আমি নিশ্চিত,আজকের এই আর্টিকেল আমাদের বউমাদের কাছে হট কেকের মতো জায়গা করে নেবে।এখন শাশুড়ি-বউয়ের সম্পর্কের সমীকরণ অনেকটাই পাল্টেছে, শুধুই কুটকচালির সম্পর্ক আর নয় সেটা। একটা আলাদা বন্ধন, মায়া-মমতার জায়গাও তৈরি হয়েছে। আবার চিরাচরিত দ্বৈরথও যে একেবারে নেই তা নয়। আর এইসব দুষ্টু-মিষ্টি সম্পর্কের ছাপ পড়েছে আমাদের বাংলা সিরিয়ালের অন্দরে-অন্তরে। তাই তো প্রত্যেক সন্ধ্যেগুলোতে পাশাপাশি বসে টিভি দেখা দু-জোড়া চোখ কখনও একে-অন্যের দিকে তেরছাভাবে তাকায়, কখনও চোখের পাতাগুলো হাল্কা ভিজে ভিজে মনে হয়।আসুন না, দেখে নিই একবার, রিল লাইফের সেই ভালো-মন্দ শাশুড়িদের একঝলকে।
শুরু থেকে অনেকেই ভেবেছিলেন কৌশল্যা চরিত্রটা হয়তো খুব একটা ভালো চরিত্র হবে না। কিছু প্রাচীন মূল্যবোধ, কিছু পুরনো ধ্যান-ধারণা এইসব নিয়ে চলা কৌশল্যার সঙ্গে শুরুতে বউমা তরীর বেশ ঝামেলাও তো হত। তার ওপর আবার কৌশল্যার নিজের ছেলে খোকার ওপর একটু বেশীই অধিকারবোধ। কিন্তু আস্তে আস্তে শাশুড়ি কৌশল্যাই হয়ে উঠলেন তরীর মায়ের মতো। বাড়ি ছেড়ে তরী বাপের বাড়িতে চলে আসার পর কৌশল্যাই তরীর বাড়িতে এসে থেকেছেন এই শর্তে যে যতদিন না খোকা তাঁর বউমাকে ফিরিয়ে না নিয়ে যাবে, ততদিন এই বাড়িতেই তিনি থাকবেন। বোমা বিষ্ফোরণে তরী আহত হয়ে হাসপাতালে যখন ভর্তি ছিল, আর তারপর যখন সুস্থ হল, তখন ছেলে খোকাকে তরীর কাছে যেতে দেয় নি কৌশল্যাই, কারণ খোকা আসলে কী কাজ করে সেটা তিনি জানেন না। হতে পারে সেটা কোনো অসৎ উপায়। তাই অসৎ ছেলেকে তরীর কাছে যেতে না দিয়ে কৌশল্যা শাশুড়ির থেকেও অনেক বেশি মা হয়ে উঠেছিলেন।
কে বলে যে শাশুড়ি মা হয়ে উঠতে পারে না! কুসুম দোলা সিরিয়ালের ইমন আর তার শাশুড়ির মিষ্টি সম্পর্ক আরেকবার প্রমাণ করে দেয় যে শাশুড়িও মা হয়ে উঠতে পারেন অনায়াসে। যখন ইমন প্রথম আসে শ্বশুর বাড়িতে, তখন বাড়ির গুরুজন স্থানীয় অনেকেই যেখানে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি ইমনকে, সেখানে ইমনের শাশুড়ি অর্থাৎ রণজয়ের মা’ই ইমনকে সাদরে বরণ করে নিয়েছিলেন। সংসারের চাপে যখন একের পর এক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় ইমনকে, তখন প্রতিবাদে পাশে পেয়েছিল ইমন এই নতুন মা’কেই। হ্যাঁ, ছোটবেলা নিজের মা’কে হারানোর পর ইমন আবার রণজয়ের মা’এর মধ্যে যেন নিজের মা’কেই আবার ফিরে পেল। যদি ঘরে ঘরে এমন শাশুড়ি-বউমার জুটি তৈরি হয়, তাহলে স্বর্গ খুঁজতে বোধহয় মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না।
জবার সঙ্গে তার শাশড়ির সম্পর্ক এখানে শাশুড়ি-বউমা সম্পর্কের অনেক আগে থেকেই। বাবা মারা যাওয়ার পর জবা এই পরিবারেই আশ্রয় পায়। তাই পরবর্তীকালে যিনি শাশুড়ি হবেন অর্থাৎ পরমের মা, তিনি আগে মায়ের মতো স্নেহ দিয়ে লালন করেছিলেন জবাকে। মাঝে অবশ্য পরমের সঙ্গে জবার বিয়েটা মেনে নিতে পারেননি বলে খুবই বিরূপ ছিলেন জবার প্রতি। কিন্তু আস্তে আস্তে বরফ গলে। এমনকি জবাকে র্যাম্পে হাঁটার অনুমতিও দেন। ছেলে মারা যাওয়ার খবর পেয়েও নিজে শান্ত থাকেন যাতে জবা মানসিকভাবে আরও ভেঙ্গে না পড়ে, তার জন্য প্রাণ খুলে কাঁদেননি পর্যন্ত। সবই বউমা জবার মুখের দিকে তাকিয়ে। সত্যিই এমন শাশুড়ি পাওয়া কিন্তু ভাগ্যের ব্যাপার।
শুধু নিজের শাশুড়ি কেন, কাকী-শাশুড়িও যে অনেকসময় মায়ের মতো হয়ে উঠতে পারেন, সেটা কুন্দ ফুলের মালা সিরিয়ালে অংশুর মেজমা বা কাকীমাকে দেখলেই বোঝা যায়। অংশুর নিজের মা এতোদিন নিখোঁজ ছিলেন। আর অংশুর সৎ-মা অংশুরই মা হয়ে উঠতে পারেননি, তো অন্নপূর্ণার শাশুড়ি হওয়া তো দূরের কথা। কিন্তু শুরু থেকে অন্নপূর্ণার সমর্থনে ছিলেন মেজমা’ই। শকুন্তলার সঙ্গে বিয়ে তিনিই ঠিক করলেও যখনই দেখেছেন অন্নপূর্ণা আর অংশু একে অন্যকে ভালোবাসে, তখন এই বিয়ের প্রতিবাদ করেন। তাও বিয়ে হয়ে যায় যখন, তখন মানসিকভাবে পাশে ছিলেন অন্নপূর্ণার এই মেজমা’ই। সবসময় ছাতার মতো ছায়া দিয়েছেন তিনিই। এইরকম শাশুড়িও কিন্তু খুব একটা দেখা যায় না।
শাশুড়ি আর বউমার সম্পর্ক নিয়ে তো অনেক কথাই বলা হয়। আমরাও বললাম ওপরে খানিক কথা।কিন্তু শাশুড়ি আর জামাইয়ের কেমিস্ট্রি খুবই ইউনিক। খুব জোড়ালোভাবে না হলেও একটা হাল্কা স্রোত আমরা দেখতে পাই যা দেখায় খোকাবাবুর শাশুড়ি মানে তরীর মা অনুরাধার খোকার প্রতি স্নেহ। তরীর বাবা বিখ্যাত ব্যাবসায়ী রাজশেখর গাঙ্গুলী আর তার দিদি যখন খোকাকে মেনে নিতে আপত্তি করে জামাই হিসাবে, খোদ তরী যখন খোকাকে অপমান করে, তখন এই শাশুড়ি মা’ই খোকার পাশে থাকে। পরিবারের সঙ্গে প্রতিবাদ করে মেয়েকে খোকার কাছে পাঠায়, সংসার অটুট রাখার চেষ্টা করেন দুজনের মধ্যে। তাই অনুরাধাকে এই ভালো শাশুড়ির তালিকায় রাখতেই হবে।
উহু!এই ভালোর ছড়াছড়ি দেখে ভাববেন না যেন সবাই খুব ভালো। এতো ভালো শাশুড়ি থাকলে তো ঘরে ঘরে হাসি ফুটতো। তা যখন নয়, তার মানে মন্দ শাশুড়িও আছে বৈকি! আসুন এবার দেখি সিরিয়ালে মন্দ শাশুড়িরা কীভাবে জ্বালাতন করলো তাদের বউমাদের।
এই সিরিয়ালে শিমূল, যে কিনা কলেজে ইংরেজির প্রফেসর, সে শাশুড়ি হিসাবে পায় শান্তিপ্রিয়া দেবীকে। শান্তিপ্রিয়া দেবী কিন্তু শিমূলের জীবনে অশান্তির কারণ। ইনি এমনই একজন মহিলা যিনি নিজে তো তেমন পড়াশোনা করেননি, আবার ছেলেকেও শেখাননি। উলটে ইনি এমন মেয়ে চান ছেলের জন্য যে কিনা তেমন লেখাপড়াই জানবে না। এদিকে শিমূল তো উচ্চশিক্ষিত। এবার মনমালিন্য হওয়া তো স্বাভাবিক। খুব একটা যে ক্ষতি করেন উনি শিমূলের তা নয়, কিন্তু আসহযোগী শাশুড়ি তো বটেই।
গুঞ্জার শাশুড়িকে মানে বসুন্ধরা সিংহ রায়কে দেখলে মনে হবে এতো অমানবিক মানুষও থাকতে পারে! যদিও তিনি গুঞ্জার স্বামী মানে ঋদ্ধির আসল মা নন, তবুও তো মা শব্দটা তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাও শুধু সম্পত্তির জন্য ছেলে ঋদ্ধিকে কিডন্যাপ করাতে পারেন, গুঞ্জাকে শর্ত দিতে পারেন যাতে কখনোই সে মা না হয়। গুঞ্জার সংসারটাই তছনছ করে দিয়েছিলেন এই একজন মহিলা। খুব কম মানুষই এমন হন, যার জীবনে সম্পর্ক নয়, টাকাটাই সব।
মণিমা মানে অংশুর সৎমা। খুবই আধুনিকা এবং একদমই সম্পত্তি নিবেদিত প্রাণ।অংশুর মা হয়ে উঠতে পারেননি কোনোদিন। যেহেতু অন্নপূর্ণা সবসময় সত্য আর সততার দিকেই থাকে, তাই মিল না হওয়াই স্বাভাবিক দুজনের।শকুন্তলার সঙ্গে মিলে অন্নপূর্ণাকে মারার প্ল্যানও করেন। ষড়যন্ত্রের পর ষড়যন্ত্র করতে থাকেন দুজনের বিরুদ্ধে। মানুষটাই এমন যে নিজের হসপিটালে বিছানায় শয্যাশায়ী স্বামীকে পর্যন্ত মারতে যান। ভাবুন খালি!
নীরুর শাশুড়ি মানে নীরুর স্বামী নীলের সৎমা শকুন্তলাও নীরুর জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিলেন। এখানেও মূল জায়গা করে নেয় সম্পত্তি। তার ওপর আবার নীল পঙ্গু।নীরুর জীবনে এটা আরেক বড় চ্যালেঞ্জ।আর এইটাই শকুন্তলার জীবনেও একটা বড় পজিটিভ দিক। এখানেই নীরু স্বামী নীলের পাশে দাঁড়ায় আর লড়াই শুরু করে শকুন্তলার বিরুদ্ধে।
রিল লাইফ তো রিয়েল লাইফেরই প্রতিফলন।যদি আমাদের সাধারণ ঘরের শাশুড়ি মায়েরা একটু নিজের বউমাদের নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে না করে নিজের মেয়ের মত দেখেন, তাহলে কতই না ভালো হয় বলুন! দাশবাস কিন্তু শাশুড়ি-বউমা দুজনেরই লাইক চায়।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…