ওজন কম করার কথা যারা ভাবছেন তারা অবশ্যই আজকের এই লেখাটি মন দিয়ে পড়ুন। কেন না ওজন কমানো খুব সহজ ব্যাপার নয়। তাই বলে এমন কঠিনও নয়। শুধু এক্সাসাইজ করে বা খাওয়া কন্ট্রোল করে ওজন কম করা যায় না। কি কারনে ওজন বাড়ছে তা না জানলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই সঠিক কারন জানা আগে জরুরি।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত খাওয়া ছাড়া আর কি কি কারনে ওজন বাড়ে। আর সেক্ষেত্রে ওজন কম করার জন্য কি কি করনীয়।
আমাদের অনেকেরই ধারণা রয়েছে যে অতিরিক্ত খাবার ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। হ্যাঁ তা ঠিক কিন্তু তা একমাত্র কারণ নয়।
ওজন বেড়ে গিয়ে মোটা হয়ে যাওয়ার সমস্যা অনেক সময় জিনগত হয়। অর্থাৎ পারিবারিক সমস্যা।
থাইরয়েড থাকার কারণে অনেকের ওজন আচমকা বেড়ে যায়। থাইরয়েড হলে যেমন অনেকে রোগা হয়ে যান। আবার অনেকের ওজন বেড়ে গিয়ে মোটাও হন।
ইউরিক অ্যাসিডের বৃদ্ধি হলে অনেক সময় ওজন বাড়ে।
সারাদিন যাদের বসে বসে কাজ তাদের ক্যালরি বার্ন হয় না সঠিক ভাবে। ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বাইরের খাওয়ার কিন্তু সাংঘাতিক ভাবে ওজন বাড়িয়ে দেয় নিমেষে।
যারা ভাবেন খাওয়ার পরিমান কমিয়ে ওজন কমাবেন তারা খুবই ভুল ভাবেন। এতে শরীর ভেঙে যায়।
ওজন কমানোর জন্য কিছু করবেন না এরকম তো হয় না। কিছু না কিছু আপনাদের করতেই হবে।
অতিরিক্ত চর্বি গলানোর জন্য রোজ সকাল বিকেল হাঁটুন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করুন।
আমরা তো একটা কথা অনেকবারই শুনে থাকি। যদি আমরা ফিট থাকতে চাই তাহলে কম খেতে হবে আর বেশি কাজ করতে হবে। কিন্তু সেটা কী সব সময়ে সম্ভব? জানি নয়।
অনেকে বলেন আপনি সপ্তাহে দু দিন আপনার রোজের ক্যালোরির থেকে কম খান। অর্থাৎ পাঁচ দিন যা খাচ্ছেন বাকি দু দিন তার তুলনায় একটু নিয়ম করুন। এটা হয়ত কাজ দেয়, কিন্তু রোজের নিয়ম মানার একটা আলাদাই গুরুত্ব আছে।
আজ তাই আপনাদের জানাবো আপনি রোজ এই নয়টি নিয়ম মানুন আর সুন্দর করে নিজের ওজন কমিয়ে আনুন সহজেই মাত্র ৬ সপ্তাহে।
যদি ওজন কমাতে চান তাহলে অ্যালকোহলকে বিদায় জানান। জানেন কী, আপনার প্রিয় অ্যালকোহলে আছে সুগার, যা সমান ইনসুলিন তৈরি করবে আর আপনাকে মোটা করে দেবে। ক্যালোরি বাড়ার প্রবণতাও কিন্তু বেড়ে যাবে। তাই আপনার প্রিয় মোজিটো বা অন্য মদকে বাদ দিন আর সঙ্গে লিভারকেও খানিক শান্তি দিন। জানি গরমে খানিক চিল্ড বিয়ার খেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু এখন আর নয়। আর যদি একান্তই না পারেন তাহলে হোয়াইট ওয়াইন খান, তাও এক পেগ।
ওজন কমাতে গেলে কার্বোহাইড্রেট ছেড়ে দেওয়াই ভালো কাজ। আর আমরা বাঙালিরা ভাত ছাড়া তো থাকতেই পারি না। কিন্তু এটা করলে হবে না। আমাদের কার্বোহাইড্রেটের উপাদান যেমন রাইস বা আটা সবই এতো করে রিফাইন্ড করা হয় যা সেগুলো তারপর খেলে আমাদের মধ্যে ইনসুলিন বেশি তৈরি হয় আর ফ্যাট জমে। তার থেকে বরং রিফাইন্ড না করা কার্বোহাইড্রেট উপাদান, যেমন জাম্বো ওট, ব্রাউন রাইস, স্টোন গ্রাউন্ড হোলমিল রুটি খান। দেখবেন খানিক ফিট থাকছেন।
কী, ব্যাপারটা বুঝলেন না, তাই তো? বুঝিয়ে বলছি। দেখুন ফ্যাট, সুগার এই সবই তো আমাদের শরীরের জন্য দরকার। কিন্তু গবেষণা বলছে যে এমন খাবার যদি আমরা খাই, যা আমাদের ফ্যাট আর সুগারের অনুপাত ওই ৫০:৫০ রাখে, সেই খাবার কিন্তু আমাদের খুব ক্ষতি করে। আমাদের মেকানিজম দুর্বল করে দেয়। আমাদের শরীরের ব্যালান্স আর থাকে না। তাই চিজকেক, ফাজ, ব্রাউনি এইসব এখন বন্ধ রাখুন আর নিজেকে স্লিম হিসেবে ধরে রাখুন।
আমাদের মধ্যে অনেকেরই ইটালিয়ান খুব প্রিয়। আর ইটালিয়ান মানেই পাস্তা, পিৎজা এইসব। আর আপনার সাধের পাস্তা তো চিজ ছাড়া ভালো হবেই না। অর্থাৎ আবারও শরীরে জমবে ফ্যাট। কিন্তু এই ৬ সপ্তাহ আপনাকে ইটালিয়ান খাবারকে একদম বাদ দিতে হবে আর খেতে হবে বেশি করে সবজি, ফল, হোল গ্রেইন। রান্না অলিভ অয়েলে হলে ভালো।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ওজন কমাতে গেলে কিন্তু স্যুপের উপর ভরসা করতেই হবে। স্যুপ আপনার খিদে অনেকটা কমিয়ে দেবে কারণ এটি সলিড আর লিকুইড এই দুই ধরণের মিশ্রণ। আর খাবার আগে এটি খেলে অনেকটা খাবার আর খেতে হয় না। তখন কার্বোহাইড্রেট এমনিতেই অনেক কম খাওয়া যায়। এভাবে কিন্তু ২০% ক্যালোরি আপনি কম নিতে পারেন।
ফিট থাকার জন্য কিন্তু আপনাকে আপনার প্লেট ঠিক এভাবে সাজাতে হবে- সবজি, কার্বোহাইড্রেট আর মাংস। আপনি মাংস ততটাই নিন যতটা শুধু প্রোটিনের জন্য দরকার। এরপর আসুন কম কার্বোহাইড্রেটে আর সবচেয়ে বেশি সবজিতে। থালায় যেন অর্ধেক সবজি আর বাকি অর্ধেকের খানিক কার্বোহাইড্রেট আর খানিক মাংস থাকে। তাহলেই দেখবেন কী সুন্দর আপনি ঝরঝরে থাকছেন।
এইটা কিন্তু একদম মোক্ষম কথা। জমিয়ে বড় থালায় বসে খেলে পেটটিও বড় হতে থাকবে। তাই থালা ছাড়ুন। আপনি থালার মধ্যেই প্লেটের মাপের খাবার নিন। এটার কিন্তু আরেকটা মানেও আছে। একবারে অনেকটা খাবেন না, বারে বারে কম কম খান। তাহলেই দেখবেন অনায়াসে ক্যালোরি কম ঢুকবে আপনার শরীরে।
আশ্চর্য হবেন না। অনেকে ডায়েট করতে গিয়ে ফলের রস খান। আর বেশির ভাগই দোকানের ফলের রস খান। তাতে রস কম, চিনি থাকে বেশি। তাই লাভ কিছু হয় না। আর ঘরে বানালেও মনে রাখতে হবে, ফলের পুষ্টিগুণ কিন্তু থাকে রসের থেকেও বেশি ফলের স্কিনে। আর ফাইবারও তো থাকে না রসে। তাই ফল চিবিয়ে খান। সেটা বেশি লাভের হবে। আর গরমে তো তরমুজ, লিচুর মতো অনেক ফল পাওয়া যায়।
পরিমিত চা বা কফি খাওয়া খারাপ নয়। কিন্তু তার মধ্যে দুধ আর চিনি দিয়ে খাওয়া আপনার ক্যালোরি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। তাই এই ৬ সপ্তাহ এই দুধ আর চিনি বাদ দিন আর ব্ল্যাক কফি, গ্রিন টি, হার্ব টি তে চলে আসুন। ৬ সপ্তাহ পর দেখবেন আপনার আর দুধ-চা খেতে ইচ্ছেই করছে না। এতে বরং আখেরে লাভই হবে।
সময় নেই, কখন করবো এসব নিজেকে দেওয়া বাহানা মাত্র। সকাল ও সন্ধ্যাবেলায় রোজ ৩০ মিনিট করে যোগা করুন দেখবেন অল্প অল্প করে মেদ ঝড়তে শুরু করেছে। ফিট থাকার জন্য যোগা ভীষণ কার্যকরী। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে প্রথমে ১৫ মিনিট যোগা করুন আস্তে আস্তে সময় বাড়ান। আর সন্ধ্যাবেলায় যদি সময় না পান রাতে করুন। কয়েকমাসেই বদল দেখতে পারবেন।
এবার কিন্তু ওজন কমানো আর খুব কঠিন নয়। শুধু একটু নিয়ম আর নিজেকে ধরে রাখা। সঙ্গে প্রচুর জল খান। তারপর আপনার ফিটনেসে মুগ্ধ হবেন আপনিও। আর একবার নিজেকে ফিট দেখতে শুরু করলে কথা দিলাম আপনি নিজেই এটা চালিয়ে যাবেন। শরীরকে ভালো ও সুস্থ রাখার জন্য অতিরিক্ত ওজন কমানো খুবই জরুরি।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…