কথায় আছে পেটে খেলে পিঠে সয়! কিন্তু আমরা পেটের চর্বি কমাতে এত ব্যস্ত থাকি যে পিঠের মেদের কথা বেমালুম ভুলে যাই। পিঠের মেদ যেমন আপনার গ্ল্যামারকে নষ্ট করে তেমনি সুন্দর আউটফিটে আপনার দুর্দান্ত লুককে করে তোলে বেমানান।
অনেকে এই মেদকে মাফিন টপ, লাভ হ্যান্ডেল ইত্যাদি পোশাকি নামে ডেকে থাকেন। কিন্তু এর ফলে আপনার বন্ধ্যাত্ব, পিসিওএস ও ডায়াবেটিস এর মত রোগ হতে পারে।
কি কি কারণে জমাট বাঁধে পিঠের মেদ?
কার্ডিও এক্সসারসাইজ এর অভাব, একটানা এক জায়গায় বসে কাজ করার অভ্যাস।
সোডিয়াম বা সুগার জাতীয় খাবার এর অধিক পরিমাণে গ্রহণ।
আকারের থেকে ছোট জামাকাপড় পরলে তা পিঠে লাম্প ফ্যাট তৈরিতে সাহায্য করে।
জেনেটিক্স, ওভারওয়েট, উচ্চতা এবং আপনার দৈনিক কার্যকারিতা ইত্যাদি পিঠের ফ্লাকচুয়েটিং ফ্যাট এর কারণ।
পিঠের মেদ কমানোর উপায়গুলি:
কষ্ট না করলে কি আর কেষ্ট মেলে? তাই এই মেদ কমাতে একটু কষ্ট আপনাদেরকে করতেই হবে। তবে নিয়ম মেনে যদি একমাস এগুলো করেন তাহলে সহজেই পছন্দের পোশাকে আবার ধরা দিতে পারবেন নায়িকার মত।
ফলো করুন সুষম ডায়েট:
পিঠের মেদ কমাতে হার্ড ডায়েট ফলো না করলেও একটা মডারেট ডায়েট ফলো করতে পারেন। কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটের মাত্রাকে নির্দিষ্ট করে উচ্চ ফাইবারযুক্ত ও কম সোডিয়াম ইনটেক এর খাবার তালিকা বেছে নিন।
খাদ্যতালিকায় এর জন্য রাখতে পারেন:
অ্যাভোক্যাডো
হার্ড বয়েলড ডিম
শাকসবজি
ব্রাউন রাইস, বার্লি
মাশরুম ও টফু
সামুদ্রিক মাছ –টুনা, স্যামন
চিকেন ব্রেস্ট
এছাড়াও নানান দানাশস্য জাতীয় খাদ্য ও ফলের উপর নির্ভর করুন যেটা আপনার মিনারেল ও ভিটামিন এর চাহিদাকে পূরণ করবে।
লাইফস্টাইলে আনুন পরিবর্তন:
ওজন ঝরাতে কার্যকরী উপাদান হলো জীবনযাত্রায় পরিবর্তন। তাই পিঠের মেদ কমানোর জন্যও ফলো করুন একই ফর্মুলা:
বেশি করে হাঁটার অভ্যাস করুন। সে সন্তানকে স্কুলে ড্রপ করা হোক কি কাছের কফিশপ, ড্রাইভ না করে পা চালান ও অতিরিক্ত ক্যালরিকে বলুন বাইবাই।
ধূমপান এর অভ্যাস থাকলে সেটা থেকে বিরত থাকুন। এরজন্য নিজের ফিজিসিয়ান এর সাথে অবশ্যই কনসাল্ট করে নিন।
কোথাও বসার সময় শিরদাঁড়া ও পশ্চার মেন্টেন করুন। এতে করে আপনার মাসল থাকবে টানটান।
নিজের ইনসুলিন লেভেল নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ইনসুলিন এর আধিক্য শরীরে ফ্যাট জমাতে সাহায্য করে।
জাঙ্কফুড পিজা, বার্গার, ফ্রাইস ইত্যাদির সাথে নানা প্রক্রিয়াকরণ জাত খাদ্য ও ফ্রোজেন ফুড বর্জন করুন। এতে থাকা মাত্রাতিরিক্ত সুগার ও প্রিজারভেটিভ আপনার শরীরে নিয়ে আসবে হাজারো ঝঞ্জাট।
রোয়িং এক্সসারসাইজ:
আপনার ল্যাটিসিমাজ ভোরসি মাসলের খেয়াল রাখবে এই এই ব্যায়াম। এখানে আপনাকে বোট রোয়িং এর মুভমেন্ট নকল করে ব্যায়াম করতে হবে।
বেঞ্চ বা টুলের ওপর এক পা-এ ভর দিয়ে একটি হাত রাখুন সাপোর্ট এর জন্যে।
এরপর ডান হাতের কনুই ভাঁজ করে বারবেল তুলুন যাতে করে কাঁধ ও পিঠে চাপ পড়ে।
এইভাবে দশ থেকে বারো বার করে হাত বদল করে অল্টার করুন। পিঠের মাংসপেশির টোনিং এর জন্য এই ব্যায়ামটি অনবদ্য।
পেট ও বুক মাটিতে রেখে হাত ও পা স্ট্রেচ করে একটু একটু করে ওপরের দিকে তুলুন।
ন্যূনতম ছয় ইঞ্চি তুলতে হবে। এইভাবে ১০বার মতো করতে হবে।
তারপর ধীরে ধীরে হাত ও পা নামিয়ে আনুন ও রেস্ট নিয়ে রিপিট করুন।
ল্যাটেরাল রেইজ ব্যায়াম:
মেটাবলিজম হাই করতে এবং মাংসপেশি টাইট করতে এই ব্যায়াম এর উপযোগিতা অনেক।
দুইহাতে ডাম্বেল নিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে দাঁড়ান এবং শ্বাস নিয়ে হাত দুটোকে শরীরের দুপাশে নিয়ে আসুন
এরপর হাত দুটোকে যতটা সম্ভব সাইডওয়েজ ওপরে তোলার চেষ্টা করুন।
দুটো হাতের প্যারালাল গ্যাপ মেন্টেন করুন ও কাঁধে খুব বেশি চাপ না দিয়ে কনুই ধীর ধীরে ভাঁজ করুন।
এইভাবে বেশ কয়েকবার করে হাত পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন।
এগুলো ছাড়াও ফিটনেস বল এর ওপর ভর দিয়ে পায়ের গ্লুট মাসল স্ট্রেচ করা, জ্যাকনাইফ এক্সারসাইজ এবং স্পিডব্যাগ এর মতো ব্যায়াম এর দ্বারা এয়ার ফিস্ট পানচিং করেও নিজের পিঠের মেদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
View Comments
Darun lagche tips gulo peye