হাতে গুণে আর দুই মাসও বাকি নেই দুর্গাপুজোর। দুর্গাপুজো মানেই প্যান্ডেল হপিং, আড্ডা আর খাওয়া। করোনার জন্য সাবধানতা মেনেই আমরা ঠাকুর দেখবো। আর যেহেতু আমরা বাইরে যাব, তাই আমাদের স্কিন আর চুলের যত্ন নেওয়া তো খুবই দরকার। এই যত্নের কথা যদি আবার বিখ্যাত অ্যারোমাথেরাপিস্ট কেয়া শেঠ বলেন তাহলে তো কথাই নেই। কেয়া শেঠের থেকে শুনে নিন দুর্গাপুজোর আগের টিপস আর ট্রিকস।
সবার আগে আসা যাক আমাদের ত্বকের জন্য আমরা এই কম সময়ে ঠিক কি কি করতে পারি। কোনও কিছুই ম্যাজিক নয়। সারা বছর আমরা আমাদের ত্বকের জন্য সামান্য যত্ন করি না। এখন তাই আমাদের বেসিক থেকে শুরু করতে হবে। আর বেসিক হল তিনটি জিনিস, ক্লিন্সিং, টোনিং আর ময়েশ্চারাইজিং।
আমরা ত্বকের জন্য যে যে জিনিস ব্যবহার করব, সেই জিনিস যাতে ত্বকের ভিতরে যায় তার জন্য ত্বকের ওপরের স্তর পরিষ্কার থাকা খুব দরকার। ডেড সেল উঠে গিয়ে একটা সুন্দর ত্বক আগে দরকার। আর তার জন্য রয়েছে কেয়া শেঠের ফেস ক্লিনসার রেঞ্জ। আপনার ত্বক অনুযায়ী আপনি বেছে নিতে পারেন। যেমন ধরুন আপনার যদি নর্মাল স্কিন হয় তাহলে ফ্রেস লুক হানি জেল বা ফ্রেস লুক অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন।
যদি অয়েলই স্কিন হয়, ব্রণ বা র্যাশের সমস্যা থাকে তাহলে ব্যবহার করুন ফ্রেশ লুক নিম ফেস ওয়াশ। ফ্রেশ লুক ব্ল্যাকবেরি আর টি ট্রি ফেস ওয়াশ সকলের জন্য। এগুলো রোজ ব্যবহার করুন। এর সঙ্গে সপ্তাহে দু’দিন ব্যবহার করুন স্কিন ইরেজার ওয়ালনাট পাউডার বা ক্লিনসিং মিল্ক। এতে সহজেই ভিতর থেকে স্কিন পরিষ্কার হবে।
টোনিং করার মূল উদ্দেশ্য হল পোর্স ঠিক রাখা। স্কিন পরিষ্কার করার পর আমাদের স্কিন পোর্স খুলে যায়। তখন যদি আমরা টোনার ব্যবহার করি তখন সেই টোনার পোর্সের আকার বজায় রাখে। এছাড়া টোনার স্কিনের ভিতরে গিয়ে আমাদের স্কিনকে পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুত করে। ফলে যে কোনও ক্রিম ব্যবহার করলে তার কাজ অনেক তাড়াতাড়ি হয়। সঙ্গে আসে এক কোমল ঝলমলে স্কিন।
এই পর্যায়ে এসে আপনি একটু মিস্ক অ্যান্ড ম্যাচ করতেই পারেন। মূলত রাতের দিকে যে কোনও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এতে স্কিন ভাল থাকে আর কাজ ভাল হয়। কিন্তু যেহেতু হাতে সময় কম তাই আমরা এখন শুধু ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করব না। বরং এমন কিচু ক্রিম ব্যবহার করব যা আমাদের ময়েশ্চার দেবে আবার স্কিনের কিছু সমস্যাও মেটাবে। যেমন ধরুন যাদের রিঙ্কেলস আসছে তাঁরা রাতে এই সময়ে ব্যবহার করতে শুরু করুন স্টোপ এজ ক্রিম।
আবার রিঙ্কেল কন্ট্রোল ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন। যাদের স্কিন খুব ড্যামেজ হয়ে গেছে তাঁরা ব্যবহার করতে পারেন স্কিন ড্যামেজ কন্ট্রোল ক্রিম। যদি সেরকম কোনও সমস্যা না থাকে শুরু নিম জেল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। স্কিনের ব্রাইটনেসের জন্য টেট্রা স্কিন হোয়াইটেনিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এই সব ক্রিম ময়েশ্চার দেবে আর দেবে কিছু নির্দিষ্ট ফল। তাই এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে যাবে।
এই সব ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে রোজ নিয়ম করে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে। এতে ট্যান পড়বে না। যেহেতু পুজো আসছে তাই আমাদের মাঝে মাঝে পার্লারে যেতেই হবে বিশেষ যত্নের জন্য। কিন্তু যদি পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল করার সময় না হয় তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। কেয়া শেঠ নিয়ে এসেছেন ফেসিয়াল কিট রেঞ্জ। বাড়িতে বসেই তাই সেটি ব্যবহার করতে পারেন। এনভি গোল্ড ফেসিয়াল কিট খুবই ভাল। এছাড়া অ্যারোম্যাটিক হোয়াইট সিক্রেট ব্যবহার করতে পারেন। চারকোল পিল অফ মাস্ক খুব ভাল হবে তাঁদের জন্য যাদের ব্ল্যাকহেডস, ডেড স্কিনের সমস্যা আছে। দুই সপ্তাহ অন্তর অন্তর একবার করুন।
ফেস মাস্ক আমাদের স্কিনের সার্বিক উন্নতির জন্য খুব দরকার। এটি একবারে যে পরিমাণ উজ্জ্বলতা দেয় সেটি ব্যবহার না করলে বলে বোঝানো যাবে না। এর জন্য অন্য কোনও ব্র্যান্ডের কিট কেনার দরকার নেই। কেয়া শেঠ এনে দিয়েছেন অসাধারণ রেঞ্জ। ব্লুবেরি ফেস হোইটেনিং ফেস মাস্ক থেকে শুরু করে রাবার ফেসিয়াল মাস্ক, হিবিস্কাস রিপ্লেনিশিং হাইড্রা ফেসিয়াল শিট মাস্ক, যে কোনও একটি ব্যবহার করতে পারেন।
যে কোনও স্কিনের ক্ষেত্রেই এগুলি সমান ভাল। ব্যবহার করাও খুব সহজ। শুধু যে কোনও ভাল ক্লিনসার দিয়ে মুখ ধুয়ে, টোনার ব্যবহার করে তারপর এই মাস্ক লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শুকিয়ে নিয়ে সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন। তারপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। সামনে পুজো বলে সপ্তাহে এক দিন অবশ্যই করুন। এতে খুব ভাল ফল পাবেন তাড়াতাড়ি।
শুধু মুখের যত্ন নিলেই তো হবে না, সঙ্গে দরকার বডি কেয়ার। তাহলেই পাবেন সার্বিক সুন্দর ত্বক। এর জন্যেও আপনি কেয়া শেঠের হাত ধরতে পারেন। ব্যবহার করা শুরু করুন বডি অয়েল। বডি অয়েল শুধু শীতে ব্যবহার করার জন্যেই নয়, সারা বছর ব্যবহার করুন। এতে স্কিন কোমল, নরম আর উজ্জ্বল হবে। ব্যবহার করুন কেয়া শেঠ সফট অ্যানড স্মুদ বডি অয়েল, স্কিন ডিফেন্স অরেঙ্গ বডি অয়েল। বডি ওয়াশের জন্য ব্যবহার করুন স্পা বডি কন্ডিশনিং ওয়াশ, ফেয়ারনেস বডি ওয়াশ, অ্যাকোয়া শাওয়ার জেল। রোজ নিয়ম করে ব্যবহার করলে আগামী দুই মাসে পাবেন অসাধারণ হেলদি স্কিন।
এভাবে আগামী দুই মাস নিয়ম করে যদি ত্বকের যত্ন নিতে পারেন তাহলে পুজোর চারদিন আপনার ফ্রেন্ড সার্কেলে আপনিই রাজত্ব করবেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…