শরীর সুস্থ রাখতে যেমন পুষ্টিকর খাদ্যগগ্রহণ করাটা বিশেষভাবে জরুরী, তেমনই চুলের পুষ্টির জন্যও চুলের চাই বিশেষ খাদ্য। হেনা বা মেহেন্দি বা মেহেদি আপনার চুলের একটি বিশেষ খাদ্য।
হেনা করার ফলে চুলের কী কী উপকার হয়, তা আপনারা অনেকেই জানেন, কিন্তু জানেন কি চুল থেকে হেনা ধুয়ে নেওয়াটাও সমানভাবে জরুরী। কিন্তু অনেকের কাছে মেহেদি করার পর তা ধুয়ে নেওয়ার কাজটা খুবই ঝক্কির বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মেহেদি যদি সঠিকভাবে ধুয়ে নেওয়া যায়, তাহলে আপনারা কিন্তু সিল্কি, বাউন্সি চুল পেয়ে যেতে পারেন।
অনেকেই এমন রয়েছেন যাঁরা বাথরুমে শাওয়ারের তলায় ঘাড় নীচু করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চুল থেকে মেহেদি ধোওয়ার চেষ্টা করে যান, এতে তো ঘাড় ব্যথা হয়ই, সেইসঙ্গে জলও অনেক খরচ হয়, কিন্তু ঠিকভাবে চুল থেকে মেহেদি ধুয়ে ওঠা হয় না। মেহেন্দি ধুয়ে ফেলার সহজ পদ্ধতি কিন্তু আছে। জেনে নিন।
স্টেপ ১
- মেহেদি করার পর নয়, বরং মেহেদি করার আগে শ্যাম্পু অ্যাপ্লাই করুন।
- শ্যাম্পুর কাজ হল আপনার চুলের মধ্যে থাকা অতিরিক্ত তেল ধুয়ে সাফ করে দেওয়া। যার ফলে আপনার চুলটা ড্রাই দেখাতে পারে।
- আর মেহেদি অতিরিক্তমাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় তা অ্যাপ্লাই করার পর আপনার চুল আরও ড্রাই হয়ে যেতে পারে। এর জন্য যেটা করবেন অবশ্যই মেহেদি করার আগের দিন শ্যাম্পু করে নিন।
- এরপর যখনই মেহেদি অ্যাপ্লাই করবেন আপনি দেখতে পাবেন যে, মেহেদির রঙ খুবই সুন্দর এসেছে।
- আর আপনার যদি পাকাচুলের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে ফলাফলটা হাতে নাতে পাবেন। দেখতে পাবেন যে আপনার পাকাচুলগুলিও সুন্দর বাদামী রঙ হয়ে গিয়েছে।
- এতে করে মেহেদির রঙ যেমন সুন্দরভাবে শুষে নেয়, তেমনই ধোয়ার কাজটাও সুবিধাজনক হয়।
স্টেপ ২
- মেহেদি করার পর রঙ ভালো পেতে যেহেতু মেহেদি মাথায় কয়েক ঘণ্টা রেখে দেওয়া হয়, তাতে করে তা শুকিয়ে যায়।
- এর জন্য আপনাকে প্রথমেই যেটা করতে হবে তা হল, শাওয়ার বা কলের নীচে সরাসরি চুলটা ধুয়ে নিন।
- হাতের সাহায্যে নাড়িয়ে চুলের মধ্যে থেকে মেহেদি তুলে ফেলার চেষ্টা করুন। এই সময় হাতের সাহায্যে আলতো করে স্ক্যাল্পের ওপর মাসাজ করতে থাকুন, যাতে স্ক্যাল্পের মধ্যে আটকে থাকা মেহেদির পার্টিকলগুলি সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে।
- এরপর চুলের লেন্থ-এ হাতের সাহায্যে ঘষতে থাকুন, যাতে সেখান থেকে পার্টিকেলগুলি সহজেই বেরিয়ে যেতে পারে।
স্টেপ ৩
- এরপর যেটা করবেন তা হল আপনার পছন্দসই যেকোনও একটা কন্ডিশনার নিন এবং তা অবশ্যই যেন প্যারাফিন এবং সালফেট-মুক্ত হয়, সেটা খেয়াল রাখবেন।
- এবার হাতের তালুতে কন্ডিশনার নিয়ে তা সারা চুলে ভালো করে অ্যাপ্লাই করে নিন। দুই হাতের সাহায্যে এমনভাবে সারা চুলে লাগেবেন যাতে সমস্ত চুলে কন্ডিশনার লেগে যায়।
- সাধারণত চুলে কন্ডিশনার কিছুক্ষণ রেখে দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ভালো করে অ্যাপ্লাই করে নেওয়ার পর আর অপেক্ষার দরকার নেই, ততক্ষণাৎ ধুয়ে নিতে হবে।
- প্রসঙ্গত, হেনা ধুয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কন্ডিশনিংটা কিন্তু খুবই প্রয়োজনীয়। অনেকেই দাবি করেন, হেনা লাগানোর পর চুলটা কেমন কাঠির মতো হয়ে যায়। হেনাতে অতিরিক্ত মাত্রায় প্রোটিন থাকার কারণে এমনটা অনুভূত হয়, এতে কোনও অসুবিধা নেই। আর খুব ভালো হয় যদি কন্ডিশনিং-এর পর স্টিম অ্যাপ্লাই করা যায়। স্টিম আপনার চুলকে সফ্ট রাখতে সাহায্য করে।
স্টেপ ৪
- সেইদিনের মতো হেয়ার ওয়াশ শেষ হওয়ার পর ওইদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে চুলে অয়েল মাসাজ করুন। খুব ভালো হয় যদি হট অয়েল মাসাজ করা যায়। এতে করে আপনার স্ক্যাল্প যদি অতিরিক্ত মাত্রায় ড্রাই হয়েও থাকে তাহলে তেল আপনার চুলের সেই পুষ্টি ফিরিয়ে দেবে।
স্টেপ ৫
- আর সবশেষে যেটা করবেন তা হল শ্যাম্পু। অর্থাৎ আগের দিন রাতে চুলে তেল মাসাজ করে শুয়ে পড়ে, পরের দিন চুলে অবশ্যই শ্যাম্পু করুন।
- দেখবেন আপনার চুল মাখনের মতো সফ্ট হয়ে গিয়েছে, আর চুলে মেহেন্দির রঙ একেবারে গাঢ় হয়ে বসেছে।
মন্তব্য করুন