পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পছন্দ করেন? হাত না ধুয়ে খাওয়া তো দূরের কথা কোনও কাজই করেন না, লোকে যতই আপনাকে নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করুক না কেন, আপনার এই অভ্যেসের জন্যই কিন্তু আপনি শত শত রোগ-জীবাণু থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
আপনারা যারা হাত ধোয়ার বিষয়ে খুব একটা সচেতন নন। হাত ভালো করে না ধুয়েই খাবার খেতে বসে পড়েন, বা যারা ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে বসে টানা কাজ করেন, তাহলে তাদের সতর্ক হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। কারণ বিশ্বজুড়ে থাবা বসিয়েছে মারণ রোগ করোনা ভাইরাস। আর এই ভাইরাসের কবোলে পড়েছে ভারতবর্ষও। আর এই পরিস্থিতিতে সবথেকে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি (পার্সোনাল হাইজিন) নিয়ে আরও বেশি করে সচেতন হওয়ার।
কখন কখন হাত ধোবেন?
- খাবার খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়া উচিত।
- খাবার রান্না করার আগে এবং পরে অবশ্যই ভালো করে হাত ধোয়া দরকার।
- যাদের বাড়িতে ছোট্ট শিশু রয়েছে, তাদের সর্বদা শিশুর কাছে আসার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
- জ্বর-সর্দি-কাশি বা ফ্লু হলে বারবার হাঁচি-কাশি, নাক ঝাড়ার প্রয়োজন পড়ে। আর এইসময়ে বারবার হাত ধোবেন। কারণ হাতের সংস্পর্শ থেকে বহু রোগ-জীবাণুই সংক্রামিত হতে পারে।
- যাদের বাড়িতে পোষ্য রয়েছে। তারা অবশ্যই খাবার খাওয়ার আগে বা অন্য কোনও কাজ করার আগে হাত ধুয়ে নেবেন।
- যেকোনও শৌচকর্ম করার পর বা বাইরে কোনও পাবলিক টয়লেট ব্যবহার সময় হাত অবশ্যই পরিষ্কার জলে বেশ খানিকক্ষণ সময় নিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
- নোংরা-আবর্জনার সংস্পর্শে এলেও হাত ধোয়াটা বাধ্যতামুলক।
কী পদ্ধতিতে হাত ধোবেন?
- প্রথমে পরিষ্কার জলে হাতটা ভালো করে ভিজিয়ে নিন। এরপর কবজির সাহায্যে কলটা বন্ধ করে দিন। এতে হাত জীবাণুর সংস্পর্শে আসবে না। তবে খুব ভালো হয় যদি না ঠান্ডা না গরম জলে- হাতটা ধোয়া যায়।
- এরপর হাতে বেশ খানিকটা পরিমাণে লিক্যুইড সাবান নিয়ে নিন। আজকাল লিক্যুইড সাবান ব্যবহার করার প্রচলন খুবই বেড়েছে। এর অবশ্যই একটা খুবই ভাব খুব ভালো দিক রয়েছে। কারণ সাবান ব্যবহারের ফলে হাতের জীবাণু সাবানে লেগে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়। সেই সাবান আবার অন্য কেউ ব্যবহার করলে সেও সংক্রামিত হতে পারে। তাই অবশ্যই লিক্যুইড সাবান ব্যবহার করুন।
- এবার হাতে লিক্যুইড সাবান নিয়ে হাতের তালুর সঙ্গে ঘষে ভালো করে ফেনা তৈরি করুন। এরপর সাবানের ফেনা দুহাতে এমনভাবে লাগাবেন যাতে তা প্রতিটি আঙুল, আঙুলের ফাঁক, নখের কোণা, আঙুল এবং নখের মাঝের অংশ, অন্যদিকে কবজির অংশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
- বিশেষজ্ঞরা বলেন, টানা ২০ সেকেন্ড এইভাবে দুটি হাত কছলে নিতে। এর জন্য ঘড়ির কাঁটা ধরে ২০ সেকেন্ড গোনার কোনও দরকার নেই। মোটামোটি চার থেকে পাঁচবার হাতের এপিঠ-ওপিঠে ভালো করে কছলে নিলেও চলবে।
- রানিং জলে অর্থাৎ কল খুললে যে জল পড়ে সেই জলে হাত ধোয়া সবথেকে ভালো। কারণ মগ বা অন্য কোনও আধারের জল ব্যবহার করলে হাতে ময়লা লাগার একটা প্রবণতা থেকে যায়।
- এরপর খুব ভালো হয় যদি নরম টিস্যু দিয়ে হাত শুকিয়ে নেওয়া যায়। তা যদি সম্ভব না হয়। তাহলে পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে নিন। তবে তোয়ালে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন। কারণ তোয়ালেটি যদি অন্য কারওর ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাহলে তা ব্যবহার করা বিপজ্জনক, তাতে আর হাত ধোয়ার কোনও মানেই রইল না। তাই বাড়িতে সকল সদস্যের হাত মোছার জন্য আলাদা আলাদা হাত মোছার তোয়ালে রাখুন।