আমরা রূপচর্চার বিবর্তনে ক্রমশ সিটিএম স্কিন পরিচর্যা থেকে অর্থাৎ ক্লিনজিং,টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং থেকে উত্তরণ ঘটাচ্ছি। এহেন সময়ে স্কিন কেয়ার এক্টিভ টার্মটা সর্বজন বিদিত এনিয়ে দ্বিমত নেই। বিউটি প্রোডাক্ট এর উপভোক্তা হিসেবে আমাদের মনে নিজেদের চয়ন করা প্রোডাক্ট এর অথেন্টিসিটি নিয়ে দোলাচল থেকেই যায়।
এক্টিভ স্কিনকেয়ার উপকরণ হলো সেই সমস্ত প্রাকৃতিক ও শক্তিশালী উপাদান যা প্রত্যক্ষ ভাবে স্কিনের কোষীয় জালিকাতে প্রবেশ করে তাকে হাইড্রেট, উজ্জ্বল ও সেল মেরামত করে। অন্যদিকে ইনএক্টিভ স্কিনকেয়ার উপাদানগুলো হলো সিন্থেটিক প্রজাতির যেগুলো অন্যান্য উপদানগুলিকে সমন্বিত করে স্কিনের টেক্সচার ও কাম্য লুক বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ভারতীয় স্কিনের জন্য আদর্শ এক্টিভ উপাদান:
- আমাদের ভারতীয় ব্রাউন স্কিন যেহেতু ট্রপিক্যাল পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত, তাই তার যত্নের পদ্ধতি ও ভিন্ন হবে। গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া ত্বকের ধারণ ও গ্রহনক্ষমতা ইউনিক হয়।
- বিখ্যাত স্কিন বিশেষজ্ঞ ডক্টর শেঠ বলছেন – “ প্রত্যেক ব্যক্তির স্কিনের নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী তাদের জন্য আদর্শ এক্টিভ আলাদা হয়ে থাকে। কিন্তু সার্বজনীনভাবে বলতে গেলে ভারতীয় স্কিনের জন্য ভিটামিন বি থ্রি, নিয়াসিনামাইড এবং ভিটামিন সি ও কজিক এসিড পিগমেন্টেশন এর জন্য ভালো কাজ করে। সেরামাইড স্কিনের মেরামত ও প্রদাহ রোধ করতে বেস্ট অপশন।“
- ভারতীয় স্কিনকে যেহেতু তৈলাক্ত ও পলিউসন এর সাথে মোকাবিলা করতে হয় তাই হাইড্রক্সি এসিড এক্সফোলিয়েশনে ও হ্যালুরণিক এসিড হাইড্রেসন এ খুব কাজে দেয়।হোম রেমেডিতে হলুদ ও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- যেকোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের আগে এগুলো দেখে নেবেন আছে না নেই। স্কিনের সার্বিক যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কিভাবে বুঝবেন স্কিন কেয়ার এক্টিভ এর সঠিক অনুপাত:
- যেহেতু এই প্রোডাক্টগুলি আপনার ত্বকের সেলুলার লেভেলে সরাসরি প্রভাব ফেলে তাই সতর্কতা তো প্রয়োজনই। রিএক্টিভ এজেন্টগুলো নেতিবাচক রেজাল্ট নিয়ে আসে। তাই উপাদানগুলোর সঠিক ফর্মুলাগত ব্যালেন্স দরকার।
- নিয়াসিনামাইড এর পরিমাণ হওয়া উচিত ৩-৫% যেটা অন্যান্য এক্টিভ এর সাথে যথাযথ সাপ্লিমেন্ট করবে।
- হাইড্রক্সি এসিডের পরিমান ১৫% এর নিচে হওয়াই বাঞ্চনীয়। এটি ডার্মাটোলজিস্ট রাও বলে থাকেন।
- ভিটামিন সি এর প্রকৃতি আনস্টেবল। তাই এটি ব্র্যান্ড এর সাথে ভ্যারি করবে বা পরিমাণের অদলবদল দেখতে পাবেন। কিন্তু সরাসরি সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে আনবেন না যেগুলোতে ভিটামিন সি থাকে। ইউভি রে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে এসিড এর চরিত্র পাল্টে দেবে।
থাম্ব রুল মেনে চলুন:
- যখনই নতুন স্কিন কেয়ার এক্টিভ এ শিফট করবেন তখন রেটিনল বা গ্লাইকলিক এসিড মিনিমাম ডোজ এ নেওয়া টাই ঠিক হবে। যদি স্কিন এর প্রকৃতি রাফ ও টাফ হয় তবে ডার্মাটোলজিস্ট এর সাথে পরামর্শ করে তার মাত্রা নির্ধারণ করুন।
- একটি উপাদানের ব্যবহার একক সময়ে করুন। ধরুন ল্যাকটিক এসিড দিয়ে স্কিনের উপর এপ্লাই শুরু করলেন। তবে সেটা যেন ২ সপ্তাহ অব্দি কমপক্ষে স্থায়ী হয়। তারপর রেটিনল জাতীয় স্কিন সিরাম ব্যবহার করবেন। এটা স্কিনের পুনরুজ্জীবন ঘটাবে ও এক্টিভ উপাদানকে সক্রিয় করে তুলবে।
স্কিনকেয়ার এক্টিভ এর মূল্যগত সম্পর্ক:
- স্কিন কেয়ার এক্টিভ গুলি আমাদের ত্বকীয় টিস্যুর মাইক্রো ড্যামেজ এর বিরুদ্ধেই লড়াই করে। তাই ডার্মাটোলজিস্ট দেখবেন আপনাকে ফার্মেসি বেসড প্রেসক্রিপশনই ধরাবে যেখানে বড়ো ব্র্যান্ড এর নাম থাকবেনা অতটা।
- কিন্তু বড় বিউটি প্রডাক্ট এর ব্র্যান্ড গুলি তাদের মূল্য রাখবে চড়া।
- কিন্তু যে ব্র্যান্ড এ আপনি ভরসা করে উপকার ও সুফল পেয়েছেন তার হাত ধরে চলাই এখানে বুদ্ধিমান এর কাজ হবে।শুধু সেই ক্রিম এর মধ্যে স্কিনের উত্তেজনা প্রশমিত করার উপাদান প্রশান্তিমূলক উপাদানের সঠিক সংমিশ্রণ আছে কিনা যাচাই করে নেবেন। তাতেই কেল্লা ফতে।