সকাল সকাল করো যদি দাঁত ব্রাশ, তার পর খাও এক চামচ চবনপ্রাস। মজার না বেশ ছড়াটা! না না আজ ছড়া শোনাবো না। আজ বলবো চবনপ্রাসের গুনাগুণ। কেন আমরা এই চবনপ্রাস খাই? কেন চবনপ্রাস খাওয়া উচিত তা নিয়ে আজকে কথা বলবো। বাজার চলতি বহু বিজ্ঞাপন দেখা যায় এই চবনপ্রাস নিয়ে। আমাদের অনেকেই চবনপ্রাস খেয়ে থাকি। এই চবনপ্রাস যে শরীরের জন্য কতটা কার্যকরী তা জানবো।
এতদিন যারা হয়ত সর্দি থেকে বাঁচার জন্য শুধু চবনপ্রাস খেতেন,তারা বিশেষ করে যেনে নিন চবনপ্রাসের অন্যান্য উপকারিতা সম্পর্কে। দেখবেন তা জানার পর চবনপ্রাস আরও সুস্বাদু লাগছে খেতে। সম্পূর্ণ ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি চবনপ্রাস শুধু শরীরের ইমিউনিটি ক্ষমতা বাড়ায় না। পাশাপাশি আরও অন্যান্য কাজে লাগে।
চবনপ্রাসের উপকারিতা
ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে চবনপ্রাস। আমলকী, হরতকি,তুলসী ইত্যাদি বহু আয়ুর্বেদিক উপকরণ চবনপ্রাসে থাকে। নিয়ম করে রোজ সকালে চবনপ্রাস খেলে, শরীর নানা রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয় না। শরীর শক্তিশালী হয়ে ওঠে ফলে কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে বই কমে না।
চবনপ্রাস সম্পর্কে সাধারণ একটা ধারনা সকলের আছে। যে চবনপ্রাস খেলে সর্দি বা ঠাণ্ডা লাগার থেকে বাঁচা যায়। একদমই ঠিক। তবে শুধু ঠাণ্ডা লাগা নয়, আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে যাদের শরীর খারপ হয়ে থাকে, জ্বর সর্দি কাশি। তাদের জন্য চবনপ্রাসের চেয়ে ভালো ওষুধ আর কিছু হয় না। রোজ সকালে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক চামচ চবনপ্রাস খেলে শরীরের থেকে রোগ দশহাত দূরে থাকে। সর্দি কাশির যম হল চবনপ্রাস।
খাওয়া দাওয়ার অনিয়ম হয়ে থাকলে বদহজম, গ্যাস হবেই। এর থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত চবনপ্রাস খান। দেখবেন ভালো আছেন। চবনপ্রাস আমাদের পরিপাক-তন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করে তাই সহজে বদহজম হতে দেয় না শরীরে। পেটের সমস্যার থেকে বাঁচায়। হজম শক্তি বাড়ায়।
চবনপ্রাস মূলত শরীরের ইমিউনিটি অর্থাৎ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। শরীর চট করে খারপ হতে দেয় না। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক না থাকলে নানা রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে। শরীর দুর্বল হয়ে যায়। কর্ম ক্ষমতা কমে যায়। নিয়মিত চবনপ্রাস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর শরীর ভালো থাকলে মেজাজও ভালো থাকে।
বাচ্চাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই তারা সহজে নানা রোগে আক্রান্ত হয়। আবহাওয়া বদলের সাথে সাথে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভোগে অধিকাংশ সময়। ফলে বাচ্চাদের বৃদ্ধিতে সমস্যা দেখা দেয়। এর থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায় নিয়মিত চবনপ্রাস খাওয়া। তবে ৫ বছর বয়সের পর থেকে বাচ্চাদের চবনপ্রাস খাওয়ানো উচিত। এতে কোনও সাইড এফেক্ট নেই ঠিকই। তবু বাচ্চাদের বিষয়ে অতিরিক্ত সাবধানতা নেওয়া উচিত। সেই জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চবনপ্রাস বাচ্চাদের খাওয়ানো ভালো।
আমলকী, হরতকির মত উপাদানের মিশ্রণে চবনপ্রাস তৈরি হওয়ার ফলে চুলের সমস্যায় চবনপ্রাস উপকারি। চুল পরার সমস্যা থেকে বাঁচতে চবনপ্রাস দারুন কাজ দেয়। রোজ দুবেলা করে এক চামচ চবনপ্রাস খেলে চুলের সমস্যা থেকে জলদি ফলাফল পাওয়া যায়।চুলে খুস্কির সমস্যা থাকলে তা দূর হয়ে জায়।চুল মজবুত ও ঘন হয় চবনপ্রাস খেলে।
চবনপ্রাস আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু কোনও জিনিসের অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার ভালো না। শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী চবনপ্রাস খাওয়া উচিত। বয়স অনুযায়ী কতটা চবনপ্রাস খাবেন তা যেনে খাওয়াই ভালো।
Leave a Reply