এই খানিক আগেই তো দিব্য ছিলেন। হঠাত করেই শুরু হল বুকে ব্যথা। আপনি ভাবছেন আপনার বুকে আবার কী সমস্যা হল! কিছু দিন আগেই তো ডাক্তার সব পরীক্ষা করে বললেন যে হার্ট এক্কেবারে পারফেক্ট। তাহলে? আসলে বুকে ব্যথা যে সব সময়ে আপনার হার্টের থেকেই হবে তার কিন্তু কোনও মানে নেই। অন্য কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে। আর আপনার সেগুলো অবশ্যই জানা উচিৎ। তাহলে আসুন জেনে নিই আপনার বুকে ব্যথার কারণ কী কী হতে পারে।
আপনার মাসলে যদি ইনফ্লেমেশন তৈরি হয়, অর্থাৎ যদি আপনার মাসলে প্রদাহ বাঁ জ্বালা ভাব দেখা দেয় এবং যদি পাঁজরের চারদিকে টান অনুভব করেন, তাহলে একটা চিনচিনে ব্যথা হয়। কিন্তু যদি এই ব্যথা খানিক ক্ষণের মধ্যে না কমে আর আরও ছড়িয়ে যায়, তাহলে তা প্রবল বুকে ব্যথার জন্ম দেয়।
আপনার পাঁজরে যদি গুরুতর কোনও সমস্যা হয়, যেমন ভেঙে যাওয়া বা ফ্র্যাকচার হওয়া, তাহলে তার থেকেও কিন্তু বুকে ব্যথা হয়। আপনার বুকে ব্যথা পাঁজরের কাছে যদি অসহ্য ভাবে হয়, তাহলে বুঝবেন আপনার পাঁজরে কোনও সমস্যা আছে।
পেপটিক আলসার, যা মূলত আমাদের পাকস্থলীতে হয়ে থাকে তার জন্য সরাসরি কোনও ব্যথা বুকে হয় না। কিন্তু বুকের কাছে একটা হাল্কা চাপ চাপ ভাব অনেক সময়ে হয়ে থাকে। সেটা খুবই অস্বস্তি দেয়। সেক্ষেত্রে অ্যান্টাসিড খেলেই এই ব্যথা কমে যায়।
জি.ই.আর.ডি বা গ্যাসট্রোইসোফাজেল রিফ্লাক্স ডিসিজ তখনই হয় যখন আপনার পাকস্থলীর অপাচ্য বা অর্ধপাচ্য খাবার বিপরীত দিকে গিয়ে আপনার গলার কাছে আসে। আর এর ফলে আপনার বুকের কাছে অসহ্য জ্বালা তৈরি হয় আর মুখ টক হয়ে যায়।
এটি একটি খুবই কমন শ্বাসকষ্টের সমস্যা। আপনার চারদিকে আজকাল যে পরিমাণ ধুলো আর দূষণ তাতে শ্বাসের সমস্যা হবেই। কিন্তু যদি এটা বেশি মাত্রায় হয়, মানে শ্বাস নিতে খুবই সমস্যা হয়, তখন কিন্তু বুকে ব্যথা হয়। আর তার সঙ্গে হয় প্রবল কাশি।
যখন আপনার পাঁজর আর ফুসফুসের মধ্যে বাতাস কোনও কারণে জমাট বাঁধে তখন ফুসফুসের উপর খুবই চাপ সৃষ্টি হয়। আর তখনই ফুসফুস ঠিক করে কাজ করতে পারে না, শ্বাস নিতে সমস্যা হয় আর তখনই বুকে ব্যথা হয়। এই ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে, সঙ্গে বেশি মাত্রায় বুক ধড়পড় করতে পারে।
আপনার পাঁজরের কার্টিলেজে যদি জ্বালা হয় তাহলে তাকে বলে কস্ট্রোকনড্রাইটিস। এর ফলেও কিন্তু বুকে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা তখন আরও বাড়তে পারে যখন আপনি কোনও নির্দিষ্ট পজিশনে বসবেন বা শোবেন বা আপনি যখন শারীরিক কসরত করবেন।
আমাদের খাদ্যনালীতে কোনও কারণে সঙ্কোচন হলে তাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে এসোফাজেল কনট্রাকসন ডিসঅর্ডার। যদি কোনও কারণে এটি হয় তাহলে কিন্তু বুকে ব্যথার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
আপনার খাদ্যনালীর মধ্যে যে বাতাসের চাপ থাকে তাতে যদি কোনও তারতম্য হয় বা যদি অ্যাসিড ফর্ম করে, তাহলে কিন্তু ব্যথা হতে পারে। আর যেহেতু খাদ্যনালী বুকের কাছেই, তাই তার প্রভাব বুকেও পড়ে।
এই ধরণের হার্নিয়া তখনই হয় যখন আমাদের পাকস্থলীর খানিক অংশ উপরের দিকে উঠে হার্টের কাছে চলে আসে। এই ধরণের হার্নিয়ার কিন্তু কোনও উপসর্গ হয় না। যদি আমাদের খাওয়ার পর পাকস্থলীর উপরের অংশ হার্টের নিচের অংশের দিকে আসে তাহলে বুকে জ্বালা শুরু হয় আর বুক ব্যথাও করে।
নানা রকম জেনেটিক কারণে যখন হার্টের দেওয়াল ভারী হয়ে আসে তখন কিন্তু এই রোগটি হয়। তখন হার্টের মধ্যে দিয়ে রক্ত চলাচলে খুবই সমস্যা হয়। হার্টের পেশিতে খুবই টান ধরে। আর তখনই খুব শ্বাসকষ্ট হয় আর বুকে অসহ্য ব্যথা হয়।
টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্মা তখনই হয় যখন এর ব্যাকটেরিয়া ফুসফুসে জমাট বাঁধে। আর তখন খুব কাশি হয়, রক্ত পড়তে থাকে মুখ দিয়ে আর বুকে ব্যথা হয়।
এটা কিন্তু আচ্ছা আচ্ছা সাহসী লোকেদেরও অনেক সময়ে হয়ে থাকে। হঠাত করে যদি এমন কিছু দেখে ফেলে কেউ যা ভয় ধরিয়ে দেয় বা কিছু মনে পড়ে ভয়ের, তাহলে তা কিন্তু এই প্যানিক অ্যাটাকের জন্ম দেয়। আর তার থেকে বুকে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। এর সঙ্গেই হতে পারে বমি, ঘাম আর বুক ধড়ফড়।
আপনার বুকের চারপাশ জুড়ে যখন একটা চিনচিনে ব্যথা হয়, তখন তাকে ডাক্তারি ভাষায় বলে পেরিকার্ডিটিস। আর এই ব্যথা তখনই খুব বাড়ে যখন আপনি শ্বাস নিতে যাবেন বা শুতে যাবেন।
দেখে ঘাবড়ে যাবেন না। নিউমোনিয়াও কিন্তু খুব আপনার বুকের ব্যথার কারণ হতে পারে। যদি আপনি দীর্ঘ দিন ধরে নিউমোনিয়ায় ভোগেন, তাহলে তার থেকে বুকে ব্যথা হতে পারে। সঙ্গে থাকে কাশি আর জ্বর। এই কাশির সময়ে কাশতে গেলে বুকের ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
বুকে ব্যথার কারণ তো বললাম। এবার তার থেকে মুক্তি তো পেতে হবে। আর আপনি ভাবছেন মুক্তি মানেই ওষুধ। কিন্তু আমরা আজ বলব কীভাবে ওষুধ ছাড়াই আপনি ১০ মিনিটের মধ্যে বুকে ব্যথা কমিয়ে নেবেন।
বুকের ব্যথার অন্যতম কারণ হল পেশির জমাট বেঁধে আসা। এর ফলে অনেক সময়ে ব্লকেজ তৈরি হয়। কিন্তু এই ব্লকেজ ওষুধ ছাড়াও কমানো সম্ভব। শুধু আপনি বরফের ব্যবহার করুন। একটি কাপড়ে বরফ নিয়ে বুকের চারপাশে বোলাতে শুরু করুন। দেখবেন এতে ব্যথা কমে যাবে।
বুকে ব্যথা হলে হালকা কিছু পানীয় গরম করে খান। সেটা হতে পারে শুধু জল। কারণ এই উষ্ণ পানীয় কোনও রকম গ্যাসের সমস্যা হলে তা সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে দেয়। আর ঘরে রাখতে পারেন হিবিস্কাস চা। এটি কিন্তু কোনও রকম জমাট বাঁধা থেকে রেহাই দেয়। তাই বুকে ব্যথা হলে গরম হিবিস্কাস টি খেতে পারেন।
যদি আপনার পাকস্থলীতে অ্যাসিড তৈরি হয়ে থাকে আর তার থেকে কোনও ভাবে ব্যথা হয়, তাহলে আপনি বেকিং সোডা ব্যবহার করুন। ঠাণ্ডা বা গরম জলে বেকিং সোডা গুলে খেয়ে নিন। এটি সঙ্গে সঙ্গে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
বলা হয় রসুন নাকি বুকে ব্যথার ক্ষেত্রে দারুণ কাজ দেয়। এক্ষেত্রে আপনি খানিক রসুন আর লবঙ্গ থেঁত করে গরম জলে মিশিয়ে খান। আর যদি পারেন তাহলে রসুন চিবিয়েও খেতে পারেন। এটা বুকে ব্যথা হওয়ার সময়ে ট্রাই করে দেখুন।
আপনি এইগুলো যদি সঙ্গে সঙ্গে করতে পারেন বুকে ব্যথার সময়ে তাহলে আমরা কথা দিচ্ছি, বুকে ব্যথা কমে যাবে ১০ মিনিটের মধ্যে। আর কিছু নিয়ম মেনে চললে তো বুকে ব্যথার সমস্যাই অনেকটা কমিয়ে আনা যায়।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…
View Comments
আমার বুকে ব্যাথা মনে হচেছ কেজনো চাপ দিয়ে আছে
বুকের হাড় ব্যাথা খুব।
কী করণীয়?
ekdiner besi byatha thaklei Dr. dekhan.
দীর্ঘ সাত মাস যাবত বুকের ভিতর খুব ব্যাথা,যন্ত্রনা।।মাঝে মাঝে কমে তখন ভাবি সেরে গেছে।আবার কয়েক দিন পর শুরু হয়।।এই করতে করতে সাত মাস কেটে গেছে।এখন খুব ব্যাথা আর যন্ত্রনা।কিছুতেই কমছেনা।।এখন আমি কি করতে পারি???