অথেন্টিক বাঙালি খাবারের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় নিরামিষ পদটি হল ধোকার ডালনা। অনুষ্ঠান বাড়িতে দুপুরের ভুড়িভোজে ধোকা একটি অত্যাবশকীয় পদ। ছোলার ডালের ধোকা বানিয়ে তার নিরামিষ ঝোলের স্বাদ যেন অমৃত।
তবে বাড়িতেও একেবারে ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনারাও বানিয়ে নিতে পারেন ধোকা, এর জন্য সমস্ত উপকরণের পরিমাণ এবং পরিমাপ সঠিক হওয়া চাই। তাহলেই একেবারে অনুষ্ঠান বাড়ির মতো ধোকা বানিয়ে নিতে পারবেন বাড়িতেই। তাহলে আর সময় নষ্ট না করে দেখে নিন রেসিপি।
ধোকার বড়া বানাতে লাগবে:
- ছোলার ডাল – ২০০ গ্রাম
- কাঁচা লঙ্কা কুচি – ৬ গ্রাম
- নুন – ৬ গ্রাম মতো
- চিনি – ১২ গ্রাম
- জল – ৬০ গ্রাম
- রোস্টেড – বাদাম ২০ গ্রাম
- সাদা তেল – ২০ গ্রাম
- নারকেল কোরা – ২০ গ্রাম
- আদা বাটা – ২০ গ্রাম
- জিরে গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
- হিং – ১/৪ চা চামচ
- ময়দা – ২ টেবিল চামচ
প্রণালী:
প্রথম ধাপঃ
সবার প্রথমে ছোলার ডালটা সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। এবার পরের দিন ডালের একটা পেস্ট তৈরি করে নিন। এরজন্য একটি মিক্সারে একে একে জল ঝরানো ছোলার ডাল, কাঁচা লঙ্কা কুচি, নুন, চিনি এবং জল দিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিন। মনে রাখবেন ধোকা তৈরির জন্য ডালের স্মুদ পেস্ট কখনওই বানাবেন না। কিছু কিছু গোটা বা ভাঙা ডালও যেন এর মধ্যে থাকে। তাহলে ধোকা অনেক বেশি মুচমুচে হয় এবং খেতেও ভাল লাগে। তবে মিক্সারে যদি একবারে ডাল পিষতে না পারেন, তাহলে দু-বারে ডাল পেস্ট করে নিন।
দ্বিতীয় ধাপঃ
অন্যদিকে গ্যাসে কড়াই বসিয়ে তাতে তেল গরম করে তার মধ্যে নারকেল কোরাটা দিয়ে হালকা বাদামী করে ভেজে নিন ৩০ সেকেন্ডের জন্য। এর মধ্যে আদা বাটা দিয়ে আরও ৩০ সেকেন্ড নাড়তে থাকুন। হয়ে গেলে এর মধ্যে জিরে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো এবং হিং দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। এরপর এর মধ্যে পেস্ট করে রাখা ছোলার ডালটা দিয়ে দিন। মশলাটার সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
তারপর এর মধ্যে দিয়ে দিন রোস্টেট বাদামের কুচিটা। এই সময় অল্প আঁচে আপনাকে ডালটাকে শুকিয়ে নিতে হবে। এই সময়টা সাবধান থাকবেন কারণ ডালটা কড়াইয়ে লেগে যেতে পারে। খানিকক্ষণ পরে দেখবেন ডালের রঙ বদলে গিয়েছে এবং ডালের মিশ্রণটি একটি মন্ডে পরিণত হয়েছে। এরপর তা নামিয়ে নিন।
তৃতীয় ধাপঃ
একটি সমান জায়গায়, (আপনার রান্নাঘরের কিচেন স্ল্যাবও হতে পারে) একটু তেল মাখিয়ে নিন। তার ওপর ডালের মিশ্রণটি দিয়ে দিন। একটি খুন্তির সাহায্যে ডালটা সমানভাবে ছড়িয়ে দিন, যাতে কোথাও উঁচু-নীচু না থাকে। এইভাবে একটা বড় বরফির শেপ দিয়ে দিন। মন্ডটাকে এইভাবে ঠান্ডা হওয়ার জন্য ছেড়ে দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি ছুরির সাহায্যে লম্বালম্বি এবং আড়াআড়ি তিনভাগ করে কেটে নিন। এতে করে আপনি ১৬ টুকরো ধোকার বড়া পেয়ে যাবেন। মন্ডটি একেবারে ঠান্ডা হয়ে গেলে তবেই ধোকা গুলিকে আলাদা করবেন, নাহলে কিন্তু ভেঙে যাবে।

চতুর্থ ধাপঃ
অন্য একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ জলের মধ্যে ২ টেবিল চামচ ময়দা গুলে নিন। এই ময়দা গোলাটা এবার ধীরে ধীরে ধোকার বড়াগুলির গায়ে অল্প অল্প করে লাগিয়ে নিন, এতে করে ধোকাগুলির আরও ভালো বাইন্ডিং হবে, ছেড়ে যাবে না। এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে ধোকাগুলি মাঝারি আঁচে ডিপ ফ্রাই করে নিন। গোল্ডেন ব্রাউন রঙ এলে ভেজে তুলে নিন। এই পর্যায় ধোকাগুলিকে ঠান্ডা করে আপনারা ফ্রিজে স্টোর করে রাখতে পারেন। সুবিধামতো ডালনা বানিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও চায়ের সঙ্গেও খেতে পারেন স্ন্যাক্স হিসাবে।
মন্তব্য করুন