রান্নাঘরে রান্না করার সময় তেল, মশলা, বাষ্প লেগে জানালা খুব তাড়াতাড়ি নোংরা হয়ে যায়। পুরো কিচেন ঝকঝকে পরিষ্কার থাকলেও ময়লা জানালা পুরো কিচেনের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। রান্না করার পরে কারোর পক্ষেই জানালা পরিষ্কারের ধৈর্য্য থাকেনা বা করা সম্ভব হয় না। কেউ কেউ হয়তো কিচেন উইন্ডো পরিষ্কার করার সঠিক নিয়মটাই জানেন না। তাই আজকে আলোচনা করবো রান্নাঘরের জানালা চকচকে করার টিপস নিয়ে। কয়েকটি ধাপে কিচেন উইন্ডো পরিষ্কারের কাজটি করতে হবে।
রান্নাঘরের জানালা থাকে সবচাইতে বেশি নোংরা, এই ময়লা সহজে পরিষ্কার করার জন্য সূর্যের আলো দরকার। কারণ সূর্যের আলোতে ময়লার পরিমাণ পরিষ্কার বোঝা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত সূর্যালোক জানালায় প্রতিফলিত হলে ময়লার ধরণ ঠিকমতো বোঝা যায় না। তাই সম্পূর্ণ পরিষ্কার মুশকিল হয়ে যায়৷ সুতরাং মেঘলা দিন অথবা রোদ কড়া না এমন দিনে জানালা পরিষ্কার করলে ভালো হবে।
পরিষ্কারের পূর্বে পর্দা সরিয়ে ফেলতে হবে। জানালার কাছাকাছি এগজস্ট ফ্যান থাকলে সেটাও খুলে নেয়া ভালো। জানালায় ঝুল, মাকড়সার জাল ইত্যাদি ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা ঝুল ঝাড়ু দিয়ে ঝেড়ে ফেলবেন।
এই ধাপে আপনি ঘরোয়াভাবে ক্লিনিং সলিউশন তৈরি করে নিবেন। ছোট একটি বালতিতে কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে ২ টেবিল চামচ হোয়াইট ভিনেগার মিশিয়ে নিলেই তৈরি উইন্ডো গ্লাস ক্লিনার। তবে ময়লা বেশি হলে এর সাথে ২ টেবিল চামচ অ্যামোনিয়া মিশিয়ে নিবেন। অ্যামোনিয়া মেশানোর আগে অবশ্যই গ্লাভস পরে নিবেন। বিনেগার-অ্যামোনিয়ার পানি ব্যবহারের সময়ে কটু গন্ধ হতে পারে, তবে বেশিক্ষণ গন্ধ থাকবে না।
ভিনেগারের ঝামেলা করতে না চাইলে সাবান-পানি ব্যবহার করতে পারেন। আগের মতোই উষ্ণ পানিতে লিকুইড ডিশওয়াশিং এজেন্ট মিশিয়ে নিবেন। তবে সাবান বেশি মেশাবেন না, নাহলে জানালায় সাবানের দাগ লেগে থাকবে। অনেকে ঠান্ডা চা দিয়েও রান্নাঘরের জানালা পরিষ্কার করে থাকেন। এক মগ ঠান্ডা ব্ল্যাক টি তে কিচেন টাওয়েল ডুবিয়ে জানালা মুছবেন, পরে শুকনো নরম কাপড় দিয়ে শেষে আবার মুছবেন।
জানালা পরিষ্কার করার জন্য সঠিক কাপড় বেছে নেয়া খুব জরুরি। নরম সুতি কাপড় বা নন-অ্যাব্রেসিভ স্ক্রাবার ব্যবহার করে জানালা মুছতে পারেন। তবে স্ক্রাবার বা স্পঞ্জের চাইতে সুতি কাপড় বেটার অপশন। কারণ স্ক্রাবারের ঘষায় জানালার কাচে দাগ পড়তে পারে। কিন্তু সুতি কাপড়ে এ ধরণের সমস্যা হবে না। চাইলে সুতি কাপড়ের বদলে মাইক্রোফাইবার কাপড় ব্যবহার করতে পারেন।
জানালার কাচ পরিষ্কার করার আগে গরাদ থেকে পরিষ্কার করা শুরু করুন। সলিউশনে কাপড় ভিজিয়ে ময়লা পরিষ্কার করুন। তবে তেল চিটচিটে হলে শুধু ভেজা কাপড়ে ময়লা উঠবে না। সেক্ষেত্রে ক্লিনিং সলিউশনটি স্প্রে বোতলে ভরে দাগের উপর স্প্রে করে কয়েক মিনিট রাখবেন। দাগ নরম হয়ে আসলে সলিউশনে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছবেন। যদি জানালায় গ্রিল না থাকে তাহলে এই স্টেপটি বাদ দিতে পারেন।
গ্রিলের পরে ময়লা পানি বদলে নতুন করে ক্লিনিং সলিউশন বানিয়ে নিন। যদি গ্রিলের মতো কাচেও জেদি দাগ থাকে, তাহলে একটু সলিউশন দাগের উপর স্প্রে করে কিছুক্ষণ রেখে দিবেন। তবে অনেকটা স্প্রে করবেন না। এতে করে সলিউশন বেয়ে বেয়ে পড়ে কাচের উপর দাগ ফেলবে। তারপর সলিউশনে কাপড় ভিজিয়ে ঘষে তুলে ফেলবেন।
মোছার আগে কাপড়টা ভালো করে নিংড়ে নিবেন। নয়তো সাবান পানি চুয়ে চুয়ে শরীর আর রান্নাঘর নোংরা হয়ে যাবে। জানালার কাচ খুব জোরের সাথে ঘষবেন না, যতটুকু প্রেসার দরকার ততটুকুই অ্যাপ্লাই করবেন। আর কাচ পুরোটা লম্বালম্বিভাবে বা আড়াআড়িভাবে না ঘষাই ভালো। একটু ভিন্নভাবে ঘষলে ময়লা তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হবে। তাই কাচ মোছার সময়ে S শেপে কাপড় ঘষবেন। জানালার কোণার দিকগুলোতে উল্টো S এর মতো মোশনে ঘষবেন।
S মোশনের বদলে সার্কুলার মোশনেও কাচ পরিষ্কার করতে পারেন। ছোট ছোট সার্কুলার মোশনে মুছলে হাতের পেশির ব্যায়াম হয়, যা হাত থেকে বাড়তি মেদ ঝরাতে সাহায্য করবে। তার সাথে জিমের ঝামেলাও কমবে। সার্কুলার মোশনের পর প্রথমে লম্বালম্বিভাবে এরপরে আড়াআড়িভাবে কাচ মুছে ফেলবেন।
মোছার সময়ে বড় অংশ করে মুছবেন না। ছোট ছোট অংশ করে পরিষ্কার করবেন। একবারে অনেকটা জায়গা মুছতে গেলে ভালো পরিষ্কার হবে না। জানালার কাচের ভিতরের দিকটা পরিষ্কারের পর বাইরের দিকটাও একইভাবে পরিষ্কার করবেন। একবারে পরিষ্কার না হলে প্রয়োজনে কয়েকবার পরিষ্কার করবেন।
কাচের মতো করে জানালার ফ্রেমও সাবান পানি ও কাপড় ব্যবহার করে মুছে ফেলুন। যদি পরিষ্কার করার পরেও ফ্রেম ম্যাড়মেড়ে দেখায় তাহলে হোয়াইট টুথপেস্ট বা ক্রিম-বেইজড ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন।
ভেজা কাপড় দিয়ে মোছার পরে সবশেষে শুকনো সুতি বা মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে পুরো জানালা আবারও মুছবেন। এতে লেগে থাকা সাবান পানি মুছে যাবে৷ যতোক্ষণ না পর্যন্ত সাবান পানি পরিষ্কার হচ্ছে ততোক্ষণ পর্যন্ত শুকনো কাপড় দিয়ে মুছবেন।
জানালার কাচ পরিষ্কারের জন্য ভেজা খবরের কাগজের ব্যবহার সম্পর্কে হয়তো শুনে থাকবেন। সত্যিকার অর্থে খবরের কাগজ কাচ সম্পূর্ণ পরিষ্কার করতে পারেনা। উল্টো ভেজা কাগজের কণা কাচে লেগে থাকার সম্ভাবনা থাকে। পেপার টাওয়েল বা টিস্যুও ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও কাজ শুরু করার আগে পানি পরীক্ষা করে নিবেন। ব্যবহৃত পানিটা যদি হয় কলের, তাহলে তাতে থাকবে প্রচুর রাসায়নিক পদার্থ ও কেমিক্যাল, যা রান্নাঘরের জানালার তেল চিটচিটে ময়লা পরিষ্কার করতে অক্ষম। এক্ষেত্রে যদি ডিস্টিলড ওয়াটার ব্যবহার করতে পারেন তাহলে ভালো হয়। প্রতি ২-৩ মাস পরপর রান্নাঘরের জানালা পরিষ্কার করবেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…