পশ্চিমবঙ্গ হলো খাদ্যপ্রেমীদের স্বর্গ। বাঙালি ভোজনরসিকদের তালিকায় তাই আচারের উপস্থিতি খুবই স্বাভাবিক। স্বাদে, গন্ধে মাতানো আচারের নানা স্বাস্থ্যসম্মত দিক রয়েছে।
শীতকালে কাঁচের বয়ামে করে হরেকরকমের আচার ছাতে রোদে দেবার নস্টালজিয়ার সাথে পরিচিত নয় এমন বাঙালি বোধহয় কমই আছে। কাজেই আচারের নাম শোনামাত্র যাদের রসনাতে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয় তাদের জন্য রইল বেশ কিছু আকর্ষণীয় তথ্য আচার নিয়ে।
১. আচারের রসপান এক নতুন বিকল্প
- ‘ফ্লোরে ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স’ বলছে যে আমাদের মস্তিষ্কের ওপিনওয়েড সিস্টেম এর কারণে আমাদের শরীরে লবনাক্ত খাবারগ্রহনের চাহিদার অনুভূতি তৈরি হয়।
- এই থেকে আচারের প্রতি আসক্তি ও তৈরি হয়।শরীরে জলের ঘাটতি, ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা অথবা এডিসন রোগের কারণে মানুষের আচার খাবার প্রবণতা চোখে পড়ে।
- তবে বর্তমানে পিকেল জুস বা আচারের রসপান এক নতুন বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে।
- আম, বড়ই, চালতা, জলপাই বা রসুন এর আচার কোনোকিছুই এর ব্যতিক্রম নেই।
- গবেষণা বলছে আচারের রস রক্তে চিনির মাত্রা, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, মাংসপেশির খিঁচ ইত্যাদি কমাতে খুবই উপকারী।
২. পেশির খিঁচ সারাতে আচার জুস
- পেশির খিঁচ সারাতে আচার জুসের জুড়ি মেলা সত্যি ভার।
- বেশিরভাগ খেলোয়াড়রাও এই কাজে এটিকে ব্যবহার করছেন এবং তাদের মধ্যেও যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
- মাসল ক্রাম্প হলে সত্বর ব্যবহার করা যেতে পারে এটি।দেখা গেছে এই সময় সম পরিমান জল খাবার থেকে এই আচারের রস বেশি কাজ দেয়।
- এর মধ্যে থাকা ভিনেগার দ্রুত ব্যথার উপশম করে এবং স্নায়ুর কার্যক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।
৩. জিমে ওয়ার্ক আউট করলে সঙ্গী হিসেবে আচার
- জলের উত্তম সাপ্লিমেন্ট হতে পারে এটি। শরীরে নিয়মিত ফ্লুইড এর যোগান দিতে জলের পাশাপাশি ব্যবহার করে দেখতে পারেন আচার জুস।
- বেশি সময় ধরে জিমে ওয়ার্ক আউট করলে সঙ্গী হিসেবে নিয়ে যান একে। এর মধ্যে থাকা ভরপুর সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম বডি থেকে বেরিয়ে যাওয়া মৌল গুলির রিকভারিতে উল্লেখ্য ভূমিকা নেবে।
৪. ওজন কমেছে অবিশ্বাস্য ভাবে
- যারা ভাবছেন আচার খেলে তাদের ওজন সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে হবে তারা একেবারেই ভুল ভাবছেন।
- বরঞ্চ হাই ক্যালোরি স্পোর্টস ড্রিংকস এর বদলি হিসাবে রাখুন আচারকে। এতে থাকা ইলেক্ট্রলাইট দ্রুত কাজ করে। এতে ফ্যাট নেই বিন্দুমাত্র এই নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।
- পরীক্ষা করে দেখা গেছে ১২সপ্তাহ ধরে প্রত্যেকদিন এর মধ্যে থাকা ভিনেগার ১ আউন্স করে খাবার পর ওজন কমেছে অবিশ্বাস্য ভাবে।
৫. আচারের রস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী
- ডায়াবেটিস রিসার্চ জার্নাল জানিয়েছে আচার রস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভাবে কার্যকরী।
- ডায়াবেটিস মেলিটাস ও ইনসিপিডাস উভয় ক্ষেত্রেই দারুণভাবে কাজ করে এটি।
- রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে চমকপ্রদ ফল দিয়েছে।
- আরেকটি যে জিনিস সম্পর্কে না জানলেই নয় তা হলো এর মধ্যে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট এর উপস্থিতি।
- ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই দুটির মিশেলে শরীর থেকে ক্ষতিকারক মৌল বার করে দিতে দারুন ভাবে সাহায্য করে।
- পাশাপাশি অনাক্রমতা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উল্লেখ্য হারে বাড়িয়ে দেয়।
৬. অন্যান্য উপকারিতা
- এর মধ্যে থাকা নানা এন্টি মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াল উপাদান পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- পাচন ক্ষমতা ও খিদে উভয়ই বাড়াতে যথেষ্ট সাহায্য করে।
- তা ছাড়া দেখা গেছে নানা শাকসবজি ও গোটা ফল দিয়ে তৈরি আচার অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের নানা উপকার করে।
- এতে ফাইবার এর উচ্চমাত্রা হাড়ের গঠন ও পুষ্টিতে উপযোগী।
- এতে উপস্থিত হেপাটোপ্রোটেক্টিভ উপাদান লিভার এর ক্ষতি আটকায় ও আলসারের ঝুঁকি হ্রাস করে।