পুজোর সময় চুটিয়ে যে ঠাকুর দেখেছেন, তা তো বুঝতেই পারছি। চতুর্থী টু দশমী—কেউ কেউ তো নিশ্চয়ই দশমী পেরিয়ে একাদশী, দ্বাদশীর দিনও ঠাকুর দেখেছেন। তা এই গরমে সক্কাল সক্কাল ঘুম থেকে উঠে নতুন ড্রেসে স্টাইল মেরে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়ানো—মহা ঝক্কির তো বটেই! মাথার ওপর চড়চড়ে রোদ, আগুন গরম, আপনিও ছাতা ছাড়া দিব্যি!
হাজার হোক, পুজোর কটা দিন তো আর ছাতা নিয়ে স্টাইল করা যায় না! তা ওইটুকু স্যাক্রিফাইস করতে গিয়ে আপনার ত্বকের তো একদম দফারফা হাল! পুজো শেষ। আপনার ত্বকও শেষ! রোদে ঘুরে সান ট্যানে জেরবার হয়ে, রুক্ষ শুকনো ত্বক নিয়ে এবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছেন তো ড্যামেজ কন্ট্রোল করবেন কি করে? চাপ নেই বন্ধুরা। আপনার মুশকিল আসানে হাজির আমরা। চটপট দেখে নিন টিপস।
পাতিলেবুর রস ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া লেবুতে থাকা ভিটামিন সি সানট্যান রিমুভ করার ম্যাজিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। আর মধু আপনার ত্বকের রুক্ষতা দূর করে আপনার ত্বককে আর্দ্র করে তুলতে সাহায্য করবে।
উপকরণ
পাতিলেবু ১ টা, অল্প মধু
পদ্ধতি
পাতিলেবু কেটে রস বের করে তার সাথে মধু মেশান। এরপর আপনার সারা মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন। আধ ঘণ্টা মতো রেখে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে রোজ একবার করে এটা করে যান। দেখবেন আপনার স্কিন এক্কেবারে আগের মতো হয়ে গেছে। আপনার ত্বকের মরা চামড়া দূর করতে আপনি লেবুর রসের সাথে মধু মিশিয়ে সেটা মুখে ভালো করে লাগিয়েও এক্সফোলিয়েট করতে পারেন। কারণ মধু আর চিনির মিশ্রণ প্রাকৃতিক স্ক্রাবারের কাজ করে ও ত্বকের মরা কোষ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে।
আপনার পুজোর সানট্যান কি তাড়াতাড়ি হটাতে চান? তাহলে আপনার চাই টোম্যাটো। সানট্যান দূর করার জন্য টোম্যাটো সেরা উপাদান হিসেবে কাজ করে। টোম্যাটোতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ত্বককে উজ্জ্বল করে, আর টোম্যাটো প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে। আর দইতে থাকা ল্যাক্টিক অ্যাসিড রোদে পোড়ার রুক্ষতাকে দূর করে ত্বককে নরম করে ও মরা চামড়া দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে।
উপকরণ
আধখানা টোম্যাটো খোসা ছাড়িয়ে, দই ১-২ চামচ
পদ্ধতি
মিক্সিতে টোম্যাটো ও দই ভালো করে পেস্ট করে নিন। মুখ বা হাতের যে যে জায়গায় ট্যান পড়েছে, লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন ও তারপর ধুয়ে ফেলুন। এক সপ্তাহ নিয়ম করে করার পর তফাৎ আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
আপনি কি জানেন শসা আপনার সান বার্নড ত্বকের জন্য কত ভালো বন্ধু হতে পারে? শসা কিন্তু আপনার বার্নড আর ট্যানড ত্বকের কুলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া শসা ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে ত্বককে ঠাণ্ডা ও উজ্জ্বল করে।
উপকরণ
প্রয়োজন মতো শসার পেস্ট
পদ্ধতি
শসার পেস্ট নিয়ে আপনার মুখে ও হাত-পায়ের ট্যান পড়া অংশে ভালো করে লাগান। আধ ঘণ্টা রেখে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। রোজ ঘুমোতে যাবার আগে এটা করুন, উপকার পাবেন।
সানট্যান হটানোর এই ন্যাচারাল রেমেডির কথা আপনি নিশ্চয়ই জানেন? আলুর রসের ব্লিচিং এফেক্টই কিন্তু দুঃখের দিনে আপনার ত্বকের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে।
উপকরণ
মাঝারি সাইজের ১ টা আলু, গ্রেট করা
পদ্ধতি
গ্রেট করা আলু নিয়ে সারা মুখে, হাতে যেখানে যেখানে আপনার ট্যান পড়েছে, সান বার্ন হয়ে গেছে, সেখানে সেখানে ভালো করে লাগান। তারপর ২০ মিনিট মতো রেখে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। রোজ এটা ফলো করলে দেখবেন ম্যাজিক সমাধান পেয়ে গেছেন!
কাঁচা হলুদে প্রায় ৩০০-র ওপর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। আপনার ত্বকের সানট্যানকে যদি জলদি টাটা বলতে চান তো মুখে হলুদ মাখুন। হলুদ শুধু আপনার ত্বককে উজ্জ্বলই করবে না, আপনার রোদে ঘুরে ময়লা বসে আপনার ত্বকে যদি ব্রণ হয়, তাহলেও হলুদ আপনার মুশকিল আসান করবে নিমেষে। তাছাড়া বেসন তো ত্বককে উজ্জ্বল করেই।
উপকরণ
কাঁচা হলুদবাটা ২ চামচ, বেসন ১ চামচ, দুধ ২ চামচ
পদ্ধতি
কাঁচা হলুদবাটা, দুধ ও বেসন দিয়ে একটা ফেসপ্যাক মতো বানান। এরপর ওটা মুখে ভালো করে মেখে আধ ঘণ্টা রেখে হালকা গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। পুজোর পরে অন্তত একমাস তো এটা ট্রাই করেই দেখুন। ফল না পেলে আমাদের বলবেন।
পাকা পেঁপেতে প্যাপেইন নামক উৎসেচক থাকে যা ত্বককে উজ্জ্বল করে, ও মরা চামড়া সরিয়ে ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে এক্সফোলিয়েট করে। আর মধু তো আপনার রোদে পোড়া রুক্ষ শুকনো ত্বককে তার আগের স্বাভাবিক আর্দ্র, চকচকে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
উপকরণ
৪-৫ টুকরো পাকা পেঁপে, মধু ২ চামচ।
পদ্ধতি
পাকা পেঁপে আর মধু নিয়ে একসাথে ম্যাশ করুন ও তারপর ওই মিশ্রণটি ভালো করে মুখে ও আপনার শরীরের অন্যান্য ট্যান পড়া অংশে লাগিয়ে আধ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক উজ্জ্বলও হয়েছে, আর আগের মতো মসৃণও হয়েছে!
তাহলে আর দেরী কীসের বন্ধুরা? পুজো শেষ। এবার শুরু করে দিন ট্যান হটাও অভিযান। দেখবেন সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আপনি আবার আপনার পুরনো ঝক্কাস পার্টি লুকে ফিরে গেছেন! আপনার স্কিনও তার পুরনো গ্লো ফিরে পেয়েছে!
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…