আগা ফেটে যায়।
- মাথার বিভিন্ন অংশে নট করে চুল বাঁধুন। ফ্রেঞ্চ বা ফিসটেল ব্রেইড করে চুল বাঁধতে পারেন তাতে আপনার সাজসজ্জার দিকে নতুনত্বও এলো সাথে আপনার চুল জট পাকাবার ও আর সুযোগ পাবেনা।
- কর্ডলেস কয়েল হেয়ার টাই ও ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চুলের কোনো ক্ষতি করবেনা।
নিয়মিত ব্রাশিং:
- চুলে জট প্রবণতা থাকলে তাকে হাওয়ায় এলোমেলো হতে দিয়ে আরো প্যাঁচালো করে তুলবেন না।
- ব্রিস্টল হেয়ারব্রাশ দিয়ে দিনে ২-৩ বার চুল আঁচড়াবেন।
- আঁচড়ানোর সময় নীচ থেকে ওপরের দিকে যাবেন। এতে জটের টুইসটিং পয়েন্ট জলদি খুঁজে পাবেন ও চুলের গোড়ায় টান ও পড়বেনা।
- স্নান ও ঘুমের আগে ভালো করে ব্রাশ করে নেবেন।
বালিশ কভার:
- ঘুমোনোর সময় আমরা বালিশ এর কভারের দিকে নজর দিনা।
- কিন্তু সুতির বালিশ এর কভার চুলের ময়শ্চার শুষে নেয় ও চুলকে ড্রাই বানায়।
- এছাড়াও সুতির কাপড় চুলে ঘর্ষণ বল তৈরি করে চুলে জটের সৃষ্টি করে।
- তাই সুতির বদলে সিল্ক এর কভার ব্যবহার করুন। এতে চুল স্লিপ করবে ও আটকে যাবেনা।
সতর্কতা ও যত্ন:
- চুল স্ট্রেইট করানোর জন্য হিট দেবেন না বেশি তাতে চুল ডাল হয়ে যাবে।
- কখনোই চুলে মাত্রাতিরিক্ত ব্লো ড্রাই করবেন না। চুল তার হাইড্রেসান হারাবে।
- চুলে তেল লাগান। নারকেল তেল স্ক্যাল্প এ ৩০মিনিট ধরে মেসেজ করে তারপরে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
- চাইলে সিরাম লাগাতে পারেন। এতে চুল হবে ঘন,সিল্কি ও গ্লসি।
মন্তব্য করুন