Personal Care

ত্বকের যত্ন নেওয়ার ঘরোয়া টিপস পর্ব-১

যদি সত্যি চান আপনার স্কিন ভেতর থেকে উজ্জ্বল লাগুক তাহলে, একটা প্রতিদিনের স্কিন রুটিন তো অবশ্যই মেনে চলা দরকার। কিন্তু প্রতিদিনের সেই স্কিন কেয়ার রুটিনটা কি হবে, সেটা অনেকেই জানেন না। সকাল থেকে শুরু করে, রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফিরে রোজের একটা সঠিক স্কিন রুটিন মেনে চললে, আপনার স্কিনও আপনার ফেবারিট সেলিব্রেটির মত গ্লোয়িং লাগবেই। কিন্তু সেই রুটিনটা কি? সেটা নিয়েই আলোচনা করবো আজ।

স্কিনের সঠিক যত্নের জন্য দরকার, আগে দরকার নিজের স্কিন টোন জানা। কারন বিভিন্ন স্কিন টোনের প্রয়োজন বিভিন্ন। অবশ্যই অয়েলি স্কিনের জন্য যেটা লাগবে, সেটা ড্রাই স্কিনের জন্য নয়। আবার স্কিন টোন যদি সেনসিটিভ হয়, তাহলে সম্পূর্ণ আলাদা রুটিন।

অয়েলি স্কিন কেয়ার টিপসঃ

অয়েলি স্কিন মানেই কিন্তু চ্যাটচ্যাটে, অতিরিক্ত তেল নয়। যদি সঠিক ভাবে একে মেইনটেইন করা যায়, তাহলে আপনার এই স্কিন টোন দিতে পারে একটা সাইনি লুক। অয়েলি স্কিনের চ্যাটচ্যাটে সমস্যা ছাড়াও, ওপেন পরস, ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস, ডার্ক স্পট এবং ব্রনর সমস্যা তো আছেই।

টিপসঃ

  • হেলদি ডায়েট মেনে চলুন। যেহেতু স্কিন অয়েলি তাই অবশ্যই খুব বেশী অয়েলি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। অয়েলি খাবারে স্কিন আরও অয়েলি হয়ে যাবে।
  • মুখ পরিষ্কার রাখবেন সবসময়। এতে অতিরিক্ত তেল মুখে জমতে পারবে না।
  • অয়েলি স্কিনে অয়েলি প্রোডাক্ট, হেভি ময়েশ্চারাইজার না ব্যবহার করাই ভালো। হালকা অয়েল ফ্রী প্রোডাক্ট, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো। আর স্ক্যাল্প অয়েলি হলে, সেক্ষেত্রে ভারী তেল নয়, হালকা তেল ব্যবহার করুণ। আর সপ্তাহে একদিন তেল মাখলেই হবে।

ড্রাই স্কিন কেয়ার টিপসঃ

ড্রাই স্কিনের প্রধান সমস্যা হল মুখ খুব শুকনো লাগে। আর এই অতিরিক্ত শুষ্কতার জন্য যতই সুন্দর মেকআপ করা হোক না কেন, মুখ সেই কালো লাগে। বিশেষ করে শীতে। স্কিন একদম শুকিয়ে কাঠ। তাই এর সঠিক কেয়ার নেওয়া খুব দরকার। নাহলে ফেটে যাওয়া স্কিন থেকে তাড়াতাড়ি স্কিন এজিং, রিঙ্কেল চলে আসে। তখন আপনাকে দেখে নয়, আপনার স্কিন দেখে আপনাকে সবাই বুড়ি বলবে।

টিপসঃ

  • গরমজলে কখনোই মুখ ধোবেন না। এবং যতটা পারবেন স্নানের সময় গরমজল এড়িয়ে চলবেন।
  • রোজ মুখ পরিষ্কার করার পর ময়েশ্চারাইজার তো অবশ্যই মাখতে হবে। গরমকালে ব্যবহার করুণ হালকা ময়েশ্চারাইজার।
  • স্নানের পর মুখ ভালো করে মুছে নেবেন। নরম তোয়ালে ব্যবহার করবেন মুখ মোছার জন্য।

কম্বিনেশন স্কিন কেয়ার টিপসঃ

এই স্কিন টোনে ড্রাই ও অয়েলি দুই ধরণের স্কিনের সমস্যাই একটু আধটু হয়। কপাল ও নাকের দুপাশ ও নাকটা অয়েলি লাগে। এছাড়াও মুখের অন্যান্য অংশ ড্রাই লাগে।

টিপসঃ

  • মুখ সবসময় পরিষ্কার রাখবেন, যাতে মুখের যে অংশ গুলো অয়েলি লাগে। সেগুলো কম হবে।
  • সঠিক ময়েশ্চারাইজার বেঁছে নিন। আপনার স্কিনে তেলা ভাবটা বেশী? নাকি শুকনো ভাবটাই বেশী এটা লক্ষ্য করে ময়েশ্চারাইজার কিনুন।
  • ময়েশ্চারাইজারের পরিমাণও সঠিক হওয়া দরকার। খুব বেশী ময়েশ্চারাইজার লাগালে, মুখের যে অংশ গুলো অয়েলি লাগে, সেগুলো আরও অয়েলি হয়ে যাবে। আবার খুব কম ব্যবহার করলে মুখ শুকনো লাগবে। তাই বুঝে ব্যবহার করুণ।

প্রতিদিনের স্কিন রুটিনঃ

ক্লিনজিংঃ

স্কিনকে গ্লোয়িং ও হেলদি রাখার প্রথম শর্তই হল স্কিনকে পরিষ্কার রাখা। সারাদিন কত ধুলো ধোঁয়া, বাইরের দূষণ স্কিনে জমে যায়। সেগুলো তো অবশ্যই স্কিন থেকে পরিষ্কার করা দরকার। সেগুলো স্কিন থেকে ঠিকমত পরিষ্কার না হলে, স্কিন হয়ে পড়ে শুষ্ক, প্রাণহীন। স্কিন ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকলে তবেই কিন্তু তার উজ্জ্বলতা বজায় থাকবে। এবং স্কিন পরিষ্কার থাকলে, তবেই স্কিন হেলদি রাখার পরবর্তী ধাপ গুলো স্কিন নিতে পারবে। তাই প্রতিদিন বাড়ি ফিরে অবশ্যই স্কিনকে পরিষ্কার করুণ।

টোনিংঃ

ক্লিঞ্জিং এর পরের ধাপ হল টোনিং। অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে, রোজ স্কিন পরিষ্কার করে, ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরও কি টোনিং এর দরকার আছে? হ্যাঁ অবশ্যই দরকার। আপনি যখন ক্লিঞ্জার দিয়ে স্কিন পরিষ্কার করছেন, ক্লিঞ্জার স্কিন পরস গুলো ওপেন করে স্কিনের ভেতরে জমে থাকা ময়লা ধুলো পরিষ্কার করে। স্কিন পরস কিন্তু ওপেনই থাকে। এরপর টোনার সেই ওপেন পরস গুলো বন্ধ করে। নাহলে কিন্তু ওপেন পরসের সমস্যা হবে। এবং টোনার স্কিনের পিএইচ ব্যাল্যান্সকে ঠিক রাখে। স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখে। এককথায় টোনার স্কিনের ক্লিঞ্জিং প্রসেসকে সম্পূর্ণ করে।

ময়েশ্চারাইজারঃ

প্রতিদিনের শেষ ধাপ হল, ময়েশ্চারাইজার। টোনার লাগানোর পর স্কিন অনেক সময় একটু শুকনো লাগে। তাই এরপর ময়েশ্চারাইজার। ময়েশ্চারাইজার স্কিনকে নারিশ করে। হাইড্রেটেড রাখে। স্কিনের ময়েশ্চার হারিয়ে গেলে কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি স্কিন এজিং চলে আসে। তাই প্রতিদিন অবশ্যই ময়েশ্চারাজার।
যাদের অয়েলি স্কিন, তারা অনেকেই মনে করেন তাদের ময়েশ্চারাইজার দরকার নেই। এটা কিন্তু ভুল ধারনা। সমস্ত স্কিন টোনেই ময়েশ্চারাইজার দরকার। স্কিন টোন অয়েলি হলে, জেল বেস ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুণ।

এক্সফলিয়েশনঃ

প্রতিদিন শুধু ক্লিঞ্জিং, ময়েশ্চারাইজিং কিন্তু যথেষ্ট নয় স্কিনকে রেডিয়েন্ট করে তুলতে। দরকার এক্সট্রা কেয়ার। সেটা হল এক্সফলিয়েশন বা স্ক্রাবিং। এক্সফলিয়েশন স্কিনের ওপর জমে থাকা মরা কোষ সরিয়ে স্কিনকে গ্লোয়িং করে তোলে। তাই সপ্তাহে এক বা দুদিন স্কিনকে এক্সফলিয়েট বা স্ক্রাবিং অবশ্যই করুণ।

সুস্মিতা দাস ঘোষ

Recent Posts

মুখের রোমকূপ বা পোরস ঢাকার মেকাপ টিপস

আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…

2 বছর ago

থুঁতনির জেদি ব্ল্যাকহেডস তোলার ৬টি উপায়

পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…

2 বছর ago

মেয়েরা বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় যে ১০টি জিনিস অজান্তেই করে

আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…

2 বছর ago

ঘরের দেওয়ালে নোনা ধরছে? দূর করুন ঘরোয়া কৌশলে

বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…

2 বছর ago

ময়েশ্চারাইজার কেন এত উপকারি ত্বকের যত্ন নিতে? ব্যবহারের সঠিক নিয়ম।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…

2 বছর ago

নারকেল তেল দিয়ে ত্বকের যত্ন! উজ্জ্বল, চকচকে ত্বকের গোপন রহস্য!

প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…

2 বছর ago