প্রেগনেন্সি নিশ্চিত করতে কি কি পরীক্ষা করবেন? পজিটিভ হলে উপায়?
প্রত্যেক মহিলার জীবনে প্রেগনেন্সি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অনন্য অধ্যায়। সন্তানের জন্ম দেওয়াকে কেন্দ্র করে নানা পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি থাকে। কিন্তু অনেকসময় অসুরক্ষিত ঘনিষ্ঠতা জন্ম দেয় অনাকাঙ্ক্ষিত দুশ্চিন্তার।
পিরিয়ড মিস হলেই কাপলরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরপর কি? অঘটন শনাক্ত করবার রাস্তা পান না। তবে এবার আর সে চিন্তা করতে হবেনা। এই সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন লেখাটা পড়লে।
যে সময়ে করবেন টেস্ট:
অনেকে তাড়াহুড়ো করে সেক্সের পরপরই টেস্ট করেন। কিন্তু সেটা ঠিক না। নিয়মিত পিরিয়ড সাইকেলে ঋতুস্রাব বন্ধ হবার ২ সপ্তাহের পর এই টেস্ট করতে পারেন।
কনসিভ করার পর শরীর পরিপূর্ণ হতে অন্তত দুই সপ্তাহ মতো টাইম লাগে। তাই শুরুতে করলে টেস্ট রেজাল্ট নেগেটিভ ও পেতে পারেন যেহেতু ডিম্বাণু নিষিক্ত হতে সময় লাগে।
যদি মনে হয় আপনি প্রেগনেন্ট কিন্তু ফলাফল নেগেটিভ আসে তবে মিনিমাম দুসপ্তাহের পর আবার টেস্ট করেন।
কিভাবে করবেন টেস্ট:
প্রথমে প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট নিন। এবার সকালবেলার প্রথম ইউরিন এর নমুনা একটি কাপের মধ্যে রাখুন ও তাতে স্ট্রিপটি ডুবিয়ে রাখুন ৫-১০সেকেন্ড।
অথবা ড্রপারে করে ইউরিন এর নমুনা নিয়ে স্ট্রিপের উপরে দিন ও অপেক্ষা করুন পাঁচ মিনিট মতো।
রেজাল্ট পজিটিভ হলে স্ট্রিপের রং চেঞ্জ হবে ও একটা বা দুটো সরলরেখার লাইন আসবে সাথে প্লাস ও মাইনাস সাইন। যার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হয়ে যাবেন আপনি গর্ভবতী কিনা!
মূত্রে হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রপিন হরমোনের উপস্থিতি গর্ভধারণের সুনিশ্চিত সূচক হিসাবে গৃহীত হয়। কারণ প্রেগনেন্ট মহিলা ছাড়া কারোর দেহে এই হরমোন মেলে না।
প্রেগনেন্সির লক্ষণ:
আচমকাই পেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা উঠতে পারে। পিরিয়ড নিয়মিত হবেনা। এটি প্রাথমিক প্রেগনেন্সির লক্ষণ।
স্তনে রক্তসঞ্চালন বেড়ে যাবে। আগের চেয়ে ভারী মনে হবে। ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে স্তনের আকৃতি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে।
খাবারে অনীহা, বমিবমি ভাব, ঘন ঘন বাথরুম ছোটা, অল্পসময়ে ক্লান্তি আসা এবং সামান্য বিষয়ে মুড সুইং হতে পারে।
প্রেগনেন্সি টেস্টের ঘরোয়া উপায়:
আনুমানিক ৬০০০বছর আগে মানুষের প্রস্রাব থেকে গর্ভাবস্থা যাচাই এর উপায় আবিষ্কৃত হয় মিশরে। কিন্তু এই পরীক্ষার আধুনিক সংস্করণ তো যেকোনো ক্লিনিকে পাওয়া যাবে। বাড়িতেও কিছু উপায় আছে যাতে খুব সহজেই নির্ধারিত হবে আপনি প্রেগনেন্ট কিনা!
চিনি:
চিনি সবসময়ই একটি বিশ্বস্ত পদ্ধতি। একটি পাত্রে এক টেবিলচামচ চিনি ও সকাল বেলার প্রথম ইউরিনের নমুনা কিছুটা মিশিয়ে নিন।
এবার কিছুসময় অপেক্ষা করুন। যদি মূত্র সম্পূর্ণ মিশে যায়, তবে আপনি গর্ভবতী নন।
যদি মিশ্রণ জমাট বাঁধে তবে আপনি সন্তানসম্ভবা।
টুথপেস্ট:
একটি সহজসরল উপায় হলো ঘরে রাখা টুথপেস্ট। একটি পাত্রে সকালের ইউরিন ও অল্প টুথপেস্ট নিয়ে ভালোভাবে মিক্স করুন।
কিছুক্ষন পর যদি মিশ্রণ হঠাৎ নীলবর্ণ ধারণ করে বা গাঁজিয়ে ফেনা ওঠে তবে আপনি গর্ভবতী।
খেয়াল রাখবেন যাতে টুথপেস্ট এর রং সাদা হয়।
সাবান:
সাবানের গুঁড়োর সাথে জল মিশিয়ে একটা সল্যুশন বানিয়ে ফেলুন। তাতে সকালের মূত্র যোগ করে দিন।
মিশ্রনে যদি বুদবুদ উৎপন্ন হয় তবে গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা প্রবল।
তবে এই পরীক্ষাটি একাধিক বার করা প্রয়োজন নিশ্চিত হতে।
বেকিং সোডা:
২ টেবিলচামচ বেকিং সোডা নিয়ে তার সাথে এক টেবিলচামচ মতো ইউরিন মিশিয়ে নিন।
কয়েকমিনিট অপেক্ষা করুন। বুদবুদ সৃষ্টি হলে আপনি প্রেগনেন্ট।
মাস্টার্ড পাউডার:
একটি জলপূর্ণ বালতি নিয়ে তাতে দু কাপ পরিমাণ সর্ষের গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। ভালো করে নাড়িয়ে গুলিয়ে দিন। ২০মিনিট মতো অপেক্ষা করার পর সেই জল দিয়ে স্নান করুন। এটা আপনার পিরিয়ড করাতে সাহায্য করবে ৪-৫ দিনের মাথায়। যদি না হয় তবে আপনি প্রেগনেন্ট।
টেস্ট পজিটিভ হলে যা করবেন:
টেস্ট বাড়িতে পজিটিভ হলে সবার আগে যে কাজটি করবেন তা হলো কোনো অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ বা গাইনকোলজিস্ট এর কাছে গিয়ে পরামর্শ করা ও অল্ট্রাসোনিক টেস্ট করিয়ে ফেলুন।
প্যানিক একদম করবেন না এবং রেজাল্ট পজিটিভ এলে গর্ভনিরোধক পিল বা এন্টিবায়োটিক নেবার চেস্টা করবেন না।
গর্ভধারণ অবাঞ্ছিত হলে এবরশন এর পথ বাছুন। তবে নিজের শরীরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তবে করুন এবং ডাক্তার এর কথা মেনে চলুন।
ধূমপান মাদকদ্রব্যের সেবন বন্ধ করুন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বেবির জন্য সবার আগে দরকার।
অনেকসময় মেয়েদের জার্মসেল টিউমার বা ডিজজারমিনোমা নামে গর্ভাশয়ের টিউমার হয় তাতেও রেজাল্ট পজিটিভ আসে। কারণ এইচ সি জি লেভেল খুব বেশি থাকে এইসময়। তাই সেক্ষত্রে বিভ্রান্ত হবেন না এটা ভেবে যে আপনি প্রেগনেন্ট।
আপনি ঠিক করুন নতুন প্রাণকে পৃথিবীর আলো দেখাতে আপনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে কতটা প্রস্তুত? দায়িত্ব বহন করতে রাজি হলে পরিবারের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।
ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর ২৪ তারিখ পিরিয়ড শেষ হয় এবং জানুয়ারির ৩ তারিখে শারীরিক সম্পর্ক করার সময় যোনিতে বীর্য যায় কিন্ত কোনো জন্মনিরোধক পিল নেওয়া হয়নি।আর মাসিক নিয়মিত হয়, এবং নিদিষ্ট সময়ের দুদিন আগে বা পরে হয় মূলত।কিন্তু জানুয়ারির ১৬ তারিখ বা ২০ তারিখেও হয়নি পিরিয়ড এখনো।এমতাবস্থায় প্রেগন্যান্ট হয়েছে কিনা বুঝা যাবে কি?নাকি পিরিয়ডের জন্য অপেক্ষা করতে হবে?
View Comments
ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর ২৪ তারিখ পিরিয়ড শেষ হয় এবং জানুয়ারির ৩ তারিখে শারীরিক সম্পর্ক করার সময় যোনিতে বীর্য যায় কিন্ত কোনো জন্মনিরোধক পিল নেওয়া হয়নি।আর মাসিক নিয়মিত হয়, এবং নিদিষ্ট সময়ের দুদিন আগে বা পরে হয় মূলত।কিন্তু জানুয়ারির ১৬ তারিখ বা ২০ তারিখেও হয়নি পিরিয়ড এখনো।এমতাবস্থায় প্রেগন্যান্ট হয়েছে কিনা বুঝা যাবে কি?নাকি পিরিয়ডের জন্য অপেক্ষা করতে হবে?
দয়া করে উত্তর দিবেন।
ধন্যবাদ।