শ্রাবণ মাস মানেই আমাদের মনের ইচ্ছা পূরণের মাস। মহাদেব শিব এই সময়ে আমাদের প্রতি অতি সন্তুষ্ট থাকেন। তাই এই সময়ে নিষ্ঠা নিয়ে মহাদেবকে ডাকলে আর কিছু ছোট ছোট কাজ করলে আপনার যাবতীয় ইচ্ছে পূরণ হতে বাধ্য। জানতে চান এই মাসে আপনি ভোলা মহেশ্বরের থেকে আশীর্বাদ পেয়ে জীবনে কী কী করতে পারেন? তাহলে লেখাটি পড়ে ফেলুন।
শ্রাবণ মাস আর মহাদেবকে নিয়ে পুরাণে একটি কাহিনী আছে। আমরা সবাই সমুদ্র মন্থনের কাহিনী জানি। আমরা জানি সমুদ্র মন্থনের ফলে উত্থিত হলাহল বিষ গ্রহণ করার জন্য কেউ রাজী হচ্ছিলেন না। তখন জগতকে এই বিষের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে শিব এই বিষ তাঁর কণ্ঠে ধারণ করেন। কিন্তু এতে তাঁর শরীর অত্যন্ত গরম হয়। সেই তাপ আর বিষের তীব্র জ্বালা তিনি কিছুতেই সহ্য করতে পারছিলেন না।
সেই সময়ে ব্রহ্মা তাঁর কমন্ডলু থেকে দেবী গঙ্গাকে শিবের মস্তকে নিক্ষেপ করলেন। কারণ একমাত্র গঙ্গার মধ্যেই আছে সেই শীতলতা যা মহাদেবকে বিষের তীব্র যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করতে পারে। গঙ্গা মহাদেবের মস্তকে আসার পর মহাদেব শান্ত হন, স্বস্তি পান এবং এই সমগ্র ঘটনা ঘটে শ্রাবণ মাসে। মহাদেবের তৃপ্তির সঙ্গে শ্রাবণ মাস এভাবেই জুড়ে যায়। তাই বলা হয়, এই মাসে যারা মহাদেবের শুধু একটু গঙ্গাজল, না হলে এমনি জল দিয়ে অভিষেক করবেন, তাঁদের প্রতি মহাদেব পরম প্রীত হয়ে সকল মনের বাসনা পূরণ করবেন।
এই মাসে নিয়ম মেনে নিষ্ঠার সঙ্গে কিছু কাজ করলে আপনার মনের যাবতীয় জাগতিক ইচ্ছা পূরণ হবে।
সোমবার করে স্নান করে শুদ্ধ হয়ে শিবলিঙ্গে বটপাতা দিয়ে অভিষেক করুন। একটি বটপাতা ভালো করে ধুয়ে তাতে যতটুকু জল ওঠে সেটি মহাদেবের মাথায় দিন। ওই বটপাতা দিয়েই শ্রাবণ মাসের সব সোমবার জল দিন বাবার মাথায়। এতে আর্থিক উন্নতি ভালো হয়।
অনেকে চাকরীর জন্য চেষ্টা করছেন। অনেকে চাইছেন ব্যবসার উন্নতি হোক। তাঁরা ১০০ গ্রাম ধান নিন আর ৮টা বেলপাতা নিন। প্রত্যেক বেলপাতা শিবলিঙ্গে অর্পণ করার সময়ে সঙ্গে ধান দিন। অষ্টম বারে ধান যতখানি বাঁচবে সবটা দিয়ে দিন। এটিও শ্রাবণ মাসের বাকী সোমবারগুলো করুন। ভালো কাজ অবশ্যই পাবেন।
অনেক ওষুধ খাচ্ছেন, তাও রোগ কমছে না। ভগবান শিবের আশ্রয় নিন। না না, আমরা ডাক্তার দেখানো বা ওষুধ খেতে বারণ করছি না। সব চলবে নিয়ম করে। কিন্তু সঙ্গে ভগবানের আশীর্বাদ অবশ্যই দরকার নীরোগ জীবনের জন্য। ১০০ গ্রাম মাসকলাই আর বেলপাতা নিন ৮টা। আগের উপায়ের মতো এটিও করুন। প্রত্যেক বার একটা করে বেলপাতা দিন আর সঙ্গে অল্প মাসকলাই দিন মহাদেবের চরণে। আট বারে সম্পূর্ণ মাসকলাই শেষ হতে হবে। এটি শ্রাবণ মাসের সোমবারে করুন, দেখবেন মহামৃত্যুঞ্জয় মহাদেব আপনাদের সব রোগ থেকে মুক্ত করবেন।
খুব চিন্তা, রাতে ঘুম আসে না। হতাশা, ডিপ্রেশন সব চেপে বসছে আপনার ওপর। মহাদেবের ওপর সব ছেড়ে দিন। একটি অশ্বত্থ পাতা আর শিকড় নিন। এই পাতায় যতটুকু জল ওঠে তা দিন শিবলিঙ্গে। ওই পাতা দিয়েই শ্রাবণ মাসের সব সোমবার মহাদেবের অভিষেক করুন। আর শ্রাবণ মাস শেষ হয়ে গেলে শিবলিঙ্গের কাছে রাখা ওই শিকড় একটা কালো সুতোর সঙ্গে বেঁধে গলায় পরে নিন। এতে হতাশা দূর হবে আর আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবেন।
আপনি শিক্ষিত, খুব ভালো কাজ করেন, দেখতেও সুন্দর। তাও আপনার বিয়ে হচ্ছে না। কোনও না কোনও ভাবে বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। যাদের বিয়ে নিয়ে সমস্যা তাঁদের জন্য কিন্তু শ্রাবণ মাস পালন করা খুব দরকার। এই সময়ে পঞ্চামৃত দিয়ে মহাদেবের অভিষেক করুন। দুধ, দই, ঘি, মধু আর চিনি দিন শিবলিঙ্গে।
মনে রাখবেন, এই পাঁচটি জিনিস একসঙ্গে নয়, প্রত্যেক জিনিস শিবলিঙ্গে দেওয়ার পর একটু একটু জল দিয়ে তারপর পরবর্তী জিনিস দেবেন। তারপর ভালো করে শিবলিঙ্গ মুছে ৫টা বেলপাতা শিবলিঙ্গের মস্তকে, ২টি লম্বা যোনি অংশে আর একটি শিবলিঙ্গের নীচে দেবেন। তারপর আকন্দ, ধূপ, দীপ দিয়ে পুজো করবেন। অবশ্যই চালের নৈবেদ্য দেবেন। মনে রাখবেন, শুধু মহিলা নন, পুরুষরাও এই কাজ করতে পারেন।
আপনার সবই আছে, আলাদা করে চাওয়ার কিছু নেই। তখন শুধু জল দিয়ে মহাদেবের অভিষেক করুন। কথায় বলে, বেল, আকন্দ আর তোলা গঙ্গাজল, এতেই খুশি হন ভোলা মহেশ্বর। পারলে শ্রাবণ মাসে সম্পূর্ণ নিরামিষ খান। না হলে শুধু রবি আর সোমবারগুলো নিরামিষ খান আর মহাদেবের জলাভিষেক করুন। গঙ্গাজল হলে খুব ভালো, না হলে এমনি জল। উনি সন্তুষ্ট হবেন।
শিব আশুতোষ, তাই খুব বেশি কিছুর দরকার নেই। সামগ্রী কম হলেও চলবে, কিন্তু নিষ্ঠা এক বিন্দু কম হলে চলবে না। তাই ভক্তি ভরে বাবাকে ডাকুন আর উপরের সামান্য কিছু নিয়ম মেনে ওনার পুজো করুন। ভক্তের ভগবান মনের ইচ্ছা পূরণ করবেনই।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…