শাকপাতার রেসিপি বলতে মাথায় আসে ভাজা বা চচ্চড়ি। সাধারণত এইভাবেই খেয়ে থাকি আমরা। কিন্তু আজ বলব একদম অন্যরকম অচেনা কিছু রেসিপি। যেগুলো করাও সহজ আবার বেশ মুখরোচক। গরম ভাতে কিংবা বিকেলের চায়ের সঙ্গেও জমে যাবে।
শুরু করলাম তুলসী দিয়ে কারণ এর যা স্বাস্থ্যগুণ একে এড়িয়ে চলা দায়। আবার তুলসীর রেসিপি শুনতেও বেশ ইউনিক লাগছে তাই না?
এই বিশেষ টিক্কা বানাতে আগে বাজার থেকে পনির কিনে নিয়ে আসুন। সাথে ১০০ টকদই। পনিরের ওপর নির্ভর করছে তুলসীর পরিমাণ। বাগান থেকে তুলে নিন ১০ থেকে ১৫টি তুলসী পাতা। সাথে লাগছে একচামচ আদা ও রসুন বাটা, কাঁচালঙ্কা কুঁচি, অল্প জিরে গুড়ো।
এবার প্রথমেই টকদই থেকে জল ঝরিয়ে রাখুন। তারপর তুলসী পাতা, আদা, রসুন, কাঁচা লঙ্কা বেটে ফেলুন। দই ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এতে নুন, অল্প চিনি, অল্প জিরে গুড়ো এবং ওই বাটাটা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। ওই দইয়ের মিক্সটা পনির গুলোতে মাখিয়ে নিন। এভাবে রেখে দিন এক ঘণ্টা মত। মিশ্রণ হবে একদম ঘন, যেন পনিরে লেগে থাকে গড়িয়ে না পরে যায়। তারপর চাটুতে সাদা তেল বুলিয়ে নিন। পনির গুলো দিয়ে সেঁকে নিন দুপিঠ। বাস রেডি তুলসী পনির টিক্কা। রঙে, স্বাদে, গন্ধে পাবেন তুলসীর ফ্লেবার।
ডিমের ধনেপাতা কারি সে আবার কেমন খেতে? উত্তর হল খুবই সুস্বাদু। ডিমের এই অন্যরকম রেসিপিটা একবার ট্রাই করেই দেখুন। কিন্তু কি কি লাগবে?
এটা বানাতে লাগবে সেদ্ধ ডিম। আপনি যেকটা ডিম নিয়ে করবেন। সাথে বেশ কিছুটা ধনেপাতা, ১০-১৫টা পুদিনা পাতা, কাঁচা লঙ্কা যে যেমন ঝাল খান সেইমত, একচামচ আদাবাটা ও একচামচ রসুন বাটা, একটা বড় পেঁয়াজ কুঁচি, হাফচামচ হলুদগুঁড়ো, অল্প লেবুর রস ও গরম মশলা।
প্রথমে সেদ্ধ ডিম অল্প তেলে ভেজে নিন। কারির জন্য এরপর ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, আদা রসুন, কাঁচালঙ্কা একসাথে বেটে নিন। কড়ায় সরষের তেল দিন। এতে দিন পেঁয়াজ কুঁচি। হালকা নেড়ে বাদামি হয়ে এলে, ওই মিশ্রণটা দিয়ে দিন। হলুদগুঁড়ো দিন। নুন নিয়ে কষতে থাকুন। একটু কষে নিয়ে ডিমগুলো দিয়ে দিন। এবার পরিমাণ মত জল দিয়ে ফুটতে দিন। নামানোর আগে লেবুর রস ও গরমমসলা ছড়িয়ে কিচ্ছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে পরিবেশন করুণ।
শুনে হয়তো মনে হচ্ছে কুমড়ো পাতার সঙ্গে চিকেন কেমন লাগবে? আরে দারুণ লাগবে।
এটি বানাতে লাগবে অবশ্যই কুমড়ো পাতা। টকদই ১০০ গ্রাম। যতটা চিকেনের পাতুরি বানাবেন সেই অনুযায়ী পরিমাণ মত আদা বাটা, কারি পাতা বাটা, রসুনবাটা, নারকেল কোরা, লঙ্কা গুড়ো, নুন স্বাদমত, আর অল্প তেঁতুল গোলা জল।
প্রথমে টকদই ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এবার বাকি সব উপকরণ গুলো দই এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি চিকেনে মাখিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। তারপর কুমড়ো পাতার মধ্যে চিকেন মুড়ে সুতো দিয়ে বেঁধে দিন। তারপর তাওয়ায় সেঁকে নিন। ব্যাস রেডি এই অভিনব চিকেন পাতুরি।
পোস্ত অনেক রকমভাবে খেয়েছেন কিন্তু এইভাবে খেয়েছেন কি? এরজন্য গাঁদাল পাতা ছাড়াও লাগছে, সরষের তেল ভাজার জন্য, হাফচামচ রসুন কুঁচি , ২টি শুকনো লঙ্কা, নুন চিনি স্বাদ মত সাথে হাফ চামচ পোস্ত, ঘি।
এটা বানানো খুবই সহজ। কড়ায় সরষের তেল দিন। তেল গরম হলে রসুন কুঁচি, শুকনো লঙ্কা ফোঁড়ন দিন। এবার এতে পাতা দিয়ে নেড়ে নিন ভালো করে। পাতা সাঁতলে নিন। তারপর অল্প নুন মিষ্টি দিয়ে দিন। তারপর পাতায় রঙ এলে পোস্ত ছড়িয়ে দিন। নামানোর সময় ঘি মেশান।
নিম পাতা যে কতটা উপকারী সে আমরা অনেকে জানলেও, খেতে গেলেই কষ্ট। নিম পাতা সাধারণত ভাজা করেই খাওয়া হয়। কিন্তু একবার এইভাবে করে দেখুন তো কেমন লাগে। এতে তিতকুটে ভাবও অনেকটা কমে যাবে আবার খেতেও বেশ ভালো লাগবে।
এটা করতে প্রথমেই জোগাড় করে আনুন একটি কলাপাতা। তারপর বেশ অনেক গুলো কচি নিমপাতা নিয়ে নিন। সাথে লাগবে যে যতটা ঝাল খান সেই অনুযায়ী কাঁচা লঙ্কা। হাফ চামচ হলুদ গুড়ো, দু চিমটে মত কালো জিরে নিয়ে নিন, সরষের তেল সাথে নুন, চিনি স্বাদমত।
প্রথমেই নিমপাতা বেটে ফেলুন কাঁচালঙ্কা, কালোজিরে ও হলুদ গুঁড়ো দিয়ে। তারপর কড়ায় দিন সরষের তেল। এই বাটা দিয়ে দিন। একটু নেড়ে মেশান নুন, চিনি। এবার কলাপাতায় সরষের তেল মাখান। একটু সেঁকে নিন। তারপর কলাপাতার ছোট ছোট টুকরো করে নিন। এরমধ্যে নিমপাতা বাটা দিয়ে মুড়ে সুতো দিয়ে বেঁধে নিন। তারপর চাটুতে তেল দিন। অল্প একটু সেঁকে নিন। ব্যাস রেডি, গরম ভাতের সঙ্গে জমে যাবে এই নতুন পাতুরি।
কারি পাতা দিয়ে মাছের ঝোল কিন্তু বেশ অন্যরকম। সাধারণত বানাই না আমরা। কিন্তু একটু অন্যরকম ভাবে করলে অন্যস্বাদের মাছের ঝোল সবাইকে খাওয়াতে পারবেন।
বাজার থেকে এনে রাখা কাটাপোনা মাছেই এই ঝোল ভালো লাগবে। মাছ যতটা করবেন সেই বুঝে এনে ভেজে রাখুন। তারপর পুরো রান্নাটি করার জন্য লাগবে ৪ – ৫টি কারি পাতা, সরষের তেল, অল্প কালো সর্ষে, ২টি শুকনো লঙ্কা, একটি বড় পেঁয়াজ কুঁচি, একচামচ আদা ও রসুন বাটা, ছোট কাপের এক কাপ নারকেলের দুধ, একটা মাঝারি টম্যাটো পেস্ট, হাফচামচ হলুদ গুড়ো ও লঙ্কা গুড়ো, অল্প লেবুর রস ও গরমমশলা, নুন স্বাদমত।
এই ভিন্ন স্বাদের মাছের ঝোল বানাতে সরষের তেলে কারি পাতা, কালো সরষে, শুকনো লঙ্কা ফোঁড়ন দিন। এবার এতে পেঁয়াজ কুঁচি দিয়ে নাড়তে থাকুন। পেঁয়াজ হালকা বাদামি হয়ে এলে আদা ও রসুন বাটা দিয়ে কষাতে থাকুন। একটু নেড়ে টম্যাটো পেস্ট দিয়ে দিন। তারপর স্বাদমত লঙ্কাগুড়ো, নুন, হলুদগুড়ো দিয়ে একটু কষে নিয়ে, ভাজা মাছগুলো দিয়ে দিন। আঁচ কমিয়ে দিয়ে মেশান এক কাপ নারকেলের দুধ। নামানোর আগে লেবুর রস ও গরমমশলা ছড়িয়ে দিন। কিচ্ছুক্ষণ চাপা দিয়ে রেখে পরিবেশন করুণ।
কুমড়ো পাতার বড়া কিন্তু দারুণ একটা স্নাক্স। এটা বানাতে লাগবে এক চামচ পেঁয়াজ বাটা, স্বাদমত কাঁচা লঙ্কা বাটা, অল্প কালো জিরে, হাফ চামচ সাদা সরষে বাটা, যতটা বড়া করবেন সেইমত বেসন, এক চিমটে জোয়ান, এক চামচ চালের গুড়ো বা সুজি, এবং তেল ভাজার জন্য।
কুমড়ো পাতা কুঁচিয়ে নিন। এবার এতে পেঁয়াজ বাটা, স্বাদমত কাঁচা লঙ্কা বাটা, অল্প কালো জিরে, হাফ চামচ সাদা সরষে বাটা, নুন মিশিয়ে নিন। বেসনে জোয়ান, চালের গুড়ো, নুন ও জল মিশিয়ে ব্যাটার বানিয়ে নিন। এবার পাতার মণ্ড বানিয়ে বেসনে ডুবিয়ে ছাঁকা তেলে ভাজুন। গরম গরম সসের সঙ্গে জমে যাবে।
এই প্রতিটা রেসিপিই কিন্তু একদম অন্যরকম প্রায় অজানা সকলের। আর দেরী কেন আমাদের রেসিপি দেখে একের পর এক ট্রাই করতে থাকুন আর এরকমই আরও সিক্রেট রেসিপির সন্ধান পেতে চোখ রাখুন আমাদের পেজে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…