একটা ফল যা সবার খুব প্রিয় বা পছন্দের, তা হল আঙুর। যখন আমি ছোট ছিলাম এমন অনেক ফল ছিল যা খুশি মনে খেতাম না। মা – বাবা জোড় করে প্রায় বেশির ভাগ সময় খাওয়াতো। কিন্তু মা যখনই এক গোছা আঙুর হাতে ধরিয়ে দিত, তখনই খুশি মনে খেয়ে নিতাম। বিশেষ করে টিভি দেখতে দেখতে আঙুর খাওয়ার মজাই আলাদা।
আঙুর স্বাদে যতটা ভালো তার চেয়েও দ্বিগুণ এর উপকারিতা। চলুন আজ এই বিষয়ের উপর আলোচনা করা যাক।
সবুজ আঙুর যা সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয়, তার পৌষ্টিকতা দেখুন। ১০০ গ্রাম আঙুরে আপনারা পানঃ
সুত্রঃ আমেরিকার কৃষি বিভাগ
• ৬৯ কিলো ক্যালোরি
• ০.৭২ গ্রাম প্রোটিন
• ১৮.১০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেড
• ১৮.১০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেডের মধ্যে ১৫.৪৮ গ্রাম চিনি রূপে
• ০.৯ গ্রাম ফায়বার
• ০.১৬ মাত্রায় ফ্যাট
• ক্যালসিয়ামঃ ১০ মিলিগ্রাম
• আয়রনঃ ০.৩৬ মিলিগ্রাম
• ম্যাগনেসিয়ামঃ ৭ মিলিগ্রাম
• ফসফরাসঃ ২০ মিলিগ্রাম
• পটাসিয়ামঃ ১৯১ মিলিগ্রাম
• সোডিয়ামঃ ২ মিলিগ্রাম
• জিঙ্কঃ ০.০৭ মিলিগ্রাম
• ভিটামিন সিঃ ৩.২ মিলিগ্রাম
• ভিটামিন কেঃ ১৪.৬ মাইক্রোগ্রাম
• কিছু মাত্রায় ভিটামিন এ ও ভিটামিন বি ৬ থাকে
• এতে কোলেস্টেরল শূন্য মাত্রায় থাকে।
আঙুরে থাকা কিছু যৌগিক পদার্থ ক্যান্সের বিরুদ্ধে লড়াই করার পক্ষে সক্ষম। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করার কিছু উপাদান আঙুরে রয়েছে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ খাবার ক্যান্সারের প্রতিরোধে সক্ষম বলে জানা গিয়েছে। আঙুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার হিসেবে প্রমাণিত।
বাজারে অনেক খাবার আছে যা দাবী করে যে তাতে কোলেস্টেরলের মাত্রা শূন্য।
আর আঙুরে কোলেস্টেরলের মাত্র যে শূন্য তা প্রমাণিত। তাই খাবারের তালিকায় আজই এই ফলটি যোগ করে নিন।
আঙুর ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে কিডনির সমস্যা কম দেখা দেয়।
খাবার ভালো ভাবে হজম করার ক্ষেত্রে আঙুরের ভূমিকা রয়েছে। ফলে টক ঢেকুর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
বদহজম থেকে মূলত এই সমস্যা হয়। আঙুর খেলে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
ভুলে যাওয়ার সমস্যা অনেকেরই থাকে আর আঙুর নিয়মিত খেলে তা কম হতে পারে। কারণ আঙুর মস্তিষ্কের মধ্যে পজেটিভ এনার্জি প্রদান করে। নিউরলজিক্যাল নানা সমস্যা থেকে আপনাকে দূরে রাখবে আঙুর।
নুন খেলে ব্লাড প্রেসার হাই হয়ে যায় কারণ এতে অতিরিক্ত মাত্রায় সোডিয়াম থাকে। আর এর ঠিক বিপরীত হল আঙুর। কারণ এতে পটাসিয়াম থাকে ভালো মাত্রায়। যা সোডিয়ামের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
আঙুর খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কারণ এতে ভরপুর পটাসিয়াম রয়েছে।
জল ও ফাইবার আঙুরে রয়েছে বিপুল মাত্রায়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে আপনি অনেক দূরে থাকতে পারেন আঙুর খেলে।
২০১৩ সালের একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে এমন কিছু ফল আছে যাদের রস পান করলে রক্তে চিনির মাত্রা কম হয়ে টাইপ ২ ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। আঙুর সেরকম একটি ফল।
বলা হয় যে আঙুর খেলে তা চোখের জন্য ভালো। গবেষণাতে তা প্রমাণিত। চোখের নানা রকমের রোগের থেকে আঙুর চোখকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
হাঁপানির সমস্যা যাদের আছে তাদের জন্য আঙুর ফল খাওয়া খুবই উপকারি। আঙুর ফুসফুসে আদ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে ফুসফুস সংক্রমিত হয় না। হাঁপানির সমস্যাও কমে।
দূর করে সহজেই আঙুর। ত্বকে বয়েসের ছাপ পরলে তা হ্রাস হয় আঙুর খেলে।
সাহায্য করে আঙুর। আঙুরে থাকা একটি যৌগ মুখের থেকে দ্রুত ব্রণ সরিয়ে দেয়। এর সাথে সাথে মুখের হারানো জেল্লা ফিরিয়ে আনে।
ত্বক নরম বা মোলায়েম রাখার জন্য ভিটামিন ই খুবই জরুরি। আর আঙুর ভিটামিন ই তে ভরপুর। ফলে আঙুর খেলে ত্বক সুন্দর ও নরম থাকে।
আরও ভালো হয় আঙুর দিয়ে মুখ ৫ মিনিট মত ম্যাসাজ করে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন সপ্তাহে দুবার। দেখবেন মাখনের মত নরম হয়ে গেছে স্কিন।
১) আঙুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের পুষ্টির জন্য খুবই ভালো।
২) আঙুর চুল পড়া কমায়, চুলের আগা ফাটার সমস্যাও কম করে।
৩) চুলের যত্ন নিতে আঙুরের এই হেয়ার মাস্কটি ব্যবহার করতে পারেনঃ
কি কি জিনিস লাগবে হেয়ার মাস্ক বানাতে?
• ৫-৬ টা আঙুর
• এক চামচ নারকেল তেল
• এক চামচ অলিভ অয়েল
• এক চামচ মধু
• এক চামচ বাদামের গুঁড়ো
একটি পরিষ্কার বাটিতে প্রথমে ৫ থেকে ৬ টা আঙুর ভালো করে পিষে রস বের করে নিয়ে রাখুন।
এবার এই বাটিতে প্রথমে এক চামচ নারকেল তেল ও এক চামচ অলিভ অয়েল মেশান। ভালো করে মিশিয়ে নিন উপাদানগুলো।
এক চামচ মধু ও বাদামের গুঁড়ো এবার এতে দিন।
রেডি আপনার হেয়ার মাস্ক। চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন তারপর হালকা ম্যাসাজ করুন। ২০ থেকে ২২ মিনিট পর হালকা গরমজলে চুল ধুয়ে নিন।
সপ্তাহে একবার করে এই হেয়ার মাস্কটি ব্যবহার করুন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আঙুরের উপকারিতা নজরে আসবে।
• খাওয়ার আগে ভালো করে পরিষ্কার জল দিয়ে আঙুর ধুয়ে নিন।
• আঙুর ফ্রিজে রাখুন। ঠাণ্ডা আঙুর খাওয়ার স্বাদই আলাদা।
• যদি আঙুরের গোছা থেকে আঙুর খাচ্ছেন তাহলে একটি কাঁচি অবশ্যই সাথে রাখুন। তা দিয়ে আঙুর কেটে খান। আঙুরের বোটায় থাকা আঠা ভালো না। তাই হাতে লাগাবেন না।
• আঙুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে যা লিখলাম তা সত্যি শরীরের জন্য ভালো। কিন্তু তাই বলে অতিরিক্ত আঙুর খাবেন না।
• সব জিনিসেরই ভালো খারাপ দিক থাকে। অতিরিক্ত আঙুর কেন খাবেন না জানতে হলে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন ➡ অতিরিক্ত আঙুর খাওয়ার অপকারিতা
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…