আজকালকার দিনে রান্নায় আর সেই স্বাদ পাওয়া যায় না, তাই আগেকার দিনের সাবেকি পদের কথা বারবার উঠে আসে। ঠাকুমা দিদিমাদের রান্নার মন্ত্রগুলি জানা হয়ে গেলে যে কোন রান্নায় ঐতিহ্যবাহী সাবেকি রান্না হয়ে উঠতে পারে। ঠাকুমা-দিদিমাদের করা একাধিক রান্নার মধ্যে মুড়িঘন্ট অন্যতম, তবে তারা শুধু মাছের মাথা দিয়েই মুড়িঘণ্ট করতেননা, এর পাশাপাশি থোড় দিয়েও খুব সুস্বাদু ভাবে মুড়িঘন্ট বানাতেন।
আজকালকার দিনের অনেকেই এই থোড় মুড়িঘন্টের কথা জানেন না,আবার মাছের মাথা দিয়ে মুড়িঘণ্ট করলেও আগেকার দিনের স্বাদ পাওয়া যায় না,তাই আজ আপনাদের মুশকিল আসান করতে ঠাকুমা দিদিমাদের করা রুই মাছের মাথা দিয়ে মুড়িঘণ্ট ও থোড় মুড়িঘন্টের রেসিপি নিয়ে দাশবাস হাজির।
আজ প্রথমে আপনাদের রুই মাছের মাথা দিয়ে মুড়ি ঘন্টের সাবেকি রেসিপি বলবো।
রুই মাছের মাথা দিয়ে মুড়ি ঘন্ট বানাতে গেলে লাগবে-
একটি পাত্রে গোবিন্দভোগ চাল জলে ভিজিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ তারপর সেটি জল ঝরিয়ে আলাদা একটি পাত্রে তুলে রাখুন। অনেকে আবার গোবিন্দভোগ চালের বদলে কামিনীভোগ চালও ব্যবহার করে থাকেন। ডুমো করে কেটে রাখা আলু অন্যদিকের কড়াইতে সরষের তেল দিয়ে লাল করে ভেজে নিন ও আগে থেকে তেল হলুদ মাখিয়ে রাখা রুই মাছের মাথা ও ভেজে নিন কড়াইতে।( এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো আগেকার দিনের ঠাকুমা দিদিমারা মাছ ভাজা তেলেই পুরো রান্নাটি করতেন, আপনি চাইলে সেই ট্রিক্সটিও ফলো করতে পারেন)
আগেকার দিনের ঠাকুমা, দিদিমারা মুড়োঘন্টের পুরো রান্নাটিই অনেকসময় ঘি দিয়ে করতেন, অথবা সরষের তেল ও ঘি মিশিয়ে দিয়ে করতেন কিন্তু আমরা স্বাস্থ্যরক্ষার কথা ভেবে সাদা তেল আর ঘি মিশিয়ে করবো। তবে আপনি চাইলে ঘি ও সরষের তেল মিশিয়ে দিয়েও রান্নাটি করতে পারেন।
একটি কড়াইয়ে পরিমাণ মত সাদা তেল নিন, তারপর সাদা তেল গরম হয়ে গেলে তাতে গোটা জিরে ফোড়ন দিয়ে দিন। এরপর এই কড়াইয়ের মধ্যে এক চামচ ঘি মিশিয়ে দিন। তার মধ্যে দুটো তেজপাতা ছিঁড়ে দিয়ে দিন। এই কড়াইয়ের মধ্যে এইবার পেঁয়াজকুচি দিয়ে দিন, এরপর কড়াইতে একটি খুন্তি দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। কড়াইতে পেঁয়াজ বাদামি রঙের হয়ে যাওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন।
এরপর আগে থেকে ভেজে রাখা পেঁয়াজ বাটা , আদা বাটা ও রসুন বাটা কড়াইতে দিয়ে দিন ও বেশ কিছুক্ষণ নাড়তে থাকুন ও ভালো মত কষে নিন। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো আগেকার দিনের ঠাকুমা, দিদিমারা কোনো কিছু বাটার ক্ষেত্রে মিক্সি ব্যবহার করতেন না, তারা শিলে করে বাটনা বাটতেন আর শিলে করে বাটার ফলে রান্নার স্বাদ অনেক বেশি বেড়ে যেতো, তাই আপনি চাইলে এই ট্রিকসটি ফলো করতে পারেন।
এরপর আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা গোবিন্দভোগ চাল কড়াইতে দিয়ে দিন ও নাড়াচাড়া করে ভাজতে থাকুন। চালটা মশলার সাথে ভাজা হয়ে গেলে একটু পরে এর মধ্যে আন্দাজমতো লঙ্কা গুঁড়ো ও হলুদ গুঁড়ো দিয়ে দিন। এইবার সবটা মিশিয়ে নাড়াচাড়া করে নিন। চালের দ্বিগুণের একটু কম করে জল দিন ( ২০০ গ্রাম চালের ক্ষেত্রে ৩৫০ জল দেবেন, ৪০০ গ্রাম চাল নিলে দ্বিগুনের একটু কম জল নেবেন)।
এবার এতে আগে থেকে ভেজে রাখা মাছের মাথা ও আলু দিয়ে দিন ( আপনি চাইলে সুগার পেশেন্টের কথা ভেবে আলুটি বাদও দিতে পারেন)। চালের সাথে মাছটা সিদ্ধ হতে দিয়ে দিন এরপর এতে পরিমাণমতো নুন আর চিনি দিয়ে গ্যাসটা কমিয়ে একটা ঢাকা চাপা দিয়ে রেখে দিন। দশ মিনিটের জন্য চাপা দিয়ে রাখুন।
দশ মিনিট পর ঢাকাটা খুলে মাছের মাথাটা ভেঙে দিন। এরপর কড়াইতে কড়াইশুঁটি, কাজু কিসমিস, গরম মশলা গুঁড়ো আর অল্প ঘি দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিন। এরপর মিনিট তিনেক স্ট্যান্ডিং টাইমে রেখে গরম গরম পরিবেশন করুন রুই মাছের মুড়ো ঘন্ট।
থোড়ের মুড়িঘন্ট করবার জন্য যে উপকরণগুলি লাগবে, সেগুলি হল
প্রথমে থোড়গুলোকে আলু ভাজা সাইজে কেটে নিয়ে একটি পাত্রে সামান্য জলে রেখে দিন কিছুক্ষণের জন্য। তারপর প্রেসার কুকারে নুন, হলুদ ও থোড় দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। দুটো সিটি বাজলে নামিয়ে নেবেন। অন্য একটি পাত্রে গোবিন্দভোগ চাল অল্প জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। (পরে কড়াইতে দেওয়ার সময় জল ঝরিয়ে দেবেন)
কড়াইয়ে সামান্য ঘি ও সরষের তেল দিয়ে আগে থেকে কেটে রাখা আলু নুন ,হলুদ মাখিয়ে দিয়ে দিন ও লাল করে ভেজে তুলুন।
এরপর কড়াইতে একটু ঘি দিন ও তারমধ্যে শুকনো লঙ্কা , তেজপাতা , জিরে বাটা ও
জল ঝরানোর গোবিন্দভোগ চাল দিয়ে দিন। তারপর নাড়তে থাকুন। খুব সুন্দর একটা সুগন্ধ বের হলে এর মধ্যে আগে থেকে ভেজে রাখা আলু ও সিদ্ধ থোড় দিয়ে দিন ও আবার নাড়াচাড়া করতে থাকুন। এর মধ্যে নুন, হলুদ, সবজি মশলা ও লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। প্রয়োজন বোধ হলে অল্প জলের ছিটে দিয়ে ভালো করে কষুন।
সবশুদ্ধ ভালোমতো কষা হয়ে গেলে অল্প জল দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে দিন। এরকম অবস্থায় মিনিট কয়েক রেখে দিন ও সবশুদ্ধ ফুটতে দিন। এরপর কয়েক মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখুন। চাল সিদ্ধ হয়ে এলে এর মধ্যে চিনি ও গরম মশলা গুঁড়ো দিয়ে দিন। নামানোর আগে একটু ঘি ছড়িয়ে নেবেন। ব্যস আপনার থোড়ের মুড়িঘন্ট রেডি, গরম গরম পরিবেশন করুন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…