আদা একপ্রকার উদ্ভিদ মূল। যে মূল মানুষের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। মশলা জাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। আদা ভেষজ ঔষধ। মুখের রুচি বাড়াতে,বদহজম দূর করতে আদা শুকিয়ে চিবিয়ে খাওয়া হয়ে থাকে। সর্দি, কাশি, আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপায় আদা চিবিয়ে বা রস করে খাওয়া খুবই উপকারি। আদা পানীয় তৈরীতে, আচার, ঔষধ ও সুগণ্ধি তৈরীতে ও খাদ্য শিল্পে ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য অর্থকরী ফসলের চেয়ে আদা চাষ করা লাভজনক।
আদা শ্রেণীবিহীন উদ্ভিদ। পাহাড়ের ধাপে সাধারণত আদা চাষ হয়। আদা বীজ রোপণের প্রায় ৭-৮ মাস পর ফসল ফলে। এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মে মাস পর্যন্ত আদা রোপণ করা হয়। সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে আদা উত্তোলন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও পার্বত্য জেলাগুলোতে ব্যাপকভাবে আদা চাষ হয়। আদায় যে সমস্ত উপাদান সমূহ থাকে তা হল আমিষ ২·৩%, শ্বেতসার ১২·৩% , আঁশ ২·৪% , খনিজ পদার্থ, ১·২% জল ৮০·৮%।
আদা ভারতীয় খাদ্যের ভাণ্ডারে অন্যতম উপকরণ। প্রায় সব রান্নাতে আদা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মূলত আমিষ রান্নার জন্য আদার ব্যবহার সব চেয়ে বেশি হয়। তাছাড়া আদা দিয়ে চা বানানো হয়। চায়ে আদা দিলে চা সুগন্ধময় হয় সাথে সাথে সুস্বাদু হয়ে থাকে।
ঠাণ্ডা কাশির সমস্যা দূর করতে এই আদা চা ব্যবহার হয়। আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ঠাণ্ডা দূর করার একটি কার্যকরী উপাদান। আদা চা শ্বাসনালীতে জমে থাকা কফ দূর করতে সহায়তা করে। কাশির সমস্যার সমাধান করে সহজে। নিয়মিত আদা চা খেলে কিছুদিনের মধ্যেই কাশির সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়।
আদা চা তৈরি করতে লাগে আদা ও জল। ইচ্ছে হলে লেবুর রস দেওয়া যায়। প্রথমে একটি পাত্রে পরিমাণ মত জল ফোটাতে হবে। জল ফুটে উঠলে এতে ২ চা চামচ আদা গুঁড়ো কিংবা ১ চা চামচ আদা কুচি দিতে হবে। ১০ মিনিট রেখে নামিয়ে ফেলতে হবে। কাপে ঢেলে লেবুর রস দিয়ে গরম গরম আদা চা পান করুন। কাশির সমস্যা সহজেই দূর হবে।
আমরা সাধারণত আদা কুচি বা আদা বাটা খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করে থাকি। আদা খাবারে স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের দেহের সুস্থতার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এছাড়াও কাঁচা আদা খাওয়ার রয়েছে দারুণ সব উপকারিতা।
খেতে একেবারেই ইচ্ছে না হলে বা খাবার দেখে অসুস্থ বোধ করলে খাওয়ার আগে ১ চা চামচ টাটকা আদা কুচি খেয়ে নিন। মুখের রুচি ফিরে আসবে। খাবার ইচ্ছে বাড়বে। প্রতিদিন মাত্র ১ ইঞ্চি পরিমানের আদা কুচি খেলে সাইনাসের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা হয়।
আদার তেল হাতে পায়ের জয়েন্টে ব্যথা হলে তা দূর করে। খানিকটা অলিভ অয়েলে আদা ছেঁচে নিয়ে ফুটিয়ে নিন। ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে এই তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন হাতে পায়ের জয়েন্টে বা ব্যথায়। আদার অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান দূর করে দেবে ব্যথা।
হজমে সমস্যার কারণে পেতে ব্যথা হলে আদা কুচি খেয়ে নিন। আদা পেতে গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে বেশ কার্যকরী।তাছাড়া খাবারের পুষ্টি দেহে সঠিকভাবে শোষণ করার ক্ষমতা বাড়ায় আদা। তাই প্রতিদিন খুব সামান্য পরিমাণে হলেও আদা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। বমি বমি ভাব হলে বা মাথা ঘুরলে একটুখানি আদা স্লাইস করে কেটে লবণ দিয়ে চিবিয়ে খেলে বমি ভাব একেবারেই কেটে যায়। শরীর সুস্থ্য বোধ করে।
বুকে সর্দি কফ জমে যায় ঠাণ্ডা লাগলে। ফলে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। আদা এই সমস্যা সহজে দূর করে। ২ কাপ জলে আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে জল গরম হলে তখন তা ছেঁকে নামিয়ে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে বেশ আরাম পাওয়া যায়। সর্দি কফের সমস্যা না যাওয়া পর্যন্ত এটি খেলে ভালো।
ত্বকে আজকাল কম বয়সেই বলিরেখা, বয়সের ছাপ পরে যায়। প্রতিদিন সামান্য আদা কাচা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে এই সমস্যা জলদি দূর হয়। আদার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিএইজিং উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের টক্সিন দূর করে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা দেখা যায় না।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…