সুন্দর চুল পাবার আকাঙ্খা সবারই আছে। ঘন মোলায়েম ঝলমলে রেশমী চুল কার না ভালো লাগে! কিন্তু চুল ঘন হচ্ছে না এই অভিযোগ একদম কিশোরী থেকে শুরু করে সকলেরই। চুল নিয়ে আমাদের আক্ষেপের শেষ নেই।
চুল পাতলা, ঘন হচ্ছে না, নতুন চুল উঠছে না – আরো কত কি! এদিকে অমুক ট্রিটমেন্ট আর তমুক রাসায়নিক নানা দ্রব্যাদি ব্যবহার করে চুল ঘন করতে যেয়ে অনেকে করে ফেলেন আরো নষ্ট। অথচ চুল ঘন করার জন্য যত্নের পাশাপাশি দরকার ধৈর্য, সুস্থতা আর খাদ্যাভাস ঠিক করা। ব্যাস! চলুন জেনে নেই চুল ঘন করতে আসলে কি দরকার –
আপনি চুল ঘন করতে চাইলে সবার আগে নিজের খাদ্যাভাস ঠিক করতে হবে। চুল শরীরের অংশ। তাই চুলকে ঘন ও মজবুত করতে চাইলে আপনাকে খেতে হবে পুষ্টিকর খাবারও। ডিম, দুধ, মাছ, বাদাম, পালংশাক, গাজর ও অন্যান্য শাকসবজি ও পুষ্টিকর ফলফলাদি খেতে হবে বেশি বেশি।
ডিম ও দুধে থাকা প্রোটিন চুলের স্বাস্থ্য ও গ্রোথ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। মাছ, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবারে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের ভেঙে যাওয়া, আগা ফেটে যাওয়া প্রতিরোধ করে। শাকসবজি ও ফলমূলে থাকা ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মাথার স্ক্যাল্প ভালো রাখে ও চুল পরা কমায়।
চুল ঘন করতে হেয়ার ম্যাসাজ খুবই উপকারী। গোসলের সময় ভেজা স্ক্যাল্প আলতো হাতে ম্যাসাজ করতে পারেন। শুকনো মাথার স্ক্যাল্পেও হালকাভাবে ম্যাসাজ করতে পারেন।
কখনোই জোরে জোরে ম্যাসাজ করবেন না, এতে চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাথার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজের ফলে স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, স্ক্যাল্পের স্নায়ুগুলো রিল্যাক্স হয়, স্ক্যাল্পের রোমছিদ্রগুলো খুলে যায়, খুশকি দূর হয়। নিয়মিত চুলে ম্যাসাজ করার ফলে চুল পরা কমে যায় এবং চুল ঘন ও সুন্দর হয়ে ওঠে।
মাথা ভর্তি ঘন ও রেশমী চুল পেতে নিয়মিত শ্যাম্পুর আগে স্ক্যাল্পে পেঁয়াজ ঘষুন অথবা পেঁয়াজের রস ম্যাসাজ করুন। শ্যাম্পু করার এক ঘন্টা আগে চুলের গোড়ায় পেঁয়াজের রস ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন, পরে ধুয়ে ফেলুন।
পেঁয়াজে থাকা পটাশিয়াম, সালফার, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ও মিনারেল নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে ও পুরনো চুলের অস্বাভাবিক ঝরে পরা কমায়। পেঁয়াজের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-সেপটিক গুণ স্ক্যাল্পের খুশকি, উঁকুন, ঘামাচি এসব দূর করে চুলের গোড়াকে আরো মজবুত ও সবল করে। ফলে নিয়মিত ব্যবহারে চুল ঘন হয়ে ওঠে খুব দ্রুতই।
চুল ঘন করতে ডিমের কোনো জুড়ি নেই। একটি ডিমের সাদা অংশ ফেটিয়ে তাতে কিছুটা লেবুর রস দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি মাথার স্ক্যাল্প থেকে চুলের আগা পর্যন্ত আলতো হাতে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন।
আধ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। ডিম একটি হাইলি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এতে রয়েছে প্রোটিন, আয়রন, সালফার, ফসফরাস, জিংকসহ আরো নানা রকম পুষ্টি উপাদান। নিয়মিত ডিমের প্যাক ব্যবহারে তাই চুল পরা কমার পাশাপাশি নতুন চুল গজায় প্রচুর পরিমানে।
তেল চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতা দূর করে চুলকে প্রাণবন্ত করে তোলে। তবে অন্যান্য তেলের তুলনায় ক্যাস্টর অয়েল চুল ঘন করতে বেশি উপকারী। সামান্য ক্যাস্টর অয়েলের সাথে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা যেই তেল আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন সেটা মিশিয়ে সামান্য গরম করে নিন।
এবারে পুরো স্ক্যাল্পে বিলি কেটে কেটে এই তেল লাগিয়ে নিন। ঘন্টাখানেক পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। ক্যাস্টর অয়েলে থাকা ভিটামিন ও ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের বৃদ্ধি বাড়িয়ে দেয়, নষ্ট হয়ে যাওয়া ফলিকল রিপেয়ার করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
চুলের খুশকি, জট, অকালপক্বতা ও ঝরে যাওয়া রোধে মেহেদী খুবই কার্যকরী। মেহেদী পাতা পরিষ্কার করে বেটে নিন। ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করলেও চলবে। সম্ভব হলে কয়েকটা জবা ফুল মেহেদী পাতার সাথে দিয়ে বেটে নিন। অথবা বাটা মেহেদীর সাথে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিন।
বাটা মেহেদী পাতা পুরো স্ক্যাল্পে ঘষে ঘষে লাগিয়ে ফেলুন। তিন থেকে চার ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। মেহেদী মাথার স্ক্যাল্প ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে, স্ক্যাল্পের আর্দ্রতা ঠিক রাখে, খুশকি ও চুলকানি দূর করে চুলের গোড়া শক্ত করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
মাথার স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে চুল পরবেই। নতুন চুলও কম গজাবে। তাই স্ক্যাল্প ঠিক রাখতে প্রচুর পানি পান করুন। পানি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, ত্বকে টক্সিন জমতে দেয় না, স্ক্যাল্পের কোষে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
ফলে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে, চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও চুল পরা কমে যায়। শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে চুল পরা বেড়ে যায়। তাই চুল ঠিক রাখতে প্রচুর পানি পান করুন।
এই টিপসগুলো ফলো করুন আর পেয়ে যান ঘন ঝলমলে দীঘল কালো চুল কোনোরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…