আপনাকে হয়তো অনেক সময়েই শুনতে হয়েছে এই ধরণের কথা- দেশলাই কাঠি। বা কেউ বলেছে কাঠির উপর আলুর দম। এরকম কথা আমাদের অনেককেই শুনতে হয় আর বিব্রত হতে হয়। বয়স আর উচ্চতার তুলনায় ওজন কম হওয়া বা আন্ডারওয়েট হওয়া কিন্তু খুবই সমস্যার ব্যাপার। আপনাকে এর জন্য সামাজিক ভাবে আপমানিত হতে হবে আবার শারীরিক ভাবেও চিন্তিত থাকতে হবে।
এই চিন্তা থেকে মুক্তির উপায় আছে। শুধু কিছু নিয়ম একটু নিয়ম করে মেনে চললেই আপনি পাবেন আপনার স্বপ্নের দারুণ ফিগার। তাহলে আর দেরি না করে এই দশটি জিনিস করুন আজ থেকেই।
নানা কারণেই আমাদের ওজন অনেক সময়ে কম হয়। যেমন আমরা অনেকেই নিয়ম করে খাই না। আজ যদি রাত ৯টায় খাই তো কাল খাই হয়তো রাত ১১টায়। এতে হজমের সমস্যা হয়, পুষ্টি শরীরে লাগে না। অনেকের আবার থাইরয়েড থাকে যা মেটাবলিজম ভালো হতে দেয় না। তাই শরীর গঠন হয় না ভালো করে। ওজন কম হওয়ার আরেক কারণ হল ডায়াবেটিস। আর যদি কারোও ক্যানসার বা এইচ.আই.ভি থাকে তাহলেও কিন্তু ওজন কমাটা আশ্চর্যের কিছু নয়। অনেকে আবার জেনেটিক কারণে মানে বংশ পরম্পরায় রোগা।
সমস্যার কারণের কথা তো বললাম, এবার আসি সমাধানে। আপনি রোগা থেকে মোটা হতে চাইছেন মানে আপনি বেশি মাসল চাইছেন, বেশি ক্যালোরি চাইছেন। সোজা বাংলায় যাকে বলে গায়ে মাংস হোক এটা চাইছেন। তাই আপনাকে সেইরকমই কাজ করতে হবে।
দেখুন রোগা হতে চাইলে আমরা কম ক্যালোরি নিই আর ক্যালোরি বার্ন করাই। এক্ষেত্রে হবে বিপরীত। আপনি শরীরের চাহিদার তুলনায় বেশি ক্যালোরি নিন। যদি আপনি আস্তে আস্তে ক্যালোরি বানাতে চান তাহলে রোজ প্রয়োজনের তুলনায় ৫০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করুন। আর তাড়াতাড়ি ওজন বাড়াতে চাইলে ৭০০ ক্যালোরি করে নিন। এভাবে আপনি কয়েক সপ্তাহ করুন, দেখবেন অসাধারণ ফল পাচ্ছেন।
শরীর তৈরির জন্য কিন্তু প্রোটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রোটিন ছাড়া কিন্তু বেশি ক্যালোরি নিয়ে কোনও লাভ হবে না কারণ তাহলে সেই ক্যালোরি ফ্যাট হয়ে যাবে। আমাদের পেশি তৈরির জন্য প্রোটিন কিন্তু সবচেয়ে বেশি দরকারি আর ওজন বাড়াতে হলে পেশি বাড়ানো দরকার। ১.৫ থেকে ২.২ গ্রাম প্রোটিন প্রতি কিলোগ্রাম হিসেবে প্রোটিন নিতে হবে। আপনি হাই প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন ডিম খান ভালো করে। সঙ্গে রাখুন ডেয়ারি প্রোডাক্ট। আর রোজ খান ডাল।
প্রতিদিন আপনাকে ব্যায়াম করতেই হবে ওজন বাড়ানোর জন্য। আর ওজন বাড়াতে গেলে শুধু দৌড় বা জগিং যথেষ্ট নয়। দরকার জিমে গিয়ে ওয়েট লিফটিং। সিট আপ, পুস আপ এই সব তো করবেনই, তাছাড়া কার্ডিয়ো করা দরকার। ডাম্বল তুলতে পারেন আপনার শক্তি বুঝে। আর এই সবই একজন অভিজ্ঞ ট্রেনারের কাছে করা ভালো। আপনার ওজন আর চেহারা দেখে তিনিই আপনাকে বলে দেবেন কি কি করতে হবে। তাই সকালটা এখন থেকে একটু যন্ত্রপাতি দিয়েই শুরু হোক।
ওজন বাড়াতে গেলে বারে বারে খান আর তাও বেশি করে। বারে বারে খাওয়া কিন্তু সকলেরই উচিৎ। আপনি প্রতি দু ঘণ্টা অন্তর অন্তর কিছু খান। বারে বারে আপনার এই ছোট ছোট মিলগুলো আপনি ফল, ছানা, দই এইরকম জিনিস দিয়ে পূরণ করুন। এতে শরীরে পুষ্টি আসবে আর আপনার ওজন বাড়বে।
ওজন বাড়াতে হলে কার্বোহাইড্রেটকে ভুললে চলবে না। ভাত, রুটি এই সবই তো কার্বোহাইড্রেটের প্রধান উৎস। তাই দিনে দুবার খান এই কার্বোহাইড্রেট। তবে ওজন বাড়াতে হবে বলে থালা ভরতি করে খাবেন না। খাবেন পরিমিত, কিন্তু সাধারণের তুলনায় খানিক বেশি। যেন সেটা শরীরে লাগে, ফ্যাট না হয়ে যায় এটা মাথায় রাখবেন।
এটি কিন্তু ওজন বাড়াতে একদম অব্যর্থ। ঘুমোতে যাওয়ার আগে এমন কিছু যদি আপনি খান যা বেশ পুষ্টিকর এবং ক্যালোরি থাকতে পারে, কিন্তু সেটা তো ঘুমিয়ে পরছেন বলে খরচ হচ্ছে না। সেটা তাই আপনার ওজন বাড়াবে। দুধ আর মধু ঠিক সেই কাজটাই করবে। খাবার আগে দুধে মধু গুলে খেয়ে নিন। এটা আপনি রোজ খান কয়েক মাস। দেখবেন উপকার পেতে আপনি বাধ্য।
ড্রাই ফ্রুটে আছে প্রচুর ক্যালোরি আর ফ্যাট। এটি তাই আপনার ওজন অনায়াসেই বাড়াবে। সকালে উঠেই রোজ দুটো কাজু আর দুটো কিসমিস খান। এটি একদম ভুলবেন না। আর ব্রেকফাস্টে খান দুটো আমন্ড। মাঝে মাঝে পেস্তাও খেতে পারেন। বাদামটা একটু বেশি পরিমাণে রাখুন আপনার ডায়েটে। দেখবেন আপনি একমাসেই কেমন ওজন বাড়িয়েছেন।
কী, শুনে চমকে উঠলেন! ভাবছেন বন্ধু হয়ে মদ খেতে বলছি! না না, মদ খেয়ে মাতাল হতে বলছি না। কিন্তু এটা প্রমাণিত যে অ্যালকোহল ওজন বাড়ায়। বিশেষ করে বিয়ার খেলে। বিয়ার গ্রেনস থেকে হয়। তাই গ্রেনসের পুষ্টি আছে এতে। রোজ নিয়ম করে খানিকটা বিয়ার খান। দু মাস মতো খান। নেশা করবেন না, ভাবুন এটা একটা সাপ্লিমেন্ট। তাহলেই দেখবেন আপনি উপকার পাচ্ছেন।
সব সমস্যার এই এক দাওয়াই, চিন্তা কমান। জানি আজকের দিনে সেটা খুবই কঠিন। তাও যতটা সম্ভব পারা যায়। রাতে ভালো করে ঘুমাবার চেষ্টা করুন। নিয়ম করে আট ঘণ্টা ঘুম কিন্তু অবশ্যই দরকার। এর কম যেন না হয়। সকালে উঠে প্রাণায়াম করুন। এতে মন ভালো হয়। এগুলো কিন্তু নিয়ম করে করতে হবে।
এটা শুনে খুব মজা পাবেন না। আপনি আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিঙ্কস, পেস্ট্রি, বার্গার সব খেতে পারেন। তবে সেটাও খুবই পরিমিত। সাধারণত অন্যদের এগুলি খেতে বারণ করা হয়। আপনাকে বলা হচ্ছে কারণ আপনার ওজন বাড়ার দরকার। তাই তার জন্য যতটা দরকার ততটাই খান। ডায়েটে একটু চকোলেট, চিজ এগুলো রাখতেই পারেন।
তবে একটা কথা মনে রাখবেন। রোজ নিয়ম করে জল খেতে হবে। এর মতো ভালো ওষুধ কিন্তু কিচ্ছু নেই। আর নিজের মধ্যে থেকে রোগা হওয়ার হীনমন্যতা সরিয়ে সুন্দর ফিগার নিয়ে সবার সামনে নিজেকে মেলে ধরুন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…