বসন্তকালে সিজিন চেঞ্জের সাথে যার আনাগোনা লেগে থাকে সেটা হলো পক্স বা জলবসন্ত। এই সাংঘাতিক ছোঁয়াচে রোগ সাথে করে আনে নাছোড়বান্দা দাগ যেটা মুখ থেকে শরীরে রোগ সারার পর ও ছাপ রেখে যায়।
এটার থেকে রেহাই পেতে অনেকেই নাকানিচোবানি খান এবং চিন্তার ভাঁজ পড়ে কপালজুড়ে। সঠিক সময়ে যত্ন ও ব্যবস্থা না গ্রহণে এই দাগ হতে পারে চিরস্থায়ী কারণ এই দাগ তো আর পাঁচটা দাগের মতো নয়। আজ আপনাদের জন্য থাকলো এমন কয়েকটা ঘরোয়া টোটকা যা দিয়ে এই দাগ ভ্যানিশ করে দেবেন আপনারা নিজেই।
সাবধানের মার নেই:
- সাবধানের মার নেই এই কথাটা আমরা সবাই জানি কিন্তু এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে। রোগ চলাকালীন যদি আগাম সতর্কতা নেওয়া যায় তবে দাগ হবার সম্ভাবনা অনেকটাই কমিয়ে ফেলা যায়।
- তাই দাগ প্রতিরোধের জন্য রোগ চলার সময় এসাইক্লোভির বা ভ্যালাসাইক্লোভির এর মতো ওষুধ সেবন করা যেতে পারে ফলে দাগ,ফোস্কা অতটা পড়বে না।
স্পর্শকাতর ত্বকে:
- এবার অনেকের ই প্রশ্ন থাকে যে ত্বক যদি সেন্সিটিভ হয় তবে উপায়? হ্যাঁ তার জন্য সহজ পন্থা হলো রোগীকে এমন ঘরে রাখুন যাতে হাওয়া আলো খেলা করতে পারে। ফলে সাফোকেশন হবেনা।
- যাতে প্রত্যক্ষ সূর্যরশ্মি গায়ে না পড়ে সেজন্য পর্দা দিয়ে রাখুন। না হলে সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রে দাগ এর উপর পড়ে তা আরো গাঢ় করে তোলে। ফলে এটা একটা পূর্ববর্তী কশান নিয়ে রাখতেই পারেন।
র্যাশ ও চুলকুনি:
- ত্বকে এইসময় র্যাশ ও চুলকুনির উপসর্গ দেখা দেয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু সেটার উপর কখনোই নখ বসাতে যাবেন না! এর ফলে সংক্রমণ আরো বেড়ে দাগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- ফুসকুড়ি ও দাগের উপর ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করতে পারেন যাতে প্রকোপ কমানো যায়।
ডাবের জল:
- ডাবের জল পক্সের দাগের উপর খুবই কার্যকরী হয়। ডাবের জলের মধ্যে থাকা সাইটকাইনিন স্কার দূর করে দেয় সহজে।
- তুলো ভিজিয়ে তা অল্প অল্প করে লাগান দাগের উপরে।নিয়মিত ব্যবহার করলে সুফল পেতে দেরি হবেনা।
বেকিং সোডা:
- বেকিং সোডা ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে। এতে এসিডিক উপাদান যেহেতু নেই তাই এটি ত্বকে হওয়া দাগ থেকে গর্ত সৃষ্টি হতে বাধা দেয় এর মধ্যে থাকা এলকেলাইন।
- ২ টেবিলচামচ জলের সাথে ১ টেবিলচামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। সেটা ত্বকের উপর এপ্লাই করে ৫মিনিট মতো রাখতে হবে। তারপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মধুর সাথে অ্যালোভেরা:
- মধু ও এলোভেরা দুটিই এন্টি-মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট। এতে উপরি পাওনা হিসেবে এন্টি-ব্লেমিশ ও আয়ুর্বেদিক সংস্পর্শ।
- এর মিশ্রণ দাগের ভেতরে গিয়ে এপিডার্মিস লেভেল ময়েশ্চারাইজ করে। টিস্যু মেরামত হবার ফলে কিছুদিনের মধ্যেই দাগ মিলিয়ে যায়।
ফেস মাস্ক:
- এই ফেস মাস্কটি বানানোর জন্য ১টেবিলচামচ চন্দনগুঁড়ো, ১ টেবিলচামচ দুধ ও ১ চামচ পেঁপেবাটা একসাথে মিশিয়ে নিন।এটা রাতে ঘুমাতে যাবার আগে লাগিয়ে নেবেন।
- এই মাস্কটি দাগ এর জ্বলুনি ঠান্ডা করে। মৃত চামড়ার এক্সফোলিয়েশন ঘটায় ফলে দাগ ফিকে হয়ে আসে।
লেবুর রস:
- ১টেবিলচামচ লেবুর রস এর সাথে ১টেবিলচামচ জল মিশিয়ে মিশ্রণটা দাগের উপর ম্যাসাজ করতে পারেন।প্রাকৃতিক ব্লিচ এর কাজ করে। রোদের আলো লাগাবেন না ফলে বিক্রিয়া হয়ে সমস্যা হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ উপায়:খাচ্ছে
- শুধুমাত্র বাহ্যিক যত্নই পর্যাপ্ত নয় শরীরের ভেতরের অংশকেও সমানভাবে সচল রাখতে হবে।
- ভিটামিনকে যুক্ত খাবার পক্সের দাগের যম বলা চলে। তাই রোজকার খাদ্যতালিকায় ভিটামিনকে সমৃদ্ধ খাবার যেমন ব্রকোলি, টমেটো, বাঁধাকপি, পালংশাক ইত্যাদি রাখুন। উপকৃত হবেন।
- দিনে পরিমিত জল পান করুন অন্তত ৮গ্লাস। জল ত্বকের মধ্যে কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি করে, ফলে সমানভাবে টোনড হয় ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে দাগ এর ঘনত্ব কমে আসে।
মন্তব্য করুন