এইচ.এস পাস আবেদনকারীদের জন্য রেলে সুযোগ আর প্রস্তুতির হাল-হকিকত

প্রত্যেকেই জীবনে একটা সরকারী চাকরী চায়।আর তা যদি হয় রেলে,তাহলে তো কথাই নেই।একদম সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারী চাকরী।এবার দেখুন রেলে তো অনেক পদ রয়েছে।খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর সম্মানজনক পদ রয়েছে।সেই পদের জন্য অনেক শিক্ষিত মানুষ দরকার হয়।কিন্তু অনেকেই তো আছেন যারা অনেক পড়াশোনা করতে পারেন না তাদের নানা অসুবিধার জন্য।তাদের চাকরীর সন্ধান করতেই হয়।যারা উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পরেই ভাবছেন চাকরী করবেন,কিন্তু মন চাইছে সরকারী চাকরী,তাদের জন্যও রেলে চাকরী আছে।শুধু পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতি নিতে হবে।ব্যাস,তাহলেই দুঃখের দিন শেষ।

কি ধরণের পদের জন্য আবেদন করা যায়

দেখুন উচ্চমাধ্যমিক পাস মানে খুব যে আপনি উঁচু পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন তা নয় জানেনই।কিন্তু রেল একটা অনেক বড় প্রতিষ্ঠান।এখানে নানারকম কাজ আছে।তাই আগে দেখে নিন আপনারা কোন কোন পদের জন্য আবেদন করতে পারেন।

আপনারা আবেদন করতে পারেন নার্স,ক্লার্ক,স্টেনোগ্রাফার,অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট,টিকিট পরীক্ষক,গার্ড,জুনিয়ার ক্লার্ক কাম টাইপিস্ট এইসব পদের জন্য।বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ১৮ বছর আর সর্বোচ্চ ৪২ বছর।আর বেতন এখানে ৩৬,০০০ পর্যন্ত আপনি পেতে পারেন।স্পোর্টস কোটা থাকলে তো আবেদন করতেই পারেন।

কিভাবে প্রস্তুতি নেবেন

দেখুন,এতো পদের জন্য অনেকেই আবেদন করবেন।তাই আপনাকে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে।তাই প্রস্তুতিও সেইভাবেই নিতে হবে।আমরা আপনাকে বলে দেব কিভাবে নিজেকে তৈরি করবেন রেলের পরীক্ষার জন্য

১. আগে সম্পূর্ণ সিলেবাস জানুন

যে কোনো সরকারী চাকরী দেওয়ার আগেই আপনাকে জানতে হবে ঠিক কি সিলেবাসে আছে মানে কিসের কিসের ওপর পরীক্ষা হয়।তা নাহলে পরীক্ষার প্রস্তুতি ঠিক ভাবে নেওয়া যায় না।মূলত ইংরাজি,উর্দু,হিন্দি আর স্থানীয় ভাষাতেই প্রশ্ন হয়ে থাকে।মোট ১০০টা প্রশ্ন থাকে যার ৯০ মিনিটের সময়ে উত্তর দিতে হয়।তিনটে বিষয়ের ক্ষেত্রে উত্তর দিতে হয়।যেমন জেনারেল অ্যাওয়ারনেস,অ্যারিথমেটিক,জেনারেল ইন্টেলিজেন্স আর রিয়েসনিং।

২. জেনারেল অ্যাওয়ারনেস প্রস্তুতি

এইটা সরকারী চাকরীর জন্য খুবই দরকারী একটা অংশ।সবচেয়ে কম সময়ে এই অংশের উত্তর দিতে হয়,যেমন ১২ থেকে ১৫ মিনিটে।আর বেশী নম্বরই তোলা যায় এখান থেকে।আপনি রোজ খবরের কাগজ পড়ুন।সেই কাগজ থেকে আলাদা করে নোট করুন অর্থনৈতিক খবর,রাজনৈতিক খবর,কর্পোরেট খবর।সেগুলো রোজ একবার করে চোখ বোলান।এছাড়া জেনারেল নলেজ কেন্দ্রিক ম্যাগাজিন নিন আর পড়ুন।

৩. নিউম্যারিকাল অ্যাবিলিটির প্রস্তুতি

যদি আপনার অঙ্ক সম্বন্ধে একটা মোটামুটি স্বচ্ছ ধারণা থাকে,তাহলে এই অংশটা আপনার সবচেয়ে প্রিয় অংশ হতে পারে।আপনি এখান থেকে সবচেয়ে বেশি নম্বর তুলতে পারেন।আর করতেও হবে কিন্তু ঠিকভাবে।পরীক্ষার আগে বাড়িতে অভ্যেস করে দেখুন আপনি কোন জায়গাটা বেশি তাড়াতাড়ি করতে পারছেন।তাহলে সেটা করার স্পিড আরও বাড়ান।আর যে অংশ দেখছেন দেরী হচ্ছে,তার জন্য আলাদাভাবে বসুন।বেশী অভ্যেস করুন।আপনি কিছু ফর্মূলা বা সূত্র বানান আর সেগুলো বারবার মনে করার চেষ্টা করুন।দেখবেন সেগুলো আপনার পরীক্ষার হলে আপনাকে সহায়তা করবে।

৪. জেনারেল ইন্টেলিজেন্স আর রিয়েসনিং

রিয়েসনিং খুব মজার একটা জায়গা।রিয়েসনিং’এর মূল কথাই হল কত কম সময়ে আপনি কত ঠিক ভাবে সল্ভ করতে পারছেন।তার জন্য আপনাকে নিয়মিত রিয়েসনিং অভ্যেস করতে হবে।কত কম সময়ে করতে পারছেন দেখতে হবে আর সময় কমিয়ে কমিয়েই যেতে হবে।বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়।কিনুন আর অভ্যেস করুন।

৫. স্টপ ওয়াচ নিয়ে বসুন

বাড়িতে অভ্যেস করার সময় আপনি স্টপ ওয়াচ নিয়ে ঘড়ি দেখে বসুন।রিয়েসনিং থেকে শুরু করে অঙ্কের জায়গা সবই কত কম সময়ে ঠিকভাবে করছেন এটার জন্য আপনাকে ঘড়ি ধরেই করতে হবে।সময় একদম কম নিন,যত কম লাগে।

৬. আগের বছরের প্রশ্ন দেখুন

যে কোনো পরীক্ষার জন্য একটা ধারণা তো লাগে কিরকম প্যাটার্ন তা জানার জন্য।তাই আগে হাতে আগের বারের প্রশ্ন নিন আর ভালোভাবে দেখুন।তারপর প্ল্যান করুন কিভাবে শুরু করবেন।

তাহলে এখন কিন্তু আপনি আর খুব বেশি দূরে নেই প্রস্তুতির।শুধু নিজের ওপর ভরসা রাখুন আর অনুশীলন করুন।দেখবেন রেলের চাকরী মোটেই আকাশের চাঁদ নয়।