Bengali Translation: Arpita Mukherjee
২০১৪ সালে টাইমস পত্রিকায় নরেন্দ্র মোদি এবং ব্যারাক ওবামার মত ১০০ জন প্রতিভাবান লোকের মধ্যে অরুনাচলমও একজন পরিচিত নাম। মহিলাদের স্বাস্থের উন্নতির ব্যাপারে তার অবদান সর্ব্বজন স্বীকৃত। উনি একজন আধুনিক বিপ্লবী। কোটি কোটি মহিলা ইহার জন্য উপকৃত। প্রত্যেক মহিলাই এই ন্যাপকিনের জন্য সহজভাবে চলাফেরা করার সুযোগ পেয়েছে।
সব কঠিন কাজের মতোই ওনার কাজটাও সহজ ছিলনা। তাকেও তার পরিবার এবং সামাজিক কুসংস্কারের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে। যতোই হক তিনি একজন পুরুষ হয়েও নারী সমাজের উন্নতির চেষ্টা করেছেন। এই কারণে তার সবচেয়ে বড় এবং আন্তরিক প্রচেষ্টাকে বিকৃত রুচি বলা হয়েছিল। তবু তিনি যে কাজের জন্য যুদ্ধ শুরু করেছিলেন সেটা ছেড়ে দেননি।
অরুনাচলম এই কাজ শুরু করার আগে ভারতীয় নারীদের স্বাস্থ সম্বন্ধে কতটা অজ্ঞতা ছিল, দেখে নেওয়া যাক।
এসি নীমসন কম্পানীর দ্বারা একটি সার্ভে অনুযায়ী , ভারতে পাঁচটি মেয়ের মধ্যে একজন স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিত মেনস্ট্রুয়েশনের কারণে। প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মহিলাদের স্যানিটরী ন্যাপকিন সম্বন্ধে কোনো অভিজ্ঞতাই ছিলনা। ১০০ জনের মধ্যে ৭৫ জন গ্রামের মহিলা আজও স্যানিটরী প্যাডের পরিবর্তে অপরিষ্কার কাপড়, বালি বা ছাই ব্যবহার করে থাকে শুধু মেনস্ট্রুয়ল স্বাস্থ্যবিধি সম্বন্ধে সচেতনতার অভাবে।
যখন এক সমাজসেবী সংস্থার কর্মী ছত্তিসগড়ের এক গ্রাম্য মহিলাকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তার উত্তর ছিল যে জিনিষকে ব্যবহার করে কিছুক্ষণ পর ফেলে দিতে হবে, তার পেছনে ব্যর্থ পয়সা খরচ করে লাভ কি! এই উত্তর শুনে আমাদের হয়তো হাসি পায়ে কিন্তু এই উত্তরে গ্রামীন উপার্জনের অবস্থার একটা ছবি আমাদের চোখে পড়ে। সেই পরিপ্রেক্ষীতে এবং স্যানিটরী প্যাডের দাম মাথায় রেখে গ্রাম্য মহিলাদের দৃষ্টিকোন বোঝা যায়।
১০০ জনের মধ্যে ২৩ জন পরিণত বয়সের মেয়ে পড়েশুনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় সর্বজনীন শৌচালয়ের অভাবে।
সম্প্রতি টাইমস্ অফ ইন্ডিয়ার একটি কলামে লেখা হয়েছে যে ৩৫৫ মিলিয়ন ভারতীয় মহিলার মধ্যে মাত্র ১২% মহিলার স্যানিটরী ন্যাপকিনের সঙ্গে পরিচিতি আছে। এটা নারী স্বাস্থের পক্ষে নেহাতী অবহেমার লক্ষণ।
অরুনাচলমের মতো লোকেদের প্রচেষ্টায় কম দামী প্যাড বাজারে আসার আগে, গ্রামীন মহিলাদের নাগালের বাইরে ছিল স্যানিটরী প্যাড। বেশীর ভাগ গ্রাম্য মহিলা এটাকে প্রাচুর্য বলে মনে করতো এবং এর পিছনে অর্থ ব্যয় করা ছিল অপ্রয়োজনীয়। তারা মনে করতেন এর পিছনে টাকা খরচ করার থেকে রোজকার খাবার, দুধের পিছনে খরচ করা ভালো। সেই তারা অস্বাস্থ্যকর জীবন বাছে নিয়েছিলেন।
অরুনাচলমের মতে এটা হলো এক ভয়াবহ পরিস্থিতি কারণ প্যাড তৈরী করার প্রয়োজনীয় জিনিষ অত দামী নয়। বিভিন্ন বড় কম্পানীর প্যাকেজিন্গ এবং ব্র্যান্ডিন্গের কারণে মূল্য বেশী হয়। তাই উনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে অন্য কম্পানীর তুলনায় অতী সামান্য খরচে স্যানিটরী প্যাড বানাবেন।
তার এই চেষ্টার ফলে আজ ১৩০০ যন্ত্র ২৭ টি রাজ্যে এবং ৭ টি অন্য দেশে ব্যবহার হয়। এখন ভারতীয় গ্রাম্য মহিলারা এই প্যাড ব্যবহার করতে পারেন।
ভারতে বেশীর ভাগ দ্রব্য মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ অর্থ উপার্জনকারীদের জন্য তৈরী হয়। ফলে অনেক অত্যাবশ্যক দ্রব্য গ্রামীন জনসংখ্যার নাগালের বাইরে থাকে। অরুনাচলম তাই বাণিজ্যিক ভাবে নিজের তৈরী দ্রব্যকে বিক্রি করতে চাননা। এই জন্য তার জিনিষ শুধুমাত্র গ্রাম্য মহিলাদের জন্য তৈরী করেন। এইভাবে উনি সমাজের নিম্ল শ্রেণীর লোকেদের জন্য ভালো স্বাস্থ্যবিধি এবং চাকরি উভয়েরই ব্যবস্থা করেছেন।
সময় এসে গেছে যে ভারতীয় মহিলারা মেনসট্রুয়েশন সম্বন্ধে বিকৃত ভাবে ভাবা বন্ধ করে। টা একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া যার দ্বারা জন্মদান সম্ভব হয়। এটার সম্বন্ধে কথা বলা গ্রহণযোগ্য করতে হবে। সাথেই মহিলাদের মাসিকের সময়ের স্বাস্থ সম্বন্ধে শিক্ষিত করতে হবে।
মহিলাদের এই ব্যাপারে এগিয়ে আসার জন্য উৎসাহ দিতে হবে এবং তাদের মতামত জানতে হবে যাতে তারা অপ্রস্তুত অবস্থায় না পড়ে। ভারতীয় মহিলাদের জন্য অরুনাচলম যা করেছেন তা সত্যই প্রশংসার যোগ্য। আসা করা যায় তার এই চেষ্টায় বাঁধাধরা অজ্ঞ মানসিকতা বদলাবে এবং নারীনের ক্ষমতাশীল করে তুলবে দেশে ও বিদেশে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…