আমরা সবাই সুন্দর দেখতে লাগার জন্য গ্লোয়িং স্কিন চাই। কিন্তু গ্লোয়িং স্কিন শুধু সৌন্দর্যের কথাই বলে না, গ্লোয়িং স্কিন হল আমাদের স্বাস্থ্যবান ত্বকের আয়না। আর এই স্বাস্থ্যবান সুন্দর ত্বক আমরা পেতে পারি একমাত্র আয়ুর্বেদিক যত্নের মাধ্যমে। বাজারে পাওয়া কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি উপাদান সঙ্গে সঙ্গে উজ্জ্বলতা আনলেও কখনই তা অনেক দিন থাকে। তাই লঙ লাস্টিং বিউটির জন্য আমাদের আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ারের কাছে যেতেই হবে।
চন্দনের মধ্যে আছে অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান, যা আমাদের স্কিনের মধ্যে থাকা অশুদ্ধি দূর করে। ফলে ব্রণ বা ফোঁড়ার মতো কিছু হয় না। আমন্ড স্কিনে পর্যাপ্ত নিউট্রিয়েন্টের যোগান দেয়। ফলে স্কিন ভিতর থেকে সুন্দর হয়ে ওঠে।
৪ চামচ চন্দন গুঁড়ো, ২ চামচ আমন্ড পাউডার, ৩ চামচ নারকেল তেল।
তিনটি উপকরণ একটি পাত্রে নিয়ে স্মুদ পেস্ট বানিয়ে নিন। তারপর এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। অল্প শুকিয়ে আসলে ধুয়ে নিন। এটা সপ্তাহে তিনবার করতে পারেন।
হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টিসেপটিক উপাদান স্কিন ব্লিচ করে সুন্দর করে তোলে। চালের গুঁড়োর মধ্যে আছে এক্সফোলিয়েটিং উপাদান। এর পাশাপাশি চাল খুব ভাল স্কিন হোয়াইটনিং করতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে থাকা টম্যাটো স্কিন টোন নর্মাল করে।
২ চামচ হলুদ গুঁড়ো, ২ চামচ চালের গুঁড়ো, ২ চামচ টম্যাটোর রস।
তিনটি উপকরণ একটি পাত্রে নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। একটি স্মুদ পেস্ট তৈরি হবে। এই স্মুদ পেস্ট মুখে লাগিয়ে রেখে দিন ৩০ মিনিট। তারপর ধুয়ে নিন। এটি সপ্তাহে তিন থেকে চারবার করতে পারেন।
লেবু স্কিনকে ভিতর থেকে পরিষ্কার করে আর ব্রাইট করে তোলে। অ্যালোভেরা ফ্রি র্যাডিকেল হতে দেয় না। ফলে স্কিনের স্বাস্থ্য ভিতর থেকে মজবুত হয়।
৩ চামচ অ্যালোভেরার রস, ১ চামচ লেবুর রস।
একটি পাত্রে এই দুই উপকরণ মিশিয়ে নিন। এটি একটি ময়েশ্চারের মতো ব্যবহার করে রাতে শুতে যাওয়ার আগে মুখে মেখে নিন। সারা রাত রেখে দিন। তারপর পরের দিন মুখ ধুয়ে নিন। এটা আপনি চাইলে রোজ রাতে করতে পারেন। এক দিন ছাড়া ছাড়াও করতে পারেন।
কেশর স্কিনের মধ্যে খুব সুন্দর জেল্লা আনতে পারে। আর অলিভ অয়েল ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস এই দুই সমস্যা থেকেই মুক্তি দেবে।
অল্প কিছু কেশর, ২ চামচ অলিভ অয়েল, অল্প জল।
অল্প জলের মধ্যে কেশর ভিজিয়ে রাখুন। জলের রঙ যখন হলদে হয়ে আসবে তখন এর মধ্যে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ এবার একটি তুলোর বলের সাহায্যে মুখে লাগিয়ে নিন থুপে থুপে। ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৪ বার এটি অনায়াসে করতে পারেন।
এই তেল আমাদের ত্বকের থেকে সমস্ত দাগ তুলে দিতে পারে। নিয়ম করে ব্যবহার করলে স্কিন হয় মসৃণ আর টানটান।
কয়েক ফোঁটা কুমকুমাদি তেল।
হাতের তেলোর মধ্যে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে নিন। হাতের মধ্যে রাব করে মুখে মেখে নিন, হাল্কা হাতে মুখের মধ্যে রাব করুন। ২০ মিনিট রেখে দিন। তারপর উষ্ণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে তিন দিন এটি ব্যবহার করলে খুব ভাল ফল পাবেন।
নিম যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ি এই সবের থেকে স্কিনকে রক্ষা করে আর স্কিনের রুক্ষ ভাব দূর করে, তেমনই তুলসী স্কিনের মেটাবলিজম খুব সুন্দর বজায় রাখে।
১০টা তুলসী পাতা, ১০টা নিমপাতা, অল্প গোলাপ জল।
তুলসী আর নিম ভাল করে একসাথে পেস্ট করে নিন। এর সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। সব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করুন আর ৪৫ মিনিট মতো রেখে দিন। তারপর ধুয়ে নিন। এক দিন ছেড়ে ছেড়ে ব্যবহার করতে পারেন।
গুজবেরি খুব সুন্দর করে স্কিন টোন লাইট করে। পেঁপের মধ্যে আছে এক্সফোলিয়েটিং উপাদান। খুব সুন্দর ভাবে পেঁপে ভিতর থেকে ময়লা দূর করতে পারে আর ডেড সেল বের করে আনে।
২ চামচ গুজবেরি পাউডার, ২ চামচ পেঁপের পাল্প, অল্প উষ্ণ জল।
একটি পাকা পেঁপে নিয়ে আগে অল একটু চটকে নিন। এর সঙ্গে দিয়ে দিন গুজবেরি পাউডার আর সঙ্গে অল্প জল নিয়ে ভাল করে একটা পেস্ট করে নিন। এই পেস্ট এবার মুখে লাগিয়ে নিন ৩০ মিনিট রেখে দিন। তারপর ধুয়ে নিন সাধারণ জল দিয়ে। সপ্তাহে তিন দিন এটি অবশ্যই করুন।
স্কিনের সার্বিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে মধুর কথা আমরা ভুলতেই পারি না। মধু খুব ভাল ময়েশ্চার করে। লেবু স্কিন পরিষ্কার করে আর জেল্লা বাড়ায়।
১ চামচ মধু, ২ চামচ লেবুর রস।
লেবুর রস আর মধু ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এবার অল্প শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন সাধারণ জল দিয়ে। রোজ এটি করতে পারেন।
উবটানের কথা নিশ্চয়ই আপনারা শুনেছেন। এটি হল আয়ুর্বেদিক হার্বস আর জড়িবুটির একটি উপকারী মিশ্রণ। আপনি যদি আলাদা আলাদা করে আয়ুর্বেদিক জিনিস ব্যবহার করার সময় না পান তাহলে এই একটি জিনিস ব্যবহার করুন। খুব ভাল ফল দেবে। এর সঙ্গে গোলাপ জল নিলে ডার্ক সার্কেল, ফেসিয়াল হেয়ার আর যে কোনও দাগ সব দূর হয়ে যাবে।
২ চামচ উবটান, ৩ চামচ গোলাপ জল।
একটি পাত্রের মধ্যে এই দুই উপকরণ নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর মুখের মধ্যে লাগিয়ে ৪০ মিনিট রেখে দিন। ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। পারলে এক দিন ছাড়া ছাড়া করুন।
চিরতা আর লেবু এই দুই উপাদানই স্কিনে খুব ভাল টেক্সচার আনে। একটি কোমল ভাব আসে আর সঙ্গে আসে তারুণ্যভরা সৌন্দর্য।
২ চামচ চিরতার পাউডার, ৩ চামচ লেবুর রস।
একটি পাত্রে চিরতার পাউডার আর লেবুর রস নিয়ে মিশিয়ে নিন। সঙ্গে নিন অল্প জল। ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে রেখে দিন ৩০ মিনিট। তারপর মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুই বার অবশ্যই ব্যবহার করতে পারেন।
এই দশটি আয়ুর্বেদিক ট্রিটমেন্ট আপনার স্কিনের যে কোনও সমস্যার সমাধান অনায়াসে হতে পারে। ব্যবহার করুন আর ভাল সুন্দর থাকুন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…