করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসের আরেক নাম ২০১৯ এনসিওভি। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে গোটা চীন জুড়ে। ইতিমধ্যে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এই ভাইরাসের প্রকোপে। চীন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বের নানা দেশে হানা বসাচ্ছে এই মারণ ভাইরাস।
করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি
মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে উৎপত্তি হয় এই ভাইরাসের। বাদুড় এই ভাইরাস বহন করার মূলে। বাদুড়ের থেকে মানুষের দেহে এটি প্রবেশ করেছে। তারপর আক্রান্ত মানুষের থেকে এটি ছড়াতে শুরু করেছে। চীন ছাড়া বিশ্বের আরও ২০টি দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গিয়েছে এখন অবধি। ভারতবর্ষ রয়েছে সেই তালিকায়।
খোদ পশ্চিমবঙ্গে চীন থেকে আসা বাঙালী ছাত্রের শরীরে এই ভাইরাস থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তাকে বেলেঘাটা আই ডি হসপিটালে রেখে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
করোনা ভাইরাসের লক্ষণ
- করোনা ভাইরাসের লক্ষণ হল জ্বর, শুষ্ক কাশি আর শ্বাসকষ্ট।
- এই ভাইরাস শরীরে ঢোকার দুই থেকে চোদ্দ দিনের মধ্যেই লক্ষণ দেখা দেওয়া শুরু হয়।
- করোনা ভাইরাস একজন মানুষের দেহ থেকে খুব দ্রুত আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।
- হাঁচি-কাশির মাধ্যমেই এটি ছড়াতে পারে। সাধারণত ঠাণ্ডা লাগার লক্ষণ প্রথম স্টেজে দেখা দেয়, যা পরে বাড়তে থাকে।
- আরও গুরুতর ক্ষেত্রে এটি নিউমোনিয়া, সারস (SARS), কিডনি অকেজো হয়ে মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা কি?
নভেল করোনা ভাইরাসের প্রতিষেদক বা কোন টিকা এখনও আবিষ্কার হয়নি। গবেষণা চলছে। বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের একটি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছেন তবে সতর্ক করেছেন যে ২০২১ সালের আগে এটির ব্যবহারের কোন সম্ভাবনা নেই। কি কি করবেন আর কি কি না জেনে নিন।
ভাইরাস থেকে সতর্কীকরণ
করোনা ভাইরাস থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে WHO কি কি করতে বলছে জেনে নিন।
- অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানেটাইযার বা সাবান এবং জল দিয়ে হাত ঘন ঘন ধুতে থাকুন।
- দূরত্ব বজায় রাখুন একে অপরের থেকে। নিজের এবং অন্যান্য ব্যক্তির মধ্যে কমপক্ষে এক মিটার (3 ফুট) দূরত্ব বজায় রাখুন। বিশেষত যারা কাশি, হাঁচি এবং জ্বরে আক্রান্ত তাদের থেকে দূরে থাকুন।
- চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। কারন হাত ভাইরাস দ্বারা যদি দূষিত হয়। দূষিত হাত দিয়ে চোখ,নাক বা মুখ স্পর্শ করার ফলে তা আপনার শরীরে এই ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সহজে প্রবেশ করে যেতে পারে।
- জ্বর, কাশি বা শ্বাস কষ্টের সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করে দিন।
- সাধারণ সতর্কতা হিসাবে, প্রাণী পণ্য বাজারে গিয়ে সাধারণ স্বাস্থ্যকর পদক্ষেপগুলি অনুশীলন করুন। প্রাণী এবং পশুর পণ্যগুলিকে স্পর্শ করার পরে সাবান জল দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
- অসুস্থ প্রাণী বা ক্ষতিগ্রস্থ প্রাণী থেকে দূরে থাকুন। বিশেষ করে বিড়াল, কুকুর, ইঁদুর, পাখি, বাদুড় থেকে সাবধান। সম্ভাব্য দূষিত পশুর বর্জ্য এড়িয়ে চলুন।
- বাড়িতে পোষা কোন প্রাণী থাকলে তার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন। কোন রকমের শরীর খারাপ দেখলে তার চিকিৎসা করুন পশুচিকিৎসালয়ে নিয়ে গিয়ে।
- কাঁচা বা কম রান্নাকরা খাবার এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে মাংসের ক্ষেত্রে। সাবধানতা বসত কাঁচা মাংস, দুধ বা অন্যান্য প্রাণীজাত খাবার যতটা সম্ভব না খাওয়াই ভালো এই সময়।
- বাইরে বেরোলে মাস্ক পরে বেরনোর চেষ্টা করুন। অযথা ভিড় জায়গায় এই সময় বেশিক্ষণ না থাকাই ভালো।
মন্তব্য করুন