Health

হাঁপানি রোগের ঘরোয়া উপসম

এখন অতিরিক্ত পরিবেশ দূষণের ফলে হাঁপানির মত রোগের সমস্যা বেড়েই চলেছে। এখন অল্প বয়সীদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা যায়। হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে শ্বাসনালী অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়। তার ফলে একটু ধুলো, ধোয়া বা পশুপাখির কাছে এলে বা ঠাণ্ডা লাগলেও, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। রোগীর শ্বাসনালী সংকুচিত হয়ে আসে। তার ফলে ফুসফুসে বাতাস প্রবেশে বাঁধার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নেওয়া যায় না।

খুব কষ্ট হয়। কিন্তু যদি হাতের কাছে ওষুধ না থাকে তাহলে কি করবেন? তাই আজ শেয়ার করব এমন কিছু ঘরোয়া টিপস, যার দ্বারা আপনি বাড়িতে সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

হাঁপানির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য কিছু ঘরোয়া উপকরন ব্যবহার করা যেতে পারে।

আদা 

দেখা গেছে হাঁপানির সমস্যায় যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, সেগুলি শ্বাসনালীকে শিথিল করে কষ্ট কমিয়ে দেয়। আদাতেও রয়েছে সেই গুণ। আদা শ্বাসনালীর সংকোচনের সমস্যাকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে। এবং শ্বাসনালীর প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। এক্ষেত্রে রোজ একটু করে আদা নুন মিশিয়ে খেতে পারেন। বা আদার গুড়ো জলে মিশিয়ে সেই জল রাতে শুতে যাবার আগে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আদার টুকরো গরম জলে ভালো করে ফুটিয়ে সেই জল ঠাণ্ডা করেও খেতে পারেন।

রসুন  

আদার মত রসুনও হাঁপানির সমস্যায় সাহায্য করে। অনেক সময় বুকে কফ জমে থাকার ফলেও শ্বাসকষ্ট হয়। রসুন সেটি থেকে মুক্তি দেয়। এর জন্য একটি জায়গায় জল ভালো করে ফোটান। সেই ফোটানো জলে ২ থেকে ৩টি রসুনের কোয়া ফেলে দিন। তারপর সেটি পান করুন।

কফি 

কফি হাঁপানির সমস্যায় বেশ সাহায্য করে। কফিতে থাকা ক্যাফেইন ওষুধের মত কাজ করে। এক কাপ গরম কফি শ্বাসনালীকে পরিষ্কার রাখে এবং হাঁপানির সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। তাই হাঁপানির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এক কাপ গরম কফি খেতে পারেন। উপকার পাবেন। তবে খুব বেশি কফি রোজ না খাওয়াই ভালো। দিনে দুকাপ কফি যথেষ্ট।

মধু  

 

মধু হচ্ছে হাঁপানির সবথেকে প্রাচীন ওষুধ। মধু এতই ভালো কাজ দেয় যে, অনেক সময় মধুর গন্ধ নিয়েই উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও গরম জলে মধু মিশিয়ে সেটি দিনে দুবার খেতে পারেন। উপকার পাবেন।

পেঁয়াজ 

পেয়াজের আছে প্রদাহ বিরোধী গুণ। এতে আছে সালফার যা ফুসফুসের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। ভালো ভাবে শ্বাস নেবার জন্য শুধু কাঁচা পেঁয়াজই দারুন কাজ দেয়। বেশি করে কাঁচা পেঁয়াজ খান। যদি কাঁচা খেতে সমস্যা হয় তাহলে রান্নায় বেশি করে কাঁচা পেঁয়াজ দিয়ে খেতে পারেন।

লেবু  

অনেক সময় দেখা যায় অ্যাজমা রোগীদের ক্ষেত্রে দেহে ভিটামিন সি যথেষ্ট কম। লেবুতে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। হাঁপানির সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এর জন্য এক গ্লাস জলে অনেকটা লেবুর রস মিশিয়ে চাইলে অল্প একটু চিনি দিয়ে খেতে পারেন।

হলুদ 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে গুড়ো হলুদ হাঁপানির সমস্যায় যথেষ্ট ভালো ফল দেয়। তাই এক গ্লাস দুধে একটু হলুদ গুড়ো মিশিয়ে খেলে উপকার হবে।

ডুমুর 

শুকনো ডুমুর শ্বাসকষ্ট রোধে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। এর জন্য দু থেকে তিনটি ডুমুর জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে সেই জল ও ডুমুর খান। এটি দু থেকে তিন মাস করতে পারলে হাঁপানির প্রকোপ কমবে।

এছাড়াও যখন এই কষ্ট হবে তখন পিঠে ও বুকে সরষের তেল মালিশ করুন। নিজের ঘর ও বিছানা ধুলো মুক্ত রাখুন। বেশি করে ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার যেমন কালো জাম খান। এছাড়াও খাবারে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রাখুন। খুব গন্ধ যুক্ত জিনিস যেমন পারফিউম, ধূপ ব্যবহার বন্ধ করুন। আর প্রচুর শাকসব্জি খান।

সুস্মিতা দাস ঘোষ

Recent Posts

মুখের রোমকূপ বা পোরস ঢাকার মেকাপ টিপস

আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…

2 বছর ago

থুঁতনির জেদি ব্ল্যাকহেডস তোলার ৬টি উপায়

পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…

2 বছর ago

মেয়েরা বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় যে ১০টি জিনিস অজান্তেই করে

আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…

2 বছর ago

ঘরের দেওয়ালে নোনা ধরছে? দূর করুন ঘরোয়া কৌশলে

বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…

2 বছর ago

ময়েশ্চারাইজার কেন এত উপকারি ত্বকের যত্ন নিতে? ব্যবহারের সঠিক নিয়ম।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…

2 বছর ago

নারকেল তেল দিয়ে ত্বকের যত্ন! উজ্জ্বল, চকচকে ত্বকের গোপন রহস্য!

প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…

2 বছর ago