দুধ আমাদের জীবনে একটা অত্যন্ত জরুরি খাদ্য। দুধ খেতে ভালো না লাগলেও ছোটবেলায় মায়ের চাপে পড়ে আমরা সবাই কমবেশি দুধ খেতে বাধ্য হয়েছি। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য তো দুধ খুবই প্রয়োজনীয় একটা খাদ্য। দুধ না খেলে শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে যায়।
ফলে খুব কম বয়সেই বাত ও অন্যান্য নানা রোগ দেখা দেয়। ভারত সারা পৃথিবীতে দুধ উৎপাদনে প্রথম স্থানে আছে, গোটা পৃথিবীর দুধ উৎপাদনের প্রায় ১৮ শতাংশের যোগান সে একাই দেয়। কিন্তু আপনি কি জানেন যে ভারতে উৎপন্ন মোট দুধের অন্তত ৬০ শতাংশতেই ভেজাল থাকে! বাড়িতে আপনি দুধ আনছেন, বাচ্চাকে বা বাড়ির বয়স্ক অসুস্থ্য কোনো মানুষকে দুধ খেতে দিচ্ছেন। কিন্তু উপকারী, পুষ্টিকর ভেবে যে দুধ খাচ্ছেন, সেই দুধেও মেশানো থাকে নানারকম ক্ষতিকর পদার্থ। দুধে ভেজাল দেবার জন্য জল, স্টার্চ, ইউরিয়া, ডিটারজেন্টের গুঁড়ো ইত্যাদি মেশানোর কথা তো হরদমই শোনা যায়। কিছুদিন আগেও পশ্চিমবঙ্গেই নামকরা এক দুধ উৎপাদনকারী সংস্থা ভেজাল দুধ বিক্রি করতে গিয়ে ধরাও পড়েছিল। ভেজাল দুধের রমরমা ঠেকানোর জন্য সরকার থেকে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই প্রায় হয়নি বলতে গেলে! এই পরিস্থিতিতে যদি ভেজাল দুধ খাওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে চান, তাহলে জেনে নিন ভেজাল দুধ চেনার সহজ কয়েকটি উপায়।
দুধে ভেজাল দেবার সবথেকে সহজ উপায় হল দুধে জল মেশানো। চকচকে ঢালু জায়গায় এক ফোঁটা দুধ ফেলে দেখুন। যদি দুধের ফোঁটাটি আস্তে আস্তে গড়াতে থাকে, এবং পেছনে একটি সাদা রেখা তৈরি করে, তাহলে বুঝবেন দুধে জল মেশানো নেই, অর্থাৎ দুধ খাঁটি। অন্যদিকে যদি দেখেন যে দুধের ফোঁটাটি কোনো রেখা ছাড়াই ঢালু জায়গা দিয়ে তাড়াতাড়ি গড়াতে শুরু করল, তাহলে বুঝবেন সেই দুধে জল মেশানো আছে।
দুধে ডিটারজেন্ট পাওডার মেশানোর খবর আমরা মাঝেমাঝেই টিভিতে পেয়ে থাকি। দুধে ডিটারজেন্ট আছে কিনা তা জানার জন্য দুধের পাত্র থেকে ৫-১০ মিলি দুধ ও সমপরিমাণ জল নিয়ে ভালো করে ঝাঁকান। যদি ফেনা তৈরি হয়, তাহলে বুঝবেন দুধে ডিটারজেন্টের গুঁড়ো মেশানো আছে।
দুধে ভেজাল দেবার জন্য অনেকসময় স্টার্চও মেশানো হয়। দুধে স্টার্চ মেশানো আছে কিনা তা জানার জন্য সামান্য পরিমাণ আয়োডিনের দ্রবণ দুধের মধ্যে ফেলে দিন। বা আপনি এই পরীক্ষাটি করার জন্য দুধে নুনও মেশাতে পারেন। কারণ নুনেও আয়োডিন থাকে। আয়োডিন স্টার্চের সাথে বিক্রিয়া করে নীল রঙের হয়ে যায়। তাই নুন বা আয়োডিনের দ্রবণ মেশানোর পর দুধ যদি নীল হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন সেই দুধে স্টার্চ মেশানো আছে।
দুধে ভেজাল দেবার একটা সহজ উপায় হল ইউরিয়া মেশানো। অন্যান্য জিনিস দিয়ে দুধে ভেজাল দেয়া হলে দুধের রঙ বা স্বাদ খুব সামান্য হলেও পালটে যায়। কিন্তু ইউরিয়া মেশালে দুধের স্বাদ বা রঙ কোনটারই তফাৎ বোঝা যায় না। এছাড়া ইউরিয়া মেশানো দুধ পরীক্ষা করে দেখাও একটু কঠিন। দুধে ইউরিয়া মেশানো আছে কিনা দেখার জন্য হাফ চামচ দুধ একটি টেস্টটিউবে নিন। এবার ওতে এক চামচ সয়াবিন বা অড়হর ডালের গুঁড়ো মেশান ও মিশ্রণটিকে ভালো করে ঝাঁকান। ৫ মিনিট মিশ্রণটি রাখার পর ওতে এবার একটি লাল লিটমাস কাগজ ফেলুন। লিটমাস কাগজের রঙ যদি লাল থেকে নীল হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন যে দুধে ইউরিয়া মেশানো আছে।
এছাড়াও দুধে ভেজাল হিসেবে ফরমালিন, ডালডা বা বনস্পতি ইত্যাদিও মেশানো হয়ে থাকে।
তবে ওগুলি চেনার জন্য পরীক্ষা আমাদের বাড়িতে বসে না করাই ভালো। কারণ ওই পরীক্ষাগুলি করার জন্য সালফিউরিক অ্যাসিড ও নানারকম জিনিসের দরকার হয়।
তাছাড়া আপনি যদি ভেজাল বা ‘সিনথেটিক’ দুধ সহজে চিনতে চান, তাহলে দুধের গন্ধ ভালো করে শুঁকে দেখে নিন। সিনথেটিক দুধে নানারকম রাসায়নিক জিনিস মেশানো থাকে, ফলে খাঁটি দুধের সাথে ওর ফারাক গন্ধেই খানিক বোঝা যায়। খাঁটি দুধ খেতেও মিষ্টি হয়। অন্যদিকে ভেজাল দুধ যদি খেয়ে দেখেন, তাহলে আপনি সামান্য তেঁতো স্বাদ পাবেন।
তাহলে আজ আপনি চিনে নিলেন ভেজাল দুধ চেনার সহজ কয়েকটি উপায়। এবার থেকে দুধ ভেজাল কিনা তা পরীক্ষা করে দেখে নিন। সুস্থ্য থাকুন, খাঁটি দুধ খান।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…