বিয়ের পর মেয়েরা নিজের ঘর ও পরিবার ছেড়ে স্বামীর ঘরকেই আপন করে নেওয়ার চেষ্টা করে। সারা জীবন শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে মেয়ের মতো হয়ে না থেকে তাঁদের মেয়ে হয়েই ওঠার চেষ্টা করেন সব মেয়েরাই। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রমও কিছু রয়েছে।
এই ধরুন সিনেমা- সিরিয়ালে প্রায়শই দেখা যায় যে, ছেলের বিয়ে দিয়ে বাড়িতে নতুন বউ নিয়ে আসার পর থেকেই শুরু হয় অশান্তি। শ্বশুর-শাশুড়ির সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য কতরকমের কাণ্ড-কারখানাই না করে থাকে বাড়ির বউ। এমন নজির যেমন আছে, তেমনই বাস্তবে অনেক মেয়েই বলেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোক বিশেষ করে শাশুড়ি ও ননদ তাঁর সবরকম কাজেই বাধার সৃষ্টি করেন।
বউয়ের কোনও ভালো গুণই দেখতে পারেন না শাশুড়ি ও ননদ। অনেকসময়ে এইধরণের অভিযোগ সত্যি হয়ে থাকে, আবার অনেক সময়ে নতুন বউ খানিকটা ধন্দের মধ্যে থাকার ফলে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তাই আর দেরি না করে নতুন বউরা মেনে চলুন এই সহজ কয়েকটি টিপস।

১) সম্মান দিলে তবেই পাওয়া যায়
একটা খুব পুরনো কথা আছে যে, অন্যকে সম্মান দিলে তবেই অন্যের কাছ থেকে সম্মান পাওয়া যায়। তাই নিজের শাশুড়ি এবং ননদকে যথাসম্ভব সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করুন। জানেন তো, যেকোনও অশান্তির আগুনকেই ভালোবাসার শীতলতা দিয়ে নিভিয়ে দেওয়া সম্ভব, যদিও সেই প্রচেষ্টা দুতরফেরই হওয়া দরকার, তবে আপনার তরফে যেন কোনও ত্রুটি না থাকে।
২) খোলাখুলি কথা বলুন
অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় যে শাশুড়ি এবং ননদের সঙ্গে বাড়ির বউয়ের খুব একটা কথাবার্তা হয় না। এই অবস্থায় অনেক সময়েই বউয়ের এমন আচরণে খানিকটা হলেও অসন্তুষ্ট হন শাশুড়ি মা। এজন্য বউ হিসাবে আপনারই উচিত প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া। বিষয় যাই হয়ে থাক না কেন শাশুড়ি এবং ননদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করুন। মনে রাখবেন খোলাখুলি আলোচনা করলে যেকোনও ছোট-বড় সমস্যার সমাধান সম্ভব।
৩) বাপের বাড়ির সঙ্গে তুলনা করবেন না
অনেকসময়ে নতুন বিয়ের পর শ্বশুড়বাড়ি গিয়ে মেয়েরা সবকিছুর সঙ্গে নিজের বাপের বাড়ির তুলনা করেন। বাপের বাড়ির সব ভালো আর শ্বশুরবাড়ির সব খারাপ এই মানসিকতা থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ আপনার এই আচরণের জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অসম্মানিত বোধ করতে পারেন, যার ফলে আপনার প্রতিটি কাজ তাঁদের ভুল বলে মনে হতে পারে এবং সবকিছুতে আপনাকে বাধা দিতে পারেন। তাই শ্বশুরবাড়ির পরিবেশের সঙ্গে একটু একটু করে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
৪) সমস্যা থাকলে তা বুঝিয়ে বলুন
বাড়ির বউ চাকরি করলে তার পক্ষে পরিবারকে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, সেক্ষেত্রে শাশুড়ি বা ননদের মধ্যে সংসারের প্রতি আপনার উদাসীনভাব প্রকট হয়ে উঠতে থাকে। আবার অনেকসময়ে এও হয় যে বাড়ির বউয়ের কাজের ধরণ শাশুড়ি বা ননদের পছন্দ হয় না। আর এই ঘটনা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। আর সেইজন্যই বাড়তে থাকে ভুল বোঝাবুঝি আর সমস্যা। এর জন্য যদি মনে হয় সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা বাড়তে না দিয়ে সমস্যাটা বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করুন।

৫) আপনার পেশা সম্পর্কে বিশদে জানান
আজকালকার দিনে মেয়েরা নানা ধরণের পেশায় নিযুক্ত হচ্ছেন। ৯-৫টার অফিসের ধারণা আজ অতীত। তাই আপনাকে যদি অফিসের কাজে বাইরে যেতে হয় বা রাত পর্যন্ত বাড়ির বাইরে থাকতে হয়, বা দিনের একটি বিশেষ সময়ে বাড়ি থেকে কোনও কাজ করতে হয় সেই সমস্ত বিষয়ে আপনার ননদ এবং শাশুড়িকে জানান। মনে রাখবেন সততার সঙ্গে করা কোনও কাজই ছোট নয়, তাই আপনার কাজের সম্পর্কে বিশদ ধারণা যদি আপনার শাশুড়ি ও ননদকে জানান তাহলে তাঁরা অবশ্যই আপনার জায়গাটি বোঝার চেষ্টা করবেন।
শ্বশুড়বাড়ির পরিবেশটি কেমন তা খুব ভালো করে বোঝা দরকার, সেটি একবার বুঝে গেলেই নিজের আচার-আচরণ আর বুদ্ধিমত্তার জোরে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন শাশুড়ি আর ননদের বেস্ট ফ্রেন্ড।

মন্তব্য করুন