মাধ্যমিক পরীক্ষার আর হাতে গোনা মাত্র কয়েকদিনই বাকি আছে। পরীক্ষার চিন্তা তো আছেই, তার সঙ্গে এই চিন্তাতেও আছো নিশ্চয়ই যে এর পর কী নিয়ে পড়বে। বাড়িতে বলছেন সাইন্স নিয়ে পড়তে, আর তুমি চাইছ আর্টস নিয়ে পড়তে। আবার তোমার কিছু বন্ধু বলছে তারা পড়বে কমার্স নিয়ে। কী হল! ঘাবড়ে যাচ্ছ নাকি! আমরা তো আছি তোমায় সাহায্য করার জন্য। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের এই আর্টিকেলটা পড়ে নাও।
আচ্ছা, তোমার কী সাহিত্য পড়তে ভাল লাগে? চোখ বন্ধ করলেই মনে হয় কী যদি একবার অজন্তা-ইলোরার মূর্তিগুলোকে কাছ থেকে দেখা যেত! নাকি তোমার বাড়িতে সামান্য টর্চ খারাপ হয়ে গেলেও তুমি পুরো টর্চ খুলে সেটা ঠিক করার চেষ্টা কর? তোমার খেলনার জায়গায় তো প্লাস্টিকের স্টেথোস্কোপ, খেলনা সিরিঞ্জ এই সব। তাই বলছি, নিজেকে বোঝো, নিজের আগ্রহের জায়গাটা দেখ। তাহলেই দেখবে, কী নিয়ে পড়বে সেটা বেছে নিতে খুব সমস্যা হচ্ছে না।
নিজের পছন্দ বোঝার পরেই আসে এই প্রসঙ্গটি। বাড়িতে বাবা-মা বা আত্মীয়রা বলছেন সায়েন্স নিতে, আবার বন্ধুরা অনেকেই কমার্স নিচ্ছে। কেউ বলবেন সাইন্স ছাড়া গতি নেই, কেউ বলবেন কমার্স পরলে অনেক টাকার চাকরি পাওয়া যায়। আর্টসকেও যে আজকাল খুব একটা হতাশার জায়গায় রেখেছেন সকলে তাও নয়। মনে রাখতে হবে যে, যা কিছুই মন দিয়ে পড় না কেন, সেটাই তোমায় সাহায্য করবে।
এখন আমাদের সবার কাছেই ইন্টারনেটের সুবিধে রয়েছে। তাই আগে দেখে নাও কোন পথে গেলে কোন কোন সম্ভাবনা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা এখানে মোটের উপর একটা আলোচনা করছি।
সাইন্স নিয়ে পড়লে প্রথমেই আমাদের ইচ্ছে থাকে হয় ইঞ্জিনিয়র হব, নয়তো ডাক্তার হব। অনেকে আবার চলে যায় আই.টি সেক্টরে। কিন্তু এর বাইরেও অনেক কিছু করার আছে। গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা এই সব বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে উচ্চশিক্ষার দিকে যেতে পার।
এছাড়া, জীববিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যার মতো বিষয় পাবে যা আজকের দিনে খুবই কাজে লাগে। উদ্ভিদবিদ্যা বা বটানি কিন্তু ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস বা ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিসের জন্য আবশ্যিক। তাই এই পরীক্ষাগুলোতেও বসতে পার। আর উদ্ভিদবিদ্যার পাশাপাশি যদি পরিবেশবিদ্যা থাকে তাহলে হাইড্রোলজিস্ট হিসেবে কাজ করা যায়। হাইড্রোলজি হল মূলত জল নিয়ে, তার সংরক্ষণ নিয়ে গবেষণা।
জীববিদ্যা বা বায়োলজি নিয়ে পড়লে বায়োকেমিস্ট হিসেবে কাজ করা যেতে পারে। বায়োলজি থাকলে কনজারভেসনিস্ট হিসেবে কাজ করা যেতে পারে যেখানে মাটি, জলের মতো প্রাকৃতিক উৎস নিয়ে কাজ করা যায়। এর পাশাপাশি ফরেন্সিক সায়েন্টিস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও কিন্তু করা যায়।
ফুড টেকনোলজির নাম নিশ্চয়ই অনেকের জানা আছে। উচ্চমাধ্যমিকে সাইন্স থাকলে ফুড টেকনোলজি নিয়ে সরাসরি স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়া যায়। আর তারপর যে কোনও বড় খাদ্য প্রস্তুতকারক সংস্থায় যোগ দেওয়া যায়।
আর্টস পিছনের সারির ছেলেমেয়েরা পড়ে এই চিন্তা-ভাবনা এখন কিন্তু আর নেই। আর আর্টস পড়লেই যে শুধু শিক্ষকতার বা অধ্যাপনার কাজই করতে হবে তার কোনও মানে নেই।
ইতিহাসের মতো বিষয় রয়েছে, যা পড়ার পর আরকিওলজি বা প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে পড়া যায়, আরকিওলজিকাল সারভে অফ ইন্ডিয়ায় কাজ করা যায়। এছাড়া ভূগোল বা অর্থনীতির মতো বিষয় নিয়েও তো অনেক কাজ করা যায়।
ভূগোলে স্নাতক হতে চাইলে এখন অনেক কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও গণিত প্রয়োজন হয়। তাই উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ভূগোলের সঙ্গে এই দুটো বিষয় সঙ্গে রাখা খুবই জরুরি।
ভূগোল নিয়ে স্নাতক হওয়ার পরেই তুমি কার্টোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করতে পার যার জন্য স্নাতকোত্তর কোর্স করার দরকার হয় না। কার্টোগ্রাফার হলেন তারাই যারা মানচিত্র তৈরির কাজে যুক্ত থাকেন।
এছাড়া স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পর জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম বা জি. আই.এস অফিসার পদের জন্য আবেদন করা যায়।
এছাড়া আবহাওয়া দফতরেও কিন্তু কাজের সুযোগ রয়েছে। অর্থনীতির ক্ষেত্রেও একই কথা। অর্থনীতি নিয়ে পড়ে শুধু যে পড়াতেই হবে তার কোনও মানে নেই।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে বড় বড় সরকারী ও বেসরকারী ব্যাঙ্কে উচ্চপদে কিন্তু অর্থনীতি পড়া মানুষের কদর বেশি। আর্টসে থেকে অনেকে কিন্তু আইন নিয়েও পড়াশোনা করে। আর আইন নিয়ে পড়ে শুধু যে ওকালতিই করতে হবে তার মানে নেই।
বড় ‘ল’ ফার্মে যোগ দিয়ে কাজ শিখে বড় বড় কোম্পানির আইনগত দিকগুলোর দেখভাল করা যায়। আর এতে টাকাও অনেক বেশি উপার্জন করা যায়।
রান্না করতে ভালবাস? হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়তে চাও? তাহলে কমার্স নিয়ে নাও। এর বাইরেও চার্টার অ্যাকাউন্টেন্ট হতে গেলেও কিন্তু কমার্সই লাগবে।
এছাড়া এমবিএ করে বড় মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিতে উচ্চপদস্থ কর্মচারী হওয়ার সুযোগ তো রইলই। কিন্তু এই সব কিছুর জন্যই আগে তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স বি.কম পড়তে হবে।
বি.কম পড়ার ক্ষেত্রে এখন ব্যাচেলর অফ ব্যাঙ্কিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স ও ব্যাচেলর অফ ফিনান্সিয়াল মারকেটিং এর অপশন থাকে, যেগুলো নিয়ে পড়লে ক্যাম্পাসিং এর পরে লাখ খানেক টাকার চাকরি পাওয়া যায়।
ফিনান্স সঙ্গে থাকলে যে কোনও কোম্পানির ফিনান্স অ্যানালিস্ট, সারটিফায়েড ফিনান্স প্ল্যানার, ফিনান্স ম্যানেজার, ফিনান্স কন্ট্রোলার এই সব পদে অগ্রাধিকার পাওয়া যায়।
বি.কম পড়ার পর যদি তুমি নির্দিষ্ট পেশাভিত্তিক পথে এখনই যেতে না চাও তাহলে রইল এম.কম করার পথ। তাহলে এখন আর কোনও চিন্তা নয়। আমরা তো বলেই দিলাম খানিকটা।
এবার শুধু তোমার ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা। আর সামনের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য দাশবাসের পক্ষ থেকে রইল অনেক শুভেচ্ছা।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…