স্বাভাবিক আবহাওয়ার চাইতে অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডার সময়টাতে ঘরে পোকামাকড়ের উৎপাত বেশি হয়। আর আবাসস্থলে পোকামাকড়ের প্রবেশ মানে রোগজীবাণুর বিস্তার ও জিনিসপত্রের ক্ষতি। বাজারের ওষুধের চাইতে ঘরোয়া উপায়ে এসব পোকামাকড়ের দমন করা শতভাগ সম্ভব। আজকের আর্টিকেল থেকে পাবেন ঘর থেকে পোকা মাকড় দূর করার ১০টি কার্যকরী টিপস। চলুন জেনে নেই কি কি জিনিস কিভাবে ব্যবহার করলে বাড়ি হবে পোকামুক্ত।
ঘর থেকে পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য নিমপাতা সবচাইতে কার্যকরী এবং বহুলভাবে ব্যবহৃত একটি উপাদান। এর এমনই আশ্চর্য গুণ যে পোকামাকড়কে পাততাড়ি গুটিয়ে পালাতে বাধ্য করে। নিমপাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে ছোট ছোট পুঁটলি করে নিন। এবারে পুঁটলিগুলো ঘরের কোণায়, আলমারিতে, তোষকের নিচে, রান্নাঘরের কোণায় রেখে দিন। কাজ হয়ে যাবে। নিমের তেলও ছিটিয়ে দিতে পারেন পোকামাকড়ের আসা-যাওয়ার রাস্তায়।
নিমপাতার মতো পুদিনাপাতাও পোকা দূর করতে বেশ উপকারী। পুদিনাপাতা মিহি কুচি করে বিছানার চারপাশে ছড়িয়ে দিন। কাপড়ের ভাঁজে পুদিনাপাতা রাখলে পোকার আক্রমণ কমবে, সাথে কাপড়ে পাবেন সুন্দর গন্ধ। আবার ঘরের প্রতিটি কোণায় পুদিনাপাতা রাখলে এক সপ্তাহের মধ্যে ইঁদুরের উপদ্রব কমবে। ২ কাপ পানিতে ৮ ফোঁটা পিপারমিন্ট এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে ঘরের কোণাগুলোতে স্প্রে করুন। চাইলে সাথে ১ কাপ ভিনেগারও মেশাতে পারেন। পিপারমিন্ট তেলের তীব্র গন্ধ পোকামাকড় সহ্য করতে পারে না।
ভিনেগার ও পানি দিয়ে খুব সহজে পোকার বংশ ধ্বংস করতে পারবেন। এর টক গন্ধ পোকার কাছে বিষের মতো। একটি স্প্রে বোতলে দুই ভাগ পানি ও এক ভাগ ভিনেগার মিশিয়ে নিন। তারপর মিশ্রণটি ঘরের আনাচে-কানাচেতে স্প্রে করুন। অথবা শুকনো কাপড় এই মিশ্রণে ভিজিয়ে ঘরের কোণাগুলো ও মেঝে মুছে দিতে পারেন। তাহলে ময়লাও পরিষ্কার হলো আবার পোকামাকড়ও ঠেকানো গেলো।
বেকিং সোডা ন্যাচারাল ইনসেক্ট রিপেলেন্ট নামে পরিচিত। তবে পোকামাকড় দমনের জন্য বেকিং সোডার ব্যবহার খুব সাবধানে করতে হয়। নয়তো সেটা বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের ক্ষতি করতে পারে। যেসব জায়গা দিয়ে পোকামাকড় ঘরে প্রবেশ করতে পারে সেসব জায়গায় বেকিং সোডা ছিটিয়ে রাখুন। তিন-চারদিন পরে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা ঝাড়ু দিয়ে সোডা পরিষ্কার করে ফেলুন। তারপর ঘরের অন্যান্য স্থানে বেকিং সোডা ছিটিয়ে একইভাবে ব্যবহার করুন। আস্তে আস্তে পোকার বাস বাড়ি থেকে উঠে যাবে।
পোকামাকড়ের মধ্যে তেলাপোকা ও পিঁপড়ার উপদ্রব সবচেয়ে বেশি বিরক্তিকর। রান্নাঘরে থাকা মরিচের গুঁড়া দিয়ে এই দুই জাতের পোকাকে একসাথে তাড়ানো সম্ভব। পিঁপড়ার চলাচলের রাস্তায় মরিচ গুঁড়া বা গোলমরিচ গুঁড়া দিয়ে একটি লাইন তৈরি করে দিন। ঝাঁজের চোটে এই রাস্তা বদলে অন্য পথে চলে যাবে।
তেলাপোকার জন্য গোলমরিচের পেস্ট তৈরি করে নিন। পরিমাণমতো গোলমরিচ গুঁড়া, পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, এবং পানি একসাথে মিশিয়ে নিন। তবে মিশ্রণটা বেশি ঘন করা যাবে না, হালকা ঘন করতে হবে। এবারে মিশ্রণটি স্প্রে বোতলে ভরে নিন। তেলাপোকা নজরে আসামাত্রই টোটকাটি স্প্রে করবেন। এই লিকুইডটি তেলাপোকার সাথে সাথে অন্য পোকামাকড়ের হাত থেকেও ঘরকে রক্ষা করবে।
শসাও কিন্তু তেলাপোকা দূর করতে পারে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি। শসা কাটার সময়ে আমরা দুইপাশ থেকে কিছুটা কেটে ফেলে দেই। এগুলো একটু তেঁতো হয় বলেই ফেলে দেয়া। কিন্তু এই তেঁতো অংশ না ফেলে দিয়ে সংরক্ষণ করুন। ঘরের কোণায়, কাপবোর্ড ও আলমারির ভিতরে শসার এই টুকরোগুলো রেখে দিন। এতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান তেলাপোকার চক্ষুশূল। তাই এসব জায়গায় তেলাপোকা দ্বিতীয়বার পা ফেলার চিন্তা করবে না।
লেবুর রস পোকামাকড়ের বাসস্থান ও চলাচলের রাস্তায় ফেলে রাখুন। টক গন্ধ ও স্বাদের কারণে ওদের আত্মারাম খাঁচাছাড়া হতে বেশি দেরি লাগবে না। পিঁপড়া সাধারণত লাইন ধরে চলাফেরা করে। তাই পিঁপড়ার লাইনে লেবুর রস ছিটিয়ে দিন। পিঁপড়ার উপদ্রব কমে যাবে অল্প কয়দিনেই। পিঁপড়ার বাসাতেও খানিকটা লেবুর রস ঢেলে দিতে পারেন। একইভাবে তেলাপোকার বাসস্থানেও লেবুর রস দিয়ে দিন। যেগুলো আছে সেগুলো তো মরবেই, নতুন করে তেলাপোকা আপনার ঘরে ঘাঁটি গাড়ার সাহস পাবে না।
ঘরের বিভিন্ন জায়গায় দারচিনি, লবঙ্গ, কালিজিরা ছিটিয়ে রাখুন। পোকামাকড় পালাবে শীঘ্রই। দারচিনি ও লবঙ্গ মূলত তেলাপোকা তাড়ানোর মহৌষধ। তার পাশাপাশি এগুলো আপনার ঘরের জন্য ন্যাচারাল এয়ার ফ্রেশনার হিসেবে কাজ করবে। পোকামাকড়ের উপদ্রব বেশি এমন জায়গাগুলোতে কালিজিরা দিয়ে রাখুন। কয়দিন পর পর অবশ্যই কালিজিরা পাল্টে দিবেন।
আলমারি, ওয়ারড্রোবে রাখা কাপড়কে পোকায় কাটা থেকে বাঁচাতে ন্যাপথলিন ব্যবহার করুন। কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে, আলমারির তাকের কোণায়, ড্রয়ারের প্রতিটি কোণায় একটি করে ন্যাপথলিন দিয়ে রাখুন। উইপোকা দমন করতে ন্যাপথলিন কিন্তু দারুণ কাজে দেয়। ন্যাপথলিন গুঁড়ার সাথে লিকুইড প্যারাফিন মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করে নিন। এবারে দেয়ালের যেখান থেকে উইপোকা বের হয় সেখানে মিক্সচারটি ব্যবহার করুন।
পোকামাকড় দমন করার জন্য বাজারে অনেক কীটনাশক কিনতে পাওয়া যায়। তবে সেগুলোর সঠিক ব্যবহার না জানলে কিন্তু পোকামাকড় দমন করা কঠিন হয়ে যায়। পোকামাকড় রাতের অন্ধকারে নিরিবিলি পরিবেশেই হামলা করে। তাই এসব রাসায়নিক পদার্থ রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করা উত্তম। ঘরের মেঝেতে রাসায়নিক পড়ে থাকলে সকালে উঠে যতদ্রুত সম্ভব পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
তেলাপোকা মারার জন্য বরিক অ্যাসিড পাউডার নামে একধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। এই পাউডারের সাথে কিছুটা চিনি মিশিয়ে তেলাপোকার বাসায় ঢেলে দিবেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তেলাপোকা বাসা ছেড়ে চলে যাবে। ওষুধের বোতলে ছোট প্যাকেটে সিলিকা জেল থাকে। এই সিলিকা জেল দিয়েও পোকামাকড় দমন করতে পারবেন।
জিঙ্ক ফসফাইড ট্যাবলেট গুঁড়া করে পাউরুটিতে লাগিয়ে ইঁদুরের চলাচলের রাস্তায় রেখে দিন। বিষাক্ত পাউরুটির টুকরা মুখে দেয়ামাত্রই ইঁদুর পটল তুলবে। তবে বিষ মাখানো পাউরুটি একবারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। পিঁপড়ার রাস্তায় বেবি পাউডার ছিটিয়ে রাখলে পিঁপড়ার উপদ্রব কমতে বাধ্য।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…