শাস্ত্রের একটা স্বতন্ত্র স্থান রয়েছে আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতিতে। শাস্ত্রে কেবল চোখ নাচাই নয় প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাঁপার কারণ সুনির্দিষ্ট কারণ ও ব্যাখ্যা সহকারে করা আছে।
বর্তমান প্রজন্ম একে যদিও কুসংস্কার বলেই মানে, বিজ্ঞান এর উন্নতির নিরিখে আমাদের আলোচনা কিন্তু দুটো দিক নিয়েই হবে। আর আপনিও জেনে যাবেন বাম চোখের ফড়ফড় করা কি সত্যিই দুশ্চিন্তার পারদ চড়ানোর উপযুক্ত!
বাম চোখ কাঁপার অর্থ শাস্ত্রমতে:
- ছেলেদের বাম চোখের পাতা এবং ভ্রূ কাঁপলে শত্রুর সাথে ঝগড়া, দ্বন্দ্ব, অশান্তি ইত্যাদির সূত্রপাত নির্দেশ করে। নতুন করে শত্রু বৃদ্ধি ও ঘটে বলে মনে করা হয়।
- মেয়েদের বাম চোখের নীচের অংশ পিটপিট করলে কারো কাছে অপমানিত বা লজ্জিত হবার আশঙ্কা থাকে।
- যদি চোখের উপরের অংশ(নাকের কাছে) লাফাতে থাকে তবে তা নিশ্চিত ভাবে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা বা ঘোর মঙ্গল সূচিত করে।
- যদি চোখের উপরের অংশ(কানের কাছে) অর্থাৎ কানের কাছে যে চোখের কোণ রয়েছে সেখানে যদি কাঁপুনি দেখা যায় তবে স্বাস্থ্যের অবনতি হয়।
- চোখের মাঝের অংশ ফড়ফড় করলে টাকাহানির যোগ প্রবল হয়।
চোখের পাতা দপদপ করা নিয়ে বিজ্ঞান কি বলে?
- চোখের পাতার পিটপিট করা মানবশরীরের অন্যতম স্বভাবধর্ম। চোখের সংকোচন ও প্রসারণের ফলে চোখের দুটো বা তার বেশি পেশী একই সাথে একটা বিন্দুতে মিলিত হয়, তখন চোখ অনিচ্ছাকৃতভাবে আপনা আপনি স্পন্দিত হতে থাকে। এর জন্য চোখে স্ট্রেন তৈরি হয় যদিও তাতে ব্যথার লেশমাত্র থাকে না। এটা সেরেও যায় নিজে থেকেই।
চোখ লাফানোর কারণ:
- কম্পিউটার এর স্ক্রিনে দীর্ঘক্ষণ চোখ রেখে কাজ করার ফলে, ঘুম কম হবার জন্য চোখে এই সমস্যা দেখা দেয়।
- কম আলোতে বসে বেশিক্ষন কাজ করা বা পড়াশোনা করলেও এই প্রবণতা দেখা দেয়।
- চোখের ফ্লুইড শুকিয়ে চোখ ড্রাই হয়ে পড়ে তাই চোখ লাফিয়ে উঠে নিজের ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়।
- অনেকের এলার্জি বা চোখের জলে হিস্টামিন এর ক্ষরণ থেকেও চোখের পাতা কাঁপার লক্ষণ দেখা যায়।
- অতিরিক্ত মদ্যপান এর ফলেও এটি হতে দেখা যায় বলে অনুমান।
প্রতিকারের ব্যবস্থা:
- ঘুমের সময় বাড়ান এবং স্ট্রেস ফ্রি হয়ে ঘুম দিন। পর্যাপ্ত ঘুম হলে চোখের নাচুনি তো কমবেই আর চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল ও পড়বেনা।
- পড়াশোনা বা অফিসে কাজ দীর্ঘক্ষণ করলে কিছুক্ষন পর পর জলের ঝাপটা দেবেন। এতে অনেকটাই উপকার পাবেন।
- হালকা হাতে চোখের উপর ও দুদিকে মৃদুভাবে ম্যাসাজ দিতে পারেন। এতে চোখের আরাম অনুভূত হয় আর কাঁপুনি থেমে যেতে সাহায্য করে।
প্রত্যেকের নিজস্ব বিশ্বাস রয়েছে। কেউ কুসংস্কার এর নিদান দেবে তো কারো কাছে সেটাই হয়ে ওঠে বিশ্বাস আঁকড়ে ধরে থাকার খড়কুটো। আমরা প্রত্যেকের ফিলিংস ও ভাবনার সমাদর করি, যদি কারোর ভাবাবেগে আঘাত দিয়ে থাকি তবে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। এই ব্যাপারে আপনাদের কি মত? কি মনে করেন আপনারা যে চোখের পাতা কাঁপা শুভ না অশুভ নাকি পুরোটাই বুজরুকি? সাজেশন ও কমেন্ট করে জানান।
মন্তব্য করুন