মাত্র ৬ মাসে ৩২ কিলো ওজন কমালেন ভূমি পেনডেকর! কি ভাবে?
বলিউডে তাঁর ডেবিউ ছবি ‘দম লাগাকে হাইশা’-অভিনয় করার সময় তাঁর ওজন ছিল ৮৯ কেজি। ৬ মাসে ৩২ কেজি ওজন কমিয়ে এনে ৫৭ কেজি ওজন করে ফেলেছেন, তাও আবার নিজের প্রিয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত না থেকেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভূমি জানিয়েছিলেন যে তিনি কীভাবে কোনও ডায়টিশিয়ানের সাহায্য ছাড়াই কেবলমাত্র ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে ওজন কমিয়েছেন ভূমি।
ভূমির মত সামান্য কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখুন
শুধু মেনে চলেছেন কয়েকটি সহজ টিপস। এই যেমন চিনির বদলে মধু খাওয়া, ডায়েটে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট হ্রাস করা, নিয়মিত এক্সসারসাইজ, পাশাপাশি পরিমিত পরিমাণে ঘি-মাখনও খেতেন ভূমি।
ভূমির কথায় চিনির পরিবর্তে মধু খেলে তা খাবারকে সঠিকভাবে হজম করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। কারণ এতে থাকে জিঙ্ক, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম, যা খুবই স্বাস্থ্যকর।
এছাড়া লেবুর জল, দুধ এবং স্যালাডের ড্রেসিং-এও মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এছাড়াও কোকোনাট সুগার, ম্যাপল সুগারও স্বাদের জন্য খাওয়া যেতে পারে।
তবে কোনও কিছুই অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ডায়েটে সবকিছুই পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উচিত।এছাড়াও ভুমি প্রতিদিন সাত লিটার করে ডিটক্স ওয়াটার খেত।
জলের মধ্য শশা, পুদিনা পাতা এবং লেবু মিশিয়ে সেই জল সারাদিন ধরে পান করতেন, ভূমির কথায় এই জল শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
যার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়। শশা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং লেবু ত্বকের জেল্লা বাড়াতে এবং শরীরে পিএইচের মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে।
আর পুদিনা পাতা খাবার হজম করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এরজন্য একটি বোতলে শশা, লেবু এবং পুদিনা পাতা দিয়ে সেই জল ফ্রিজে রেখে দিন। ২ ঘণ্টা রেখে ছেঁকে নিলেই তৈরি হবে ডিটক্স ওয়াটার।
এক ঝলকে দেখুন ভূমি পেডনেকরের ডায়েট প্ল্যান
প্রাতঃরাশ– সকাল বেলা এক গ্লাস হালকা গরম জল পান করতে হবে। এর ঠিক আধ ঘণ্টা পরে এক বাটি মুয়েসলি এবং ফ্যাক্সিড বীজ বা সূর্যমুখীর বীজ গ্রহণ করতে হবে। এরপর গমের তৈরি ব্রাউন ব্রেড, জুটি ডিমের সাদা অংশের তৈরি অমলেট, এরপর পেঁপে বা আপেল-এর মধ্যে যেকোনও একটি ফল। এর ঠিক এক ঘণ্টা পর জিম-এ যেতেন ভূমি।
মধ্যাহ্ণভোজ– দুপুরের খাবারের জন্য পাতে পড়ুক জোয়ার, বাজরা, কলাই আটার একসঙ্গে মিশিয়ে তার রুটি। সঙ্গে অলিভ অয়েলে রান্না করা মুসুর ডাল এবং একাধিক সবজি দিয়ে বানানো একটি তরকারি। সেইসঙ্গে বাড়িতে তৈরি এক গ্লাস বাটার মিল্ক। তবে এ ছাড়াও দুপুরের খাবারে ভূমির পাতে পড়ত হিউমাস স্প্রেডসহ গ্রিল চিকেন স্যান্ডউইচ। অলিভ অয়েলে তৈরি চিকেন গ্রেভি এবং এক বাটি ব্রাউন রাইস।
বিকেলের জল খাবার– সন্ধেবেলায় জলখাবারে ঠিক সাড়ে চারটে নাগাদ যেকোনও একটি ফল ( পেঁপে বা আপেল, বা নাশপাতি বা পেয়ারা)। এর ঠিক এক ঘণ্টা পর কিছুটা আমন্ড বাদাম, আখরোট সঙ্গে গ্রিন টি।
নৈশভোজ– সন্ধে সাতটা নাগাদ এক বাটি গ্রিন সালাড যার মধ্যে মরশুমি বেরি, অলিভ অয়েল, সরষে, লাল লঙ্কা, রসুন অথবা ভিনিগার বা আপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে খেতে হবে।
সন্ধে সাতটার পর আবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ থাকবে আর এক ডায়েট। সেই ডায়েটকে মজাদার করে তুলতে খেতে হবে গ্রিল্ড চিকেন অথবা গ্রিল্ড ফিশ অথবা ফেটা চিজ।
তবে ভেজিটেরিয়ান ডায়েট হলে তাতে থাকবে ফ্রেশ গ্রিল্ড চিজ অথবা টোফু। সেইসঙ্গে ভাজা অথবা সেদ্ধ সবজি সঙ্গে ছোট এক কাপ ব্রাউন রাইস অথমা মাল্টিগ্রেন ব্রেড।
নৈশভোজে খাদ্যতালিকায় চাইলে পরিমিত পরিমাণে কার্বোহাউড্রেট সমৃদ্ধ খাবার রাখার চেষ্টা করুন।
বোনাস টিপস
তবে শুধু ডায়েট নয়, ডায়েটের পাশাপাশি জিম ও জগিং করা পছন্দ করতেন ভুমি।
পাশাপাশি জিমে গিয়ে প্রশিক্ষকদের তত্বাবধানে তিন দিন ওজন তোলা এবং তিন দিন কার্ডিও এক্সসারসাইজও চলত সমানতালে।
সপ্তাহে দুদিন চলত ওয়েট ট্রেনিংও। ভূমির মতে এটি তাঁর শরীরে ফ্যাট বার্ন করতে এবং পেশীকে শক্তিশালী করতে বিশেষভাবে সাহায্য করত।