পুজো মানেই আনন্দ, হই হুল্লোর আর কৈলাস থেকে মায়ের বাপের বাড়ি আগমন। কৈলাসের শিব গৃহিণী উমা তার বাপের বাড়ি আসে চারটি দিনের জন্য, ষষ্ঠী,সপ্তমী,অষ্টমী,নবমীর পর দশমীতে বিদায়ের মুহূর্তে তাই মন খারাপ হয়ে যায় যায়। বছরের এই চারটে দিন আনন্দ, মজার পাশাপাশি থাকে কিছু নিয়মকানুন। যে সকল নিয়ম কানুন গুলি ভক্তিভরে পালন করলে মায়ের কৃপা পাওয়া যায়।
দুর্গাপুজোয় একটি নিয়ম আছে যেখানে বলা হয় পুজোর দিন ১০৮ বার একটি বিশেষ নাম লিখতে হয় তাতেই মেলে সমৃদ্ধি শান্তি ও সুখ। কোনদিন কার নাম লিখবেন? কীভাবেই বা পাবেন সুখের সেই ঠিকানা? দুর্গাপুজোর যাবতীয় পালনীয় নিয়ম নীতি সম্পর্কিত তথ্য নিয়েই আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির।
ক. ষষ্ঠীর দিন মায়েরা সন্তানদের কপালে পুজো করা হলুদের ফোঁটা দেয়, সেই থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত মায়ের পুজোর নানাপ্রকার বিধি চলে। শাস্ত্রে বলা হয় যে, পুজোর চার দিন ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত যদি নিরামিষ আহার গ্রহণ করা যায় তাহলে মায়ের আশীর্বাদ পাওয়া যায়। আর যদি মায়ের ভোগ আমিষ হয় ,তাহলে এটি অবশ্যই গ্রহণ করা যেতে পারে।
খ. অপর আরেকটি বিধি অনুযায়ী পুজোর কয়েক দিন যদি প্রত্যহ গঙ্গা স্নান করা যায় তারফলে শরীর ও মনের সুস্থতা বজায় থাকে এবং পাশাপাশি সংসারে সুখ ও শান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি হয়। সংসারের মধ্যে যাবতীয় নেগেটিভ এনার্জি দূরে চলে যায়, পজিটিভ এনার্জির প্রভাব বেড়ে যায়।
গ. পুজোর চার দিন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি ১০৮ বার দেবী দুর্গা মায়ের নাম মনে মনে ভক্তি সহকারে জপ করা যায় তাহলে দেবী দুর্গতিনাশিনী সকল বিপদের হাত থেকে ভক্তকে রক্ষা করেন।
ঘ. পুজোর কয়েকটি দিন পুষ্পাঞ্জলির সাথে মায়ের পুজো দেওয়ার চেষ্টা করুন। সব দিন যদি সম্ভব নাও হয় পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া, তাহলে অন্ততপক্ষে সন্ধি পূজার সময় পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার চেষ্টা করুন। বছরের এক সন্ধিপুজোর উপোস করলে সারা বছরের দুর্গা পুজোর ফল পাওয়া যায়।
এছাড়া পুজোর দিন শাস্ত্রমতে নিষিদ্ধ দুটি কাজ আছে যেগুলি কোন অবস্থাতেই করবেন না। সেগুলি হল-
দুর্গাপুজোর সকল দিনগুলির মধ্যে অষ্টমীর দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই তিথিতে তাই এমন কিছু অবশ্য পালনীয় রীতিনীতি রয়েছে, যা পালন করতে পারলে জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান ঘটবে। জীবনে সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধি আসবে। অষ্টমীর দিন যা যা করবেন-
অষ্টমীর দিন রাত্রে বেলা একটি শুদ্ধ কাপড় পরে একটি নিখুঁত গোটা কলাপাতা নিয়ে নিন। এরপর চন্দন দিয়ে তাতে ১০৮ বার দুর্গা মায়ের নাম লিখুন। তার পরের দিন সকালে কোন প্রবাহিত জলে সেই কলাপাতাটি নিয়ে ভাসিয়ে দিন। ভাসিয়ে দেওয়ার আগে মায়ের নাম স্মরণ করে মাকে প্রণাম করতে ভুলবেন না।
হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয় দুর্গা মায়ের নামের মহিমা এমনই,যে সেই নামের মধ্যে বিঘ্ন বিনাশের মন্ত্র লুকিয়ে আছে। দুর্গা শব্দের অর্থ হলো-
দৈত্যনাশার্থবচনো দকারঃ পরিকীর্তিতঃ।
উকারো বিঘ্ননাশস্য বাচকো বেদসম্মত।।
রেফো রোগঘ্নবচনো গশ্চ পাপঘ্নবাচকঃ।
ভয়শত্রুঘ্নবচনশ্চাকারঃ পরিকীর্তিত।।” এখানে ‘দ’ অক্ষর দৈত্যনাশক,‘উ’ কার অর্থ বিঘ্ননাশক, ‘রেফ’ অর্থ রোগনাশক, ‘গ’ অক্ষর পাপনাশক,আ কার
ভয় ও শত্রু নাশক। অর্থাৎ, দুর্গা শব্দের অর্থ হলো দৈত্য-বিঘ্ন-রোগ-পাপ-ভয় ও শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেন তিনিই দুর্গা।
আবার শব্দকল্পদ্রুম এ বলা হয় যে, “দুর্গং নাশয়তি যা নিত্যং সা দুর্গা বা প্রকীর্তিতা।”- এর অর্থ হলো দুর্গ নামক অসুরকে যিনি বধ করেন, তিনিই দুর্গা। আবার আরেকটি মতে বলা হয় যে, যিনি ভক্তের অশেষ দুর্গতি নাশ করেন তিনিই দুর্গা। শ্রীশ্রীচণ্ডী তে বলা হয়েছে যে, দেবী দুর্গা হলেন ‘নিঃশেষদেবগণশক্তিসমূহমূর্ত্যাঃ’অর্থাৎ দেবী দুর্গাই
সকল দেবতার সম্মিলিত শক্তির প্রতিমূর্তি।
তাই এই মন্ত্র জপে একইসাথে অশুভ শক্তির বিনাশ, বিঘ্ন নাশ, রোগ নাশ, পাপ নাশ, শত্রু নাশ ইত্যাদি হয়। কিন্তু আমাদের কামনা-বাসনা জর্জরিত মানুষের পক্ষে একমনে যে কোনো নাম জপ করা অত্যন্ত দুরূহ একটি কাজ সেক্ষেত্রে আমরা যদি জপ করার পরিবর্তে ১০৮ বার দেবীর নাম লিখি, তাহলে আমাদের মন অন্যদিকে চালিত হওয়ার সুযোগ পায় না। তাই ১০৮ বার দেবীর নাম লেখার কথা বলা হয়েছে।
এর উত্তরে বলা যায় যে, আমাদের সনাতন ধর্মে ১০৮ শব্দটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীকৃষ্ণ, শিব, চন্ডী, গণেশ, সূর্য সর্বাগ্রে পূজিত পঞ্চ দেবদেবীরও ১০৮ টি করে নাম। নারায়ন পুজোতে ১০৮ টি তুলসী পাতা লাগে ও জপের মালা তে ১০৮ টি গুটি থাকে। কেন ১০৮ ঘুরে ফিরে আসছে এর উত্তরে বলা যায় যে ১০৮ শব্দের দ্বারা ব্রহ্ম শব্দকে বোঝানো যায়। ব্রহ্ম শব্দটির অন্তর্গত বর্ণমালার অক্ষরগুলি সংখ্যা যোগ করলে, যোগফল ১০৮ হয়।
হ্যাঁ ব্রহ্ম=ব+র+হ+ম=২৩+২৭+৩৩+২৫=১০৮। এছাড়া দেবনাগরী ভাষায় অর্থাৎ সংস্কৃতে ৫৪ টি অক্ষর ছিল প্রতিটি বর্ণের আবার পুংলিঙ্গ , স্ত্রীলিঙ্গ অর্থাৎ শিব ও শক্তি ছিলো। অর্থাৎ ৫৪*২=১০৮। এছাড়া প্রাচীন মুহূর্ত শাস্ত্র অনুসারে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কে যোগ করলে ১০৮ হয়। কারণ মুহূর্ত শাস্ত্রে রয়েছে অতীত-৩৬, বর্তমান-৩৬, ভবিষ্যত-৩৬। তাই অষ্টমীর দিন দেবীর কৃপা পেতে অতি অবশ্যই এই রীতি পালন করুন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…