Most-Popular

সংসার, সন্তান ও অফিস সামলে দশহাতে দশভুজা হয়ে উঠবেন আপনিও!

ভারতীয় সমাজের প্রেক্ষাপটে জেন্ডার রোল কথাটা খুবই প্রাসঙ্গিক। স্টিরিওটিপিকাল চিন্তাধারায় বিশ্বাসী সমাজ আমাদের মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে যে বাইরের তথাকথিত সব কাজ পুরুষের এবং অন্দরসজ্জার যত দায়ভার কেবল মেয়েদের। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে লিঙ্গগত কাজ বাটোয়ারার এই আগল ভেঙে মেয়েরা ডানা মেলে বেরোলেও তারা সংসার ও অফিসের জাঁতাকলে ঠিকই হিমশিম খায়।

প্রাইভেট লাইফে গেরস্থালি, সন্তান ও স্বামীকে সামলানো সাথে প্রফেশনাল লাইফে কাজের চাপ উৎরানো এর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। যেখানে উভয়পক্ষেই কম্প্রোমাইজ এর কোনো জায়গাই নেই। একজন সফল কর্মকুশলী মা হয়ে উঠতে ব্যবহার করুন তাই নিচের কিছু কৌশল।

সময় এর দাঁড়িপাল্লা:

  • সময় আর নদীর স্রোত তো কারোর জন্য অপেক্ষা করেনা। তাই সময় এর দাঁড়িপাল্লাতে চেপে নিজেকে মেপে চলতে হবে যে।
  • ঘরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমানভাবে কাজ ভাগ করে নিন। নিজেদের সুবিধেমতো রান্নাবান্না, কাচাকাচি ও সংসারের নিত্যদিনের কাজ। যেমন সন্তানকে স্কুল ছাড়তে যাওয়া হোক কি বাড়িতে অনুষ্ঠানে গেস্ট এটেন্ড করা তার পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব নিন।
  • নিজের অফিসের ওয়ার্ক সিডিউল নির্দিষ্ট রাখুন ও অফিসের কাজ বাড়ি বয়ে আনা বন্ধ করুন।
  • স্বামীকেও তার নিজের রোল প্লেটা বুঝিয়ে দিন। পারস্পরিক সহযোগিতার হাত ধরেই আসবে সাফল্য।

স্বামী- সন্তান ও নিজের যত্ন নিন:

  • নিজেকে হোমমেকার এর আগে একজন সুযোগ্য মা ভাবতে শিখুন।
  • সন্তান ছোট হলে বেরোনোর আগে বাড়িতে ন্যানি বা বিশ্বস্ত আত্মীয়ের কাছে রেখে তবেই যান।
  • অফিসে কাজের ফাঁকে বা লাঞ্চের আগে সন্তান এর সাথে ফোনে কথা বলুন বা ভিডিও কল করে নিন। এতে আন্তরিক যোগাযোগ মজবুত হয়।
  • অফিস থেকে বাড়িতে এসে রেস্ট নিন এবং তারপর এর সময়টা সোশ্যাল মিডিয়া বা সিরিয়াল এ অপচয় না করে স্বামী ও সন্তানদের সাথে সময় কাটান। বোঝান ওদের কদর আপনার জীবনে সবচেয়ে বেশি।
  • এসব এর মাঝে নিজের খেয়াল রাখতে ভুলবেন না যেন। আপনি সুস্থ না থাকলে এত বড় সংসার তরী টানবে কে? তাই নিজে ফিট থাকুন ও পুষ্টিকর খাবার খান।

পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে আত্মবিশ্বাসী হন:

  • চাকরী ও সংসার এই দুইের মাঝে কখনো কখনো কোনটাতেই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করছেন না এরকম মনে হতে পারে। এটা থেকে বেরোন।
  • চাকরী নিজের প্যাশন ও আত্মনির্ভর হওয়ার জন্যই করছেন এই মনোভাব আনুন। এটা আপনার পরিবারকে আর্থিক সুরক্ষা ও আপনার কর্মপ্রেরণাকে উৎসাহ দিচ্ছে সেইদিকটা খেয়াল করুন।
  • স্বামী নিজের দায়িত্বে অবহেলা করলে ধৈর্য হারাবেন না। সময় নিয়ে তাকে বোঝান যে আপনিও উপার্জনশীল, তাই আপনার দাবিও সমান জরুরি।
  • অযথা স্বামীকে নিয়ে সন্দেহভাজন হবেন না। তার প্রতি বিশ্বাস রাখতে শিখুন। চোখের আড়ালে স্বচ্ছ থাকুন নিজেও।
  • আত্মবিশ্বাস বাড়ান যে নিজেকে দিয়েই হবে। আপনার স্বতন্ত্র আত্মমর্যাদা আছে। তাই অফিসে আওয়ার্ড পেলে খুশির খবরটা বাড়িতে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।
  • কখনোই অন্যের কথা শুনে হীনমন্যতায় ভুগবেন না। বাস্তবকে মানতে শিখুন। সবাইকে খুশি করা আপনার কাজ নয়।
  • দরকার পড়লে কাজের সুবিধার্থে ওয়াশিং মেশিন বা ডিশ ওয়াসার ইত্যাদির প্রয়োজন হলে নিশ্চই তা ব্যবহার করুন। অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবেন না।

সু-অভ্যাস এর চর্চা:

  • কিছু অভ্যাস আছে যা মেনে চললে আমরা লাভবান হই – যেটা একপ্রকার অলিখিত নিয়ম বলা চলে। যেমন – সকালে ঘুম থেকে জলদি ওঠা, মিল স্কিপ না করা ইত্যাদি।
  • নির্দিষ্ট বয়সের পর বাচ্চাদের স্বাবলম্বী হতে শেখান যাতে তারা নিজেদের কাজ নিজেরাই করে নিতে পারে। পড়াশুনোতে হেল্প অবশ্যই করুন তবে দরকার পড়লে।
  • চিন্তাপ্রবন হলে বাড়িতে সিসিটিভি লাগিয়ে বাচ্চার ওপর নজরদারি করতে পারেন।
  • অফিসে সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন। গসিপ, বিতর্ক বাঁচিয়ে নিজের পথ দেখুন।
  • পুরুষশাসিত সমাজে অনেক প্রতিকূলতার সন্মুখীন হতে হয় তাই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন ও নিজের অধিকার বুঝে নিতে শিখুন।

হলিডে প্ল্যানিং ও অন্যান্য:

  • মোবাইল ক্যালেন্ডারে বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফোন ইত্যাদির বিলের তারিখ, পরিজনদের জন্মদিন বা গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট এর লিস্ট করে তাতে এলার্ম সেট করুন যাতে ভুলে না যান।
  • ছুটির সদ্ব্যবহার করুন। ঘুরে আসুন বাড়ির সবাইকে নিয়ে শর্ট বা লং ট্যুর এ।
  • অবসরে পার্টি এড়িয়ে রেস্তোরাঁ বা ছোট হ্যাং আউটে কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করতেই পারেন।

চাকরির ক্ষেত্র নির্বাচন:

  • নতুন জব হোক কি চাকরির পরিবর্তন। কর্পোরেট হোক কি বদলির চাকরি এই পয়েন্ট গুলি চাকরি বাছার সময় অবশ্যই দেখুন।
  • কাজের জায়গা ও বাড়ির ডিস্টেন্স কেমন সেটা দেখে নিন। যানজটের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখুন। পরিবহনের সুবিধেটাও দেখতে ভুলবেন না।
  • ছেলেমেয়ের স্কুল এর পথেই যাতে বা কাছাকাছি যদি জব মেলে ছাড়বেন না। এতে ওদের সময়সূচির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সুবিধেই হবে।
  • আউটডোর জব না বেছে সেফ ডেস্ক জব এর দিকে ঝুঁকুন।
  • যে কোম্পানিতে জয়েন করবেন তার হিস্ট্রি, কার্যক্রম, ব্যবস্থাপনা ও সহকর্মী ইত্যাদি জেনেই যোগদান করবেন।
Biswarup Parichha

Recent Posts

মুখের রোমকূপ বা পোরস ঢাকার মেকাপ টিপস

আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…

2 বছর ago

থুঁতনির জেদি ব্ল্যাকহেডস তোলার ৬টি উপায়

পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…

2 বছর ago

মেয়েরা বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় যে ১০টি জিনিস অজান্তেই করে

আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…

2 বছর ago

ঘরের দেওয়ালে নোনা ধরছে? দূর করুন ঘরোয়া কৌশলে

বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…

2 বছর ago

ময়েশ্চারাইজার কেন এত উপকারি ত্বকের যত্ন নিতে? ব্যবহারের সঠিক নিয়ম।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…

2 বছর ago

নারকেল তেল দিয়ে ত্বকের যত্ন! উজ্জ্বল, চকচকে ত্বকের গোপন রহস্য!

প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…

2 বছর ago