ভগবান বিষ্ণু যুগে যুগে নানা অবতার রূপ নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছেন। গরুড় পুরাণে বিষ্ণুর দশ অবতারের কথা উল্লেখ করা আছে। এ নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। কোথাও আবার লেখা আছে বিষ্ণুর ২২টি অবতার রয়েছে, কোথাও বা অগণিত সংখ্যার কথা বলা হয়।
নানা মুনির নানা কথা সাইডে রেখে যদি দেখা যায় তাহলে সাধারণত বিষ্ণুর দশাবতারের মান্যতা বেশি। তাই আজ আমরা জেনে নেব এই দশটি অবতার সম্পর্কে। কি নাম? রূপ কি? কেন আবির্ভূত হয়েছিলেন অবতার হিসেবে ইত্যাদি।
মৎস্য ভগবান বিষ্ণুর প্রথম অবতার রূপ। এই অবতার রূপে সত্যযুগে বিষ্ণুর আবির্ভাব। পুরাণ অনুযায়ী পৃথিবীর প্রথম মানুষ মনুকে এক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে মৎস্য রূপে বিষ্ণু আবির্ভূত হন। শরীরের উপরের অংশ পুরুষ মানুষের মত কিন্তু নীচের অংশ মাছের মত।
কূর্ম ভগবান বিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার। সত্যযুগে এই অবতার রূপে বিষ্ণু আবির্ভূত হন। পুরাণে বলা হয় সমুদ্রমন্থনের সময়, মন্থন কালে মন্দর পর্বত সমুদ্রের নীচে ডুকে যাচ্ছিল। তাই সেই সময় বিষ্ণু কূর্ম অবতার অর্থাৎ কচ্চপের রূপে আবির্ভূত হয়ে পর্বত তাঁর পৃষ্ঠে ধারণ করেন। যার ফলে অমৃত প্রাপ্তি সম্পূর্ণ হয়।
বন্য শূকরের রূপ ধারণ করেছিলেন ভগবান বিষ্ণু। এটি তাঁর তৃতীয় অবতার। বরাহ অবতারে তিনি সত্য যুগে আবির্ভূত হন। পুরাণ মতে পৃথিবীকে হিরণ্যাক্ষ নামক মহাশক্তিশালী অসুরের হাত থেকে রক্ষা করতে এই অবতার রূপে বিষ্ণু আসেন। অসুর পৃথিবীকে মহাজাগতিক সমুদ্রের নীচে লুকিয়ে রেখেছিলেন। বরাহ রুপী বিষ্ণু হিরণ্যাক্ষের সাথে ক্রমাগত হাজার বছর যুদ্ধ করে তাকে পরাজিত করেন ও মারেন। তারপর পৃথিবীকে মহাজাগতিক সমুদ্রের নীচ থেকে তুলে আনেন। প্রলয়ের পর পৃথিবীর নতুন জন্মের প্রতীক মানা হয় বরাহ অবতারকে।
চতুর্থ অবতারের নাম নৃসিংহ অবতার, অনেকে নরসিংহ বলে থাকেন। অর্ধেক মানব ও অর্ধেক সিংহ। সত্যযুগে অবতীর্ণ হয় এই অবতার। দেহ মানুষের মত কিন্তু মাথা সিংহের মত। রাক্ষস হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণু ভক্ত। হিরণ্যকশিপু ছিলেন বিষ্ণু বিরোধী। কারন তাঁর ভাই হিরণ্যাক্ষকে বধ করেছিলেন বিষ্ণু বরাহ রূপে। হিরণ্যকশিপু তাঁর পুত্র প্রহ্লাদকে বিষ্ণুর ভক্ত হওয়ার সাজা স্বরূপ বধ করতে চাইলে শেষমেশ নৃসিংহ অবতারে বিষ্ণু অবতীর্ণ হন। তিনি বধ করেন হিরণ্যকশিপুক।
বামন রূপে ভগবান বিষ্ণু ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ হন। এটি তাঁর পঞ্চম অবতার। অসুর বলিকে দমনের উদ্দেশ্যে বামন অবতার রূপে বিষ্ণু জন্ম নেন। অসুর অধিপতি বলে একটি যজ্ঞয়ের আয়োজন করলে বামন সেখানে হাজির হয়ে তিন পা রাখার মত জমি চান। বলি বামনকে জমি দিতে রাজি হয়ে যান। সেই সময় বামন তাঁর দেহ বর্ধিত করে বিশালাকার বিষ্ণু রূপ ধারণ করেন। স্বর্গ ও মর্ত জুড়ে দু পা রাখেন। আর তাঁর পেট চিরে বেরিয়ে আসা একপা রাখার জায়গা চাইলে বলি তাঁর মাথা পেতে দেন টা রাখার জন্য। তৃতীয় পা বলির মাথায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে সে বিষ্ণুর নাম নিয়ে স্তব করতে থাকেন। এমন সময় বিষ্ণু ভক্ত প্রহ্লাদ এসে বলির মুক্তি চান অনুরোধের সাথে। তাছাড়া বলি তাঁর কথা রাখার জন্য কষ্ট সহ্য করায় বিষ্ণু তাকে মুক্ত করেন।
পরশুরাম বিষ্ণুর ষষ্ট অবতার। ত্রেতা ও দ্বাপর যুগ মিলিয়ে তিনি ছিলেন। পরশুরাম ছিলেন ব্রাহ্মণ জমদগ্নি ও ক্ষত্রিয় রেনুকার পুত্র। পরশুরাম কঠোর তপস্যা করে শিবের থেকে যুদ্ধ বিদ্যা শেখেন। প্রথম যোদ্ধা সন্ত ছিলেন তিনি। পুরাণে বলা আছে সমুদ্রের হাত থেকে তিনি মালাবার ও কোঙ্কণ রক্ষা করেন।
রাম ছিলেন সপ্তম অবতার। ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ হন তিনি। রাম লঙ্কাধিপতি রাবণের বধ করে স্ত্রী সীতাকে রাবণের হাত থেকে মুক্ত করেছিলেন। রামায়ণ সম্পর্কে আমাদের সবার জানা। আলাদা করে আর কিছু এতে লেখার নেই।
দ্বাপর যুগে অন্যায়ের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে কৃষ্ণের আবির্ভাব। বিষ্ণুর অষ্টম অবতার বলে মানা হয় তাকে। কৃষ্ণের ভ্রাতা বলরামকেও অনেকে বিষ্ণু অবতার বলে মনে করেন। এই নিয়ে বহু মতভেদ আছে। ভগবত গীতা অনুসারে অষ্টম অবতার বলরামকে মনে করা হয়। কারন ভগবত গীতা অনুযায়ী কৃষ্ণ স্বয়ং ঈশ্বর কোন অবতার নয়।
গৌতম বুদ্ধকে বিষ্ণুর নবম অবতার মনে করা হয়। কলিযুগে অবতীর্ণ হন তিনি। এই অবতার নিয়ে নানা মতভেদ আছে। তবে বুদ্ধকে মহারাষ্ট্রে ও গোয়ায় বিভিন্ন মন্দিরে বিঠোবা বিষ্ণুর নবম অবতার হিসেবে মানা হয়। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বুদ্ধকে বিষ্ণুর নবম অবতার জগন্নাথ রূপে পূজা করা হয়।
বিষ্ণুর দশাবতারের সর্বশেষ অবতার কল্কি। কলি যুগের শেষে তাঁর আবির্ভাব হবে বলে মনে করা হয়। পুরাণ মতে সাদা ঘোড়ায় তলোয়ার হাতে আবির্ভূত হবেন বিষ্ণু কল্কি রূপে। তিনি কলিযুগের অবসান ঘটিয়ে সত্যযুগের সূচনা করবেন পুনরায়।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…