ভারতীয় সংস্কৃতিতে নানা ধর্মাচারণে উপোষ করার এক বিশেষ মাহাত্য চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। সমাজে বেশির ভাগ সময় ধর্মীয় কারণে অধিকাংশ মানুষ উপোষ করেন তা আমরা সবাই জানি।
ধর্মীয় ভাবাবেগের কথায় না গিয়ে আসুন জেনেনি উপোষ করার কিছু উপকারিতা, সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। উপোষ করার কিছু পজিটিভ দিক আছে। যা শরীরের জন্য জরুরী, প্রমাণিত।
আমাদের শরীর অনেকটা পৃথিবীর মত। শরীরে ৮০% জলীয় পদার্থ থেকে আর ২০% থাকে সলিড পদার্থ। শরীর নানা ভাবে দূষিত হয়। বিশেষ করে খাবার অর্থাৎ সলিড পদার্থ শরীরে বেশি হয়ে গেলে নানা সমস্যা দেখ দেয়। উপোষ করে আমরা নিজেরা মাঝে মাঝে শরীরের এই অপ্রয়োজনীয় পদার্থকে শরীর থেকে বর্জন করতে পারি। ঠিক পৃথিবীকে স্বচ্ছ রাখার মত। উপোষ নিয়মিত শরীরের জন্য ঠিক নয় কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী উপোষ শরীরের জন্য লাভজনক।
উপোষ রোগপ্রতিরোধে সহায়তা করে
শরীরের রোগপ্রতিরোধের জন্য মাঝে মাঝে উপোষ করা ভালো। শরীরে অতিরিক্ত জমে যাওয়া বর্জ্য পদার্থ বের করতে উপোষ সহায়তা করে। একদিন না খেলে শরীরের অতিরিক্ত জমে যাওয়া খাবার হজম হয়ে যায় ফলে শরীর ঠিক থাকে। রোগ না হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
হজমে সহায়তা করে
হজমের সমস্যায় আমরা সবাই কমবেশি ভুগি। হজম ঠিকঠাক না হলে শরীর নানা ভাবে খারপ হতে থাকে। পেটের নানা সমস্যা দেখা দেয়। উপোষ করলে এই সমস্যা কম হয়। একদিন না খেলে শরীরের পরিপাক না হওয়া খাবার পরিপাক হয়ে যায়। ফলে শরীর স্বাভাবিক থাকে।
ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে
বৈজ্ঞানিকরা মানেন যে উপোষ করলে বা না খেয়ে থাকলে আমাদের শরীর ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক ইত্যাদি উপাদান সহজে এব্জরভ করে নেয়। ফলে শরীরের নানা হাড়ের জয়েন্ট মজবুত থাকে। শরীর ব্যাথা মুক্ত হয়ে ওঠে সহজে।
মুটিয়ে যাওয়া থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে
উপোষ করলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলতে থাকে। খাবার না খেলে শরীরে অতিরিক্ত খাবার যায় না। ফলে দেহের ভিতরে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট বা চর্বি থেকে দেহ তার প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রব্য সংগ্রহ করে নেয়। ফলে দেহের চর্বি কমতে থাকে। মুটিয়ে যাওয়া থেকে মুক্তি ঘটে।
মাথার জন্য খুবই উপকারি
উপোষ শরীরের সাথে সাথে মাথার জন্যও খুব ভালো। উপোষ করলে শরীর সুস্থ থাকে ফলে বুদ্ধি সচল থাকে। শরীর ভালো থাকা মানে টেন্সান থাকে না। ফলে কোন রকম ট্রেস থাকে না।
আয়ু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
যারা মাঝে মাঝে উপোষ করেন তারা জেনে রাখুন উপোষ করলে আয়ু বাড়ে। কেন? কারন শরীর সতেজ ও রোগ মুক্ত থাকে। ফলে ফিট থাকা যায় সব সময়। শরীর ফিট মানেই আয়ুও বাড়ে বই কমে না।
শরীরের অতিরিক্ত জল কমে যায় করে
অতিরিক্ত জল শরীর থেকে বের করতে উপোষ সহায়তা করে। শরীরে অতিরিক্ত জল থাকলে উপোষ করলে শরীর সেই অতিরিক্ত জল শুষে নেয়। ফলে শরীর থেকে সহজে জল হ্রাস পেয়ে ব্যালেন্স করে নেয়।
অন্য কয়েকটি উপকারিতা
- শরীরে হিমগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকে।
- শরীর সতেজ ও চনমনে থাকে। শরীর ফিট থাকে। কাজে এনার্জি পাওয়া যায়।
- শরীরে কিছু পজেটিভ ব্যাকটেরিয়া জন্মায় উপোষ করলে যেগুলো শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া তা মরে যায়। ফলে শরীর সুস্থ থাকে ১০০%।
- শরীরের ভারসাম্যতা বজায় থাকে।
তবে একটা কথা মনে রাখা উচিত। অতিরিক্ত উপোষ করা শরীরের জন্য ভালো না। উপোষ বৈজ্ঞানিক দিক থেকে যদি করতে চান তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে করাই বেশি ভালো শরীরের জন্য।
মন্তব্য করুন