ঘরে শুয়ে আছেন, হঠাৎ শুরু হল পেটে ব্যথা। আপনি বুঝতেও পারলেন না কী করে এটা হল। এই তো কিছু ক্ষণ আগে পর্যন্ত বেশ ভালোই ছিলেন। কিন্তু এখন হচ্ছে পেটে অসহ্য ব্যাথা। আপনার মনে হতে লাগলো এটা নিশ্চয়ই গ্যাসট্রিকের থেকে হচ্ছে। আবার মনে হল, না, সম্ভবত আমাশা হয়েছে। ব্যথাটা কখনও হচ্ছে পেটের মাঝখানে, কখনও হচ্ছে তলপেটে নাভির কাছে। কখনও চিনচিন করে, কখনও খুব ব্যথা।
এই সময়ে এবার আপনি কী করবেন! আপনি তো বুঝতে পারছেন না কেন হচ্ছে এই ব্যথা, তাই কী ভাবে কমাবেন সেটাও বুঝে উঠতে পারছেন না। তাই দাশবাসের পক্ষ থেকে আজ এসেছি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশদে কিছু জানাতে।
সমাধান তখনই করতে পারবেন যখন সমস্যাটা ঠিক কোথায় সেটা ভালো করে বুঝতে পারবেন। এক এক কারণে ব্যথা এক এক জায়গায় হয়। তাই সবার আগে জানা দরকার কী কী ক্ষেত্রের আমরা সম্মুখীন হই পেট ব্যথার ক্ষেত্রে।
পেপটিক আলসার বা গ্যাসট্রিকের সমস্যায় পেট ব্যথা হয়। সে ক্ষেত্রে এই ব্যথা পেটের উপরে মাঝখান দিয়ে শুরু হয়। পেটে কখনও চিনচিনে, কখনও জ্বালাপোড়ার মতো ব্যথা হয়। এর সঙ্গেই থাকে টক ঢেঁকুর, বমি ভাব। অনেক সময়ে খুব ঘাম হতে পারে।
অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহের জন্য ব্যথা হলে তা হবে পেটের উপরে খানিক বাঁ দিক ঘেঁষে। এই ব্যথা খুবই তীব্র হয় আর পিছন দিকেও অনুভূত হতে পারে। এর সঙ্গে বমি ভাবও থাকতে পারে।
যদি আপনার কিডনিতে পাথর হয় বা কোনও সংক্রমণ হয়ে থাকে তাহলেও পেটে ব্যথা হয়। সে ক্ষেত্রে ব্যথা হয় যে কিডনিতে ব্যথা হয়েছে সেই কিডনির দিকের পেটের উপরের অংশে আর পিছন দিকে। ব্যথাটা ক্রমেই নামে তলপেটের দিকে। এই ব্যথা খুবই তীব্র হয় আর মাঝে মাঝে ব্যথা ছাড়ে, আবার শুরু হয়। তার সঙ্গে বমি ভাব আর জ্বর আসতে পারে।
পেটে খুব ব্যথা করে যদি অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়ে থাকে তাহলে। এ ক্ষেত্রে নাভির মাঝখান থেকে ব্যথা তলপেটের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে আপনি যদি হাত দিয়ে টেপেন তাহলে তীব্র চিনচিনে ব্যথা অনুভব করবেন।
পিত্তথলিতে পাথর থাকলে বা প্রদাহ হলে পেটে ব্যথা শুরু হয়। এই ব্যথা পেটের ডান দিকে আর পিছন দিকে ছড়ায়। এর সঙ্গে প্রচণ্ড বমি ভাব হতে পারে। পেটে চিনচিন করে ব্যথা, সঙ্গে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, জণ্ডিস আর খাবারে অরুচি হল এই ক্ষেত্রে প্রধান উপসর্গ।
১. মেয়েদের ক্ষেত্রে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের নানা সমস্যা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রেও কিন্তু খুবই পেটে ব্যথা করে। তখন তলপেটের ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হতে পারে। সঙ্গে আসতে পারে হালকা জ্বর।
২. যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে তাহলে তো পেট ব্যথার সম্ভাবনা খুবই বেশি। এ ক্ষেতে গোটা পেট জুড়েই ব্যথা আর পেট অনেক ক্ষণ ভার ভার মনে হয়। কিছু করেই শান্তি মেলে না।
৩. যদি কোনও ভাবে ফুড পয়জনিং, বা বদহজম হয়, তার থেকেও পেট ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। আর সাধারণ আমাশয় হলে তো তলপেটে নাভির কাছে তীব্র চিনচিনে ব্যথার কথা আমরা সবাই জানি।
৪. আপনার যদি অন্ত্রে ক্যানসার হয় তাহলেও কিন্তু খুবই পেটে ব্যথা হবে। এর সঙ্গে ওজন হ্রাস, রক্তশূন্যতা, দুর্বলতা তো থাকেই। আপনি খুব ঘেমে যেতে পারেন।
উপরে এতোগুলো কারণ বলা হল পেটে ব্যথার। পড়ে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে পেটের ব্যথাকে একদমই ছোট করে দেখা ঠিক নয়। আসলে পেটের ব্যথা একটা বড় কোনও সমস্যার উপসর্গও অনেক ক্ষেত্রে হতে পারে। তাই একে অবহেলা করবেন না।
সমস্যা তো এতো বললাম। তাহলে এবার সমাধান বলাও কর্তব্য। দেখুন যদি আপনি বোঝেন যে আপনার ব্যথাটি গ্যাসের ব্যথা তাহলে কিন্তু আপনি গ্যাসের ওষুধ খেতে পারেন।
আপনার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে গ্যাসের ব্যথা কমানোর ওষুধ এনে রাখতে পারেন। সেটি খেয়ে নিন খুব ব্যথা হলে।
এ ছাড়া কোনও ভালো সিরাপ খেতে পারেন। এগুলো করলে গ্যাসট্রিকের ব্যথা খানিক কমতে পারে।
আর যদি আমাশয়ের থেকে ব্যথা হয় সে ক্ষেত্রেও আপনি ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। আর সঙ্গে অল্প অল্প করে নুন-চিনির জল খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কোনও ভালো সিরাপ খান। ইসবগুল নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য আর হবে না খুব একটা। তাই পেট ব্যথাও আর হবে না।
এগুলো তো গেল সাধারণ পরামর্শ। কিন্তু গ্যাসট্রিক বা আমাশয় ছাড়া উপরে অন্য যে সমস্যার থেকে পেটে ব্যথা হয় বলা হয়েছে তা কিন্তু সহজে কোনও ওষুধ খেয়ে নিলে কমার মতো রোগ নয়।
তার জন্য ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে ওষুধ খান। আর নিয়মিত চিকিৎসার মধ্যে থাকা খুব দরকার। যদি পেট ব্যথার সঙ্গে বমি, জ্বর আসে তাহলে তা চিন্তার। না হলে সাধারণ চিকিৎসাই যথেষ্ট। তবে তাও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই।
তবে পেটে ব্যথা হলে উপশমের জন্য খানিক গরম জল খেতে পারেন। হট ব্যাগ গরম করে পেটের উপর দিয়ে রাখতে পারেন। এতেও খানিক উপকার হয়।
পেটের ব্যথা বা যে কোনও এই ধরণের সমস্যা কমাতে গেলে সবার আগে ঝাল, মসলাদার খাবার খাওয়া কমান। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন আর ওজন ঠিক রাখুন। ব্যথা এমনিতেই অনেক কম হবে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…
View Comments
দুই দিন ধরে পেট কামড়াছে খুব বেশি।ব্যাথা ও আছে।শ্বাস নিলে ও পেট কামড়ারছে।কোনো কিছু খায়তে ইচ্ছে করতেছে না।ঘুম ও হচ্ছে না।
প্রতিরোধ এর উপায় কি?
ডাক্তার দেখিয়ে নিন জলদি। ঘরোয়া প্রতিকার করার আগে কি হয়েছে তা ডাক্তারের থেকে জেনে নেওয়া ভালো। বেশি কিছু হলে উনি ট্রিটমেন্ট করবেন।
আমার নাম ওমর ফারুক। আমার বয়স বর্তমানে ২১। এই ২ দিন হলো পেটের ডানপাশে কোমর বরাবর ব্যথা অনুভুত হচ্ছে। আমার কোষ্ঠকাঠিন্য আছে এবং আমার মলের সাথে প্রচুর রক্ত ও যায়। আগে রক্ত কম যেতো।ইদানিং একটু বেড়েছে। আমি মসলাদার খাবার প্রচুর পরিমাণে খায় এবং রাস্তার ফাস্টফুড ও খাওয়া হয়। এবং আমার ওজন ও কম না।আমার বেশিরভাগ দিনই বাসায় মাছ মাংস খাওয়া হয়।আমি সেরকম একটা শরীরচর্চা ও করি না। অন্য সব যে লক্ষঙুলো আপনি বললেন ওগুলো ও নেই .........আর অ্যাপেন্ডিসাইটিসের যে লক্ষণ গুলো দিলেন ওগুলোর মধ্যে শুধু পেটের ডানপাশে ব্যথা টাই হচ্ছে। আর কোনো উপসর্গ নেই। যেমন বমি জ্বর এগুলো কিছুই নেই। আমার মনেহচ্ছে আমি পুরোপুরি সুস্থ আছি শুধুমাত্র পেটের ডানপাশে ব্যথা হচ্ছে সেটাই আমাকে চিন্তিত করছে।আর আমি কোনো কারণ ও খুঁজে পাচ্ছি না কেনো হঠাত এসব শুরু হলো আমার সাথে।
ডাক্তার দেখান। এরম ভাবে কষ্ট পাবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট করতে বলবো। ঘরোয়া উপায় আগেই ব্যবহার করবেন না। যেহেতু আপনি এত কষ্ট পাচ্ছেন।
তলপেটে ও প্রসরাবের রাস্তা বেথা করে এখন কি করনিও