আমাদের অনেকেরই অভিজ্ঞতা আছে ছোটবেলা ঘন ঘন ন্যাড়া হওয়ার। এখনও বিশ্বাস করা হয় যে ঘন ঘন ন্যাড়া হলে চুল ঘন হয়, ভাল চুল গজায়। কিন্তু সত্যিই কি তাই? বিজ্ঞান আদৌ সেই কথা বলে তো! এবার ছোট ছেলে বা মেয়েকে ন্যাড়া করার আগে ভাল করে জেনে নিন এই ন্যাড়া করার সঙ্গে ভাল চুল গজানোর আদৌ কোনও সম্পর্ক আছে কিনা!
আমাদের বিশ্বাস চুল ঘন ঘন পুরো কেটে ফেললে বা ন্যাড়া হলে চুল ভাল হয়। একরাশ ঘন কালো চুল পাওয়া যায়। আমরা দেখেছি যে গাছের পাতা অল্প ছেটে দিলে আবার সুন্দর পাতা জন্মায়। অনেকে গাছের চারপাশ কেটে দেন যাতে গাছ আরও সুন্দর ঝাড় হয়ে বড় হয়। এর থেকে আমাদের মনে হয়েছে চুল কেটে ফেললে বা ন্যাড়া হলেও হয়তো পরবর্তী চুল আরও সুন্দর হয়ে গজাবে। আদতে কিন্তু তা হয় না। আপনার আগে যেমন চুল ছিল, পরেও ঠিক সেই রকম চুলই থাকবে। তাই ন্যাড়া হওয়ার সঙ্গে চুল ভাল করে গজানোর কোনও বিজ্ঞানসম্মত কারণ নেই।
আমরা যখন ন্যাড়া হই তখন আমাদের স্ক্যাল্পের ওপরের অংশ, অর্থাৎ চুলের ওপরের অংশ আমরা কেটে ফেলি। কিন্তু চুলের ভিতরের অংশ, যে অংশ আসল, সেটা তো কেটে ফেলছি না। আমাদের চুল কেমন হবে, কেমন হবে চুলের ঘনত্ব তা তো নির্ভর করছে ওই স্ক্যাল্পের নিচের অংশের মধ্যে। আমাদের চুলের যে অংশ আমরা দেখতে পাই সেটা তো ওই ভিতরের চুলের অংশ মাত্র। তাহলে এই ওপরের অংশ শুধু কাটলে কীভাবে আমাদের চুলের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হবে! অনেকে হেয়ার ট্রিটমেন্ট করে চুলের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে ফেলেন। কিন্তু শুধু ওপর থেকে চুল কেটে ফেললেই চুল ঘন হবে না।
আমাদের চুলের ঘনত্ব, রঙ এই সব নির্ভর করে জিনের ওপর। আমাদের জিন বা বংশগতি ঠিক করে আমাদের চুল কেমন হবে। তাই আপনার বংশে যদি তাক পড়ার সমস্যা থাকে তাহলে আপনারও সেটা হতে পারে। আপনি চিকিৎসা করিয়ে সেটার প্রভাব কমাতে পারেন বা যাতে অনেক পরে হয় সেটার ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু এই সমস্যা থেকে একেবারে মুক্ত হতে পারবেন না। তাই আপনার বংশে যদি পাতলা, কম ঘন চুল থাকে তাহলে আপনারও সেরকম চুলই হবে।
বারবার ন্যাড়া হলেও কোনও বিশেষ পরিবর্তন আসবে না। জিন ছাড়াও আরেকটি বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে। আমাদের জন্মের সময় আমরা নির্দিষ্ট পরিমাণ হেয়ার ফলিকল নিয়ে জন্মাই। তার পরিমাণ প্রায় এক লক্ষের কাছাকাছি। আমাদের জন্মের পর এই হেয়ার ফলিকলের সংখ্যা খুব একটা আর পরিবর্তিত হয় না। এখন হেয়ার ফলিকলের সংখ্যাই যদি নির্দিষ্ট হয়, তাহলে বারবার ন্যাড়া হলেও নতুন চুল আসবে কোথা থেকে? আমাদের চুল তো এই হেয়ার ফলিকল থেকেই জন্মায়। তাই ন্যাড়া হয়ে শুধু শুধু চুল বড় আর ঘন হওয়ার আশা না করাই ভাল।
চুল ভাল রাখতে ন্যাড়া নয়, বরং চুল ছোট করার বা চুলে শেপ দেওয়ার কথাটা বিজ্ঞানসম্মত। আসলে খুব বড় চুল থাকলে অনেক সময় বেশি ঘষা লেগে ডগা ভাঙা, চুল ছেড়ার মতো সমস্যা হয়। অনেক সময় বড় চুল ভাল করে যত্ন নেওয়া যায় না। বেশি করে ময়লা জমতে শুরু করে খুব বড় চুলে। তাই আপনি যদি চুল একটু ছোট রাখেন তাহলে ঘাম বা ময়লা যেমন কম জমবে, তেমনই আবার ডগা ভাঙার মতো সমস্যাও কম হবে। তাই চুল ভাল রাখতে অল্প ছোট চুল রাখতে পারেন।
এবার আশা করি আর ন্যাড়া মাথা করিয়ে বাচ্চাদের রাখবেন না। চুল যদি ঘন হওয়ার থাকে তাহলে ভাল করে তেল বা ভাল শ্যাম্পু ব্যবহার করলেই হবে। সঙ্গে দরকার পুষ্টিকর খাবার। এই সবই ভাল চুলের গোঁড়ার কথা।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…