কলকাতা -এই কথাটা শুনলেই আমাদের মনে পড়ে যায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল,হাওড়া ব্রিজ,সেন্ট পল ক্যাথেড্রাল,বিদ্যাসাগর সেতু,জাদুঘর,ইডেন গার্ডেন,ইত্যাদি,এছাড়া আরো অনেক কিছুই এবং অবশ্যই কলকাতার ট্রাম।আজ আমি লিখতে চলেছি কলকাতা শহরের ট্রাম নিয়ে।
কলকাতার ট্রামের ইতিহাস নিয়ে এইবার একটু আলোকপাত করা যাক।২৪শে ফেব্রুয়ারি ,১৮৭৩ সালে প্রথম ঘোড়া চালিত ট্রাম চালু হয়।কিন্তু ওই সালেই ২০শে নভেম্বর আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সময়ের ভাইসরয় লর্ড কার্জন এর মস্তিষ্কপ্রসুত হল কলকাতার ট্রাম।লর্ড কার্জন এইটি চালু করতে চেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে যাতে মানুষজন খুবই স্বল্প ব্যয়ে যাতায়াত করতে পারেন।১লা নভেম্বর,১৮৮০ সালে কলকাতা ট্রামের যাত্রাপথ উদ্বোধন করেন লর্ড রিপন, যিনি কিনা সেই সময়কার ভাইসরয় ছিলেন।
একদম শুরুতে ঘোড়া চালিত ট্রাম চালু করা হয় তারপর বহু উন্নতি হয় ট্রামের।১৯০২ সালে বিদ্যুৎ চালিত ট্রাম চালু করা হয়।বর্তমানে মোটামুটি ২৫টি ট্রাম লাইন আছে।ট্রাম বর্তমানে ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানির অধীনে।ক্যালকাটা ট্রামওয়েস বা সি.টি.সি র কাছে ২৫৭ টি ট্রাম আছে যার মধ্যে ১২৫ টি ট্রাম রাস্তাতে চালু।
ট্রাম ছাড়া কলকাতাকে ঠিক কলকাতা হিসেবে ভাবা যায়না।এ কথা অনুস্বীকার্য যে কলকাতার ঐতিহ্যের সাথে পরতে পরতে অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জড়িয়ে আছে কলকাতার ট্রাম।
ট্রামের দুটো শ্রেণী-প্রথম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় শ্রেণী।বড়দের কাছে শুনেছি আগে ট্রামের প্রতি কামড়াতে ২ টি দরজা ছিল।এখনকার ট্রামের একটি দরজাই প্রতিটি কামড়ার মাঝখানে।প্রথম শ্রেণীর কামড়াতে মাথার উপরে বিশাল দুটি ফ্যান ঘোরে।যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য সেইটি জাল দিয়ে ঘেরা।এই ধরণের ফ্যান আজকাল আর দেখা যায়না।এক সময় ট্রাম কলকাতার পরিবহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল কিন্তু আজকাল অনেকরকমের যান বাহন আসাতে হয়তো ট্রামের গুরুত্ব কমে গেছে।ঐতিহ্যের দিক দিয়ে ট্রাম আজও স্বমহিমায় বিরাজ করছে এবং আশাকরি ভবিষ্যতেও করবে।
বর্তমান কর্ম ব্যস্ততার যুগে ,যানবাহনের ভিড়ে অনেকে ট্রাম উঠিয়ে দেওয়ার জন্য সওয়াল করেন কিন্তু তারা একবার ভেবে দেখেছেন কি ট্রাম উঠে গেলে কলকাতার কৌলিন্য হারিয়ে যাবে! ঢং ঢং শব্দ করে ময়দানের বুক চিরে ফোর্ট উইলিয়ামকে সাক্ষী রেখে অসংখ্য খেলার মাঠ এবং রেস কোর্সের পাস দিয়ে যখন ট্রাম যায় তখন ট্রামের জন্য কলকতাবাসীরা গর্বিত হয়।দূষণমুক্ত যান হিসাবে ট্রামের কোনো জুড়ি নেই।
ভারতে একমাত্র কলকাতা শহরে ট্রাম চলে। আর কলকাতার ট্রাম ভারত কেন এশিয়াতে প্রথম।কলকাতার ট্রাম তাই কলকাতা তথা ভারতবাসীর গর্ব।প্রত্যেক দিন বিরাট সংখ্যক মানুষ ট্রাম দিয়ে যাতায়াত করেন।মোটামুটি ৫৭ কি.মি. জুড়ে কলকাতার রাস্তা দিয়ে ট্রাম চলে।একটি ট্রামে ২০০ এর মতন যাত্রী যেতে পারেন যদিও ৬০ জন যাত্রীর বসার স্থান আছে।৩০এ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে একটি ট্রামের ভিতর জাদুঘর চালু করা হয়েছে যা কলকাতার ট্রামের ইতিহাস প্রদর্শন করে।
যাত্রীবাহক ট্রাম বাদে সি.টি.সির কাছে টাওয়ার কার,রেল স্ক্রাবার কার,ফ্লাট কার ও আছে।টাওয়ার কার ট্রাম লাইনের পর্যনাবেক্ষনের কাজে লাগে।আবার রেল স্ক্রাবার কার বাকি ট্রামগুলি পরিস্কার করতে কাজে লাগে।ফ্লাট কার সামগ্রী আদান প্রদানে সাহায্য করে।
পরিশেষে বলা যায় দূষণমুক্ত যান হিসেবে,ঐতিহ্যের নিরিখে,কলকাতার গর্ব ট্রামকে কে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সকলের অতি অবশ্যই কর্তব্য।ট্রামকে উঠিয়ে না দিয়ে বরং এটির আধুনিকিকরণ করে ট্রামকে তার স্বভূমিকায় বাঁচিয়ে রাখাটাই আমাদের নাগরিক হিসেবে কর্তব্য।ট্রাম ছিল,ট্রাম আছে,ট্রাম থাকবে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…