বাড়ির সামনেই যখন মাছ নিয়ে আসেন মাছওয়ালা আপনি তখনই কিনতে যান আর ভাবেন বেশ খানিকটা মাছ একবারে কিনে নেওয়া যাক! কে জানে, কাল যদি না পাওয়া যায়। কিন্তু কিনতে গিয়েই পড়লেন ফাঁপরে। এতো মাছ যে রেখে রেখে খাবেন, তা এই কাঁচা মাছ ভাল ভাবে রাখবেন কীভাবে?
মাছের নানান পদ রান্না করার জন্য কাঁচা মাছ কীভাবে ফ্রেস রাখবেন? আজকের আর্টিকেলে তাহলে আপনাদের সেই সমস্যার সমাধান করে দেব এক চুটকিতে।
১. ফ্রিজেই রাখুন বরফের উপর

- মাছ খুব সহজেই পচে যায়। আপনি যদি ভাবেন যে ফ্রিজে মাছ রেখে দিলেই আপনি অনেক দিন মাছ টাটকা রাখতে পারবেন তা কিন্তু নয়।
- ফ্রিজে রাখা পাশাপাশি আপনাকে আরও কিছু করতে হবে যা মাছ রাখবে বেশ টাটকা। যেমন আপনাকে ফ্রিজেই মাছ রাখতে হবে বরফের উপর।
- সাধারণত মাছ জলের বেশ নিচে চলাফেরা করে, যেখানকার উষ্ণতা বেশ কম। তাই সেই তাপমাত্রায় মাছ ভালো থাকে। মাছ একবার ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে সেটি একটি ফুটো থাকা পাত্রে রাখুন। স্ট্যান্ড থাকা পাত্র নিতে হবে।
- এবার আরেকটি বড় পাত্রে বরফ কুচি করে তার উপর রেখে দিন মাছের পাত্রটি। মাছের গায়ে যেন বরফ না যায়।
- আর মাছের পাত্রটির উপর অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে দিন। এতে মাছ অনেক দিন ভালো থাকবে।

অ্যামাজনে থেকে আপ্নারা এরকম বাস্কেট পেয়ে যাবেন। আপাতত লকডাউনের কারনে কিনতে পারবেন না। তবে পরে নিশ্চয়ই প্রয়োজন হলে অর্ডার করতে পারবেন।
২. ফ্রিজিং করুন
- আজকাল বাজারে ফ্রিজিং ব্যাগ পাওয়া যায়। সেটিও আপনি ব্যবহার করতে পারেন মাছ অনেক দিন ভালো রাখার জন্য।
- মাছ প্রথমে ভালো করে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিয়ে সেটি আগে শুকিয়ে নিন খানিক পাখার তলায়। তারপর সেটি ফ্রিজিং ব্যাগে ঢুকিয়ে দিন আর মুখ বন্ধ করে দিন।
- এবার এই ফ্রিজে রাখুন আর ০ ডিগ্রী বা তার চেয়েও কম তাপমাত্রায় রাখতে পারেন। ডিপ ফ্রিজেই রাখার চেষ্টা করুন।
৩. অন্য খাবারের থেকে আলাদা রাখুন
- ফ্রিজে রাখা অন্য খাবারের থেকে কাঁচা মাছটি কিন্তু আলাদা করে রাখতে হবে।
- পাশাপাশি এই মাছ রাখতে হবে একটি এয়ার টাইট কোনও পাত্রে, যাতে এই মাছের সংস্পর্শে কোনও ভাবেই হাওয়া না লাগে।
- বাইরের হাওয়া কিন্তু মাছ পচিয়ে দেবে। ঠিক সেই কারণেই ডিপ ফ্রিজে রাখার কথা বলা হয়।
৪. নুন আর লেবু ব্যবহার করুন

- নুন আর লেবু খুব সহজেই যে কোনও জিনিস অনেক দিন ধরে ভালো রাখতে পারে। সেই কারণেই আমাদের মা-ঠাকুমারা আচার তৈরি করলে তাতে নুন আর লেবুর রস দেন, যাতে অনেক দিন আচার ভালো থাকে।
- এই পদ্ধতি কিন্তু মাছের ক্ষেত্রেও ব্যবহার কড়া যায়। কাঁচা মাছ ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন পাখার তলায়।
- তারপর তাতে ভালো করে নুন আর লেবুর রস মাখিয়ে নিন। খানিক ক্ষণ রেখে দিন। তারপর ফ্রিজে রাখুন। দেখবেন অনেক দিন মাছ টাটকা থাকবে।
৫. হলুদের জুড়ি নেই
- আপনি এতো দিন মাছ রান্নার আগে হলুদ মাখাতেন মাছে এটা ভেবে যে হলুদ মাছের ওই আঁশটে গন্ধটা মেরে দেবে। কিন্তু এটা কি জানতেন যে হলুদ খুব ভালো ভাবে সংরক্ষণের কাজ করে? বোধহয় না।
- এবার থেকে মাছ ভালো রাখতে হলুদ ব্যবহার করুন। মাছ ধুয়ে শুকিয়ে নিয়ে তাতে বেশ ভালো করে হলুদ মাখিয়ে নিন। যখন দেখবেন হলুদ শুকিয়ে গেছে মাছের গায়ে তখন ফ্রিজে রেখে দিন।
- এক্ষেত্রে আর নুন দিতে হবে না। যখন মাছ রান্না করবেন তখন মাছ বের করে ভালো করে ধুয়ে নিলেই কিন্তু অতিরিক্ত হলুদের গন্ধ চলে যাবে।
৬. গোলমরিচে মুশকিল আসান
- জানেন তো কেন আমাদের দেশ থেকে ইংরেজরা গোলমরিচ নিয়ে যেতেন তাঁদের দেশে? শুধু তাঁরাই বা কেন, যারা যারা এদেশে এসেছেন তাঁরাই এই গোলমরিচের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। কারণ তাঁরা দেখেছিলেন গোলমরিচের আছে এক আশ্চর্য জাদু।
- খুব সহজেই গোলমরিচ খাবার অনেকদিন টাটকা রাখতে পারে। ফ্রিজ যখন আবিষ্কার হয়নি তখন কিন্তু গোলমরিচ খুব বেশি ব্যবহার করা হত যে কোনও কিছু ভালো রাখার জন্য কাঁচা অবস্থায়।
- আপনিও মাছ ভালো রাখতে মাছে বেশি করে গোলমরিচ গুঁড়ো মাখিয়ে রাখতে পারেন। এতে কিন্তু আঁশটে গন্ধও চলে যাবে।
তাহলে দেখলেন তো, ফ্রিজে মাছ রাখাই যথেষ্ট নয়, তার সঙ্গে আরও কিছু জিনিস ব্যবহার করতে হবে আপনার মাছ ভালো আর টাটকা রাখার জন্য। তবেই তো বাড়িতে অনেক মাছ রেখে অনেক দিন ধরে সেই মাছের স্বাদ নিতে পারবেন।
মন্তব্য করুন