একটা সময় পর চারিপাশের মানুষগুলির কাছ থেকে একটা প্রশ্ন সব মেয়েকেই শুনতে হয়, আর তা হল বিয়ে কবে করবে, আর একবার যদি বিয়ে হয়ে গেল তাহলে যে প্রশ্নটা আসে সেটা হল বাচ্চা কবে হবে….।
সত্যি বলতে এই প্রশ্নের উত্তর এক একজনের জীবনে এক এক রকমের হয়ে থাকে। কারণ কেরিয়ার, ভবিষ্যত পরিকল্পনা, সময় এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য- ইত্যাদি বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর সন্তান নেওয়া নির্ভর করে।
যদিও বেশিরভাগ মহিলাই কুড়ির দশকে সন্তানের পরিকল্পনা করে থাকে। তবে আসল বিষয়টি হল কোনও মহিলাই কখনও সন্তান ধারণের জন্য পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত থাকে না। কিন্তু বয়স যত বাড়ে মহিলাদের মধ্যে বন্ধাত্ব্যের সমস্যা বাড়তে থাকে, আর ঠিক তখনই প্রশ্ন ওঠে যে, মেয়েদের মা হওয়ার সঠিক বয়স কোনটা? বা সত্যিই কি মেয়েদের মা হওয়ার কোনও বয়স হয়?
কোনও মহিলা যদি ৩৪ বছর বয়সে এসে তাঁর দাম্পত্য জীবনে পা রাখার কথা ভাবেন, তখন সত্যি বলতে তাঁর মধ্যে এক্সাইটমেন্টের থেকে বেশি কাজ করে ভয়। কারণ ভবিষ্যত পরিকল্পনা করা এবং জীবনে থিতু হওয়ার জন্য এই বয়সটা কিন্তু একটু চিন্তার। কারণ এই বয়সে এসে বিয়ে করার পর যখন অবশেষে সন্তান নেওয়ার কথা কেউ ভাবেন, তখন অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, চাইলেও সন্তান ধারণ করতে পারছেন না। মানসিক অবসাদ এবং ওষুধের বিল বাড়তে থাকে এবং মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করে, তাহলে কি ৩০-এর পর সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনাটা খারাপ?
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, সন্তান ধারণের জন্য কোনও বয়সই সঠিক নয়, তবে কিছু সময় (বা বয়স) অন্যান্যাগুলির থেকে বেশি ভাল। অস্টিন ইউনিভার্সিটি এবং টেক্সাসের একজন সমাজবিজ্ঞানীর কথায়, সন্তান ধারণের জন্য কৈশোর বয়স অথবা কুড়ির দশক জৈবিকভাবে সেরা বয়স। এর কারণ হল এই সময়ে শরীরের প্রজনন ক্ষমতা এবং অন্যান্য সমস্ত সিস্টেমগুলি সবচেয়ে ভাল অবস্থায় থাকে। কিন্তু আজকের পরিস্থিতিতে যেখানে পরিবার ছোট (নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি), মহিলারা চাকরি করেন, সেখানে তাড়াতাড়া সন্তান নেওয়াটা মহিলাদের পক্ষে একটু অসুবিধাজনক।
আমেরিকান কলেজ অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্ট (American College of Obstetricians and Gynaecologists)-এর মতে, একজন মহিলার জন্মের সময় তাঁর শরীরে সমস্ত ডিম্বাণু নিয়েই জন্মায়, সংখ্যাটা প্রায় এক থেকে দুই মিলিয়ন। খুব স্বাভাবিকভাবে একজন মহিলার ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়সের কারণে এই সংখ্যাটা হ্রাস পায়।
একজন মহিলা তাঁর ঋতু চলাকালীন যেকোনও সময়েই মা হতে পারেন, কিন্তু তাঁর ফার্টিলিটি কমতে শুরু করে ৩২ বছর বয়স থেকে। আর এই প্রক্রিয়াটা আরও দ্রুততর হয়, যখন সে ৩৭ বছর বয়সে পৌঁছে যায়।
অন্যদিকে কৈশোর এমন একটা সময়, যখন একজন মেয়ের শরীর গর্ভধারণের জন্য একেবারে উপযুক্ত হয়। তবে কেবল শরীরই প্রস্তুত, অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় নয়। তবে ২০ বছর বয়েসের শেষের দিকে একজন মেয়ে গর্ভধারণের জন্য শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারেন।
জার্নাল হিউম্যান রিপ্রোডাকশন-এ প্রকাশিত আর একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ৩০-এর শেষে তথা ৪০-এর শুরুর সময় এসে একজন মহিলার সন্তানধারণ ক্ষমতা ৫০ শতাংশ কমে যায়।
অনেকে হয়ত ৩০-এর দশকে পৌঁছে সুস্থ স্বাভাবির সন্তানের জন্ম দেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে অনেকেরই আবার মৃত সন্তান প্রসব করা বা ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত সন্তানের জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, দেরি করে সন্তান নেওয়া হলে মহিলাদের মধ্যে প্রিক্ল্যাম্পসিয়া, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, প্রিটার্ম বার্থ বা নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তানের জন্ম হতে পারে।
তবে প্রযুক্তিতে অগ্রগতির সাথে সাথে আপনার বয়স বেশি হলেও স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা এবং একটি সুস্থ স্বাভাবিক সন্তান পাওয়া সহজ হয়ে গিয়েছে। ৩০-এর দশকের শেষের দিকে যেসব মহিলারা সন্তান নেন তাদের একটা সুবিধা হ’ল কম বয়সী মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া সন্তানের চেয়ে বেশি বয়সে এসে সন্তান জন্ম হলে সেই সন্তানের বুদ্ধিমান হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি।
বয়স বেশি যেসব মহিলারা, তাঁদের শিক্ষা, আর্থিক ক্ষমতা সবই বেশি থাকে, যার ফলে শিশুরা উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ লাভ করে, যার ফলে সেইসব শিশুরা একটু বেশি স্মার্ট হয় বলে জানাচ্ছে গবেষণা।
৩০ বা তারও পরে সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত কোনও ভুল নয়। কেবল মনে রাখা দরকার আপনাকে সম্ভাব্য জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে। এটা মাথায় থাকলে তা আসন্ন সন্তানের জন্য আপনাকে প্রস্তুত করবে এতে যুদ্ধটা আর একটু সহজ হবে।
এরজন মহিলার যতদিন না পর্যন্ত মেনোপজ হচ্ছে ততদিন তিনি সন্তান ধারণে সক্ষম। মেনোপজ সাধারণ ৫০ বছরের কিছু আগে-পরে শুরু হয়ে থাকে। তা যদি না হয়, তাহলে তখনও সন্তানধারণ করা সম্ভব।
প্রযুক্তির অগ্রগতিতে আজকাল ৪০-এর শেষ এমনকি ৫০-এর বেশি বয়স্করাও মা হচ্ছেন। কারণ একটি শিশুকে গর্ভে ধারণ করা এবং তাকে বহন করা দুটি বিষয় কিন্তু আলাদা। এই বয়সে এসে গর্ভধারণ করা কোনও রসিকতা নয় তবে একজন আইভিএফ বা ডোনর এগস-এর সাহায্যে গর্ভবতী হতে পারেন। তবে এর জন্য, আপনার জরায়ুটি স্বাস্থ্যকর এবং শিশু বহন করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন।
সন্তান ধারণ করা একজন মহিলার জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আর এই নিয়ে চিন্তাভাবনা করা অবশ্যই প্রয়োজন যে তাঁর জীবনে তাঁর জন্য কোন সময়টি সন্তান ধারণের জন্য সঠিক।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…