ঘুম আমাদের সকলেরই খুব প্রিয়, তা সে শীতের রাতে লেপ মুড়ি দিয়ে হোক, বা বৃষ্টি ভেজা দুপুরে, বা গরমকালে এ. সি চালিয়েই হোক। ঘুমোতে আমরা সকলেই ভালোবাসি।
আজকাল আমাদের জীবন যাত্রা সকলের জীবন থেকেই অল্প বিস্তর ঘুম কেড়ে নিয়েছে। তা অফিসে কাজের চাপই হোক বা স্কুল কলেজে পড়াশোনার চাপই, সব কিছুর প্রভাবই পড়ছে ঘুমের ওপর, বিশেষ করে রাতের ঘুমের ওপর। যার প্রভাব পড়ছে আমাদের শরীরের ওপর। ঘুম আমাদের শরীরকে সুস্থ্য রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলুন আজ, রাতের ভালো ঘুমের উপকারিতা বিষয়ে কিছু আলোচনা করা যাক। সাধারণত একেকটি বয়সে ঘুমের পরিমান এক এক রকম হয়। আসুন আগে জেনে নেই আমাদের ঠিক কতক্ষন ঘুমোনো উচিত।
জন্মের পর থেকে মোটামুটি ১২ মাস বয়স পর্যন্ত ১২ থেকে ১৬ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
১ বছর থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের দিনে ১১ থেকে ১৪ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
৩ বছর থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের দিনে ১০ থেকে ১৩ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
৬ বছর থেকে ১২ বছর বয়স পর্য্যন্ত শিশুদের দিনে ৯ থেকে ১২ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
১৩ বছর থেকে ১৮ বছর বয়সে সাধারণত দিনে ৯ থেকে ১২ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
১৮ বছর ও তার উর্ধে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দিনে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
ঘুম আমাদের শরীরে এনার্জি বুস্টার এর কাজ করে। অর্থাৎ আমাদের সারাদিনের ক্লান্তিকে দূর করে আমাদের মন মেজাজকে ভালো রাখে। ঠিক মতো ঘুম না হলে আমাদের চোখের নিচে কালো ছাপ পরে,
চুল ঝড়তে শুরু করে, খিদে কমে যায়। অর্থাৎ আমাদের বাহ্যিক নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। এগুলির এড়াতে আমাদের ঠিক মতো ঘুমের প্রয়োজন।
গবেষণা বলছে আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের স্নায়ুগুলি অত্যন্ত সক্রিয় অবস্থায় থাকে। আমরা সারাদিন যে সমস্ত কাজ করি বা নতুন কিছু শিখি সেগুলিকে সংরক্ষনের প্রক্রিয়াটি এইসময় সবথেকে বেশি চলে। ফলত আমাদের স্মৃতিশক্তিকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য আমাদের সঠিক পরিমান ঘুমের প্রয়োজন।
ঘুম ঠিক মতো না হলে আমাদের ওজন খুব বেশি বেড়ে যাওয়ার বা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ ঠিক মতো ঘুম না হলে আমাদের শরীরে হরমোন ক্ষরণ ঠিকমত হয় না। ফলত তার ফলে আমাদের শরীরে নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি করে। এর ফলে কখনো আমাদের ওজন খুব বেশি বেড়ে যায় বা ওজন খুব বেশি কমে যায়। তাই এই সমস্যা এড়াতে ঠিক মতো ঘুমের প্রয়োজন।
দীর্ঘ দিন ধরে যদি ঘুম ঠিক মতো না হয় তা অনেক সময় হাইপারটেনশন এর সৃষ্টি করে। এর ফলে শরীরে অকারণ উদ্বিগ্নতার সৃষ্টি হয়। যা বেড়ে গিয়ে অনেক সময় হৃদয় জনিত সমস্যা সৃষ্টি করে।
নিয়মিত এবং পরিমিত ঘুম আমাদের কোষ গুলিকে সজাগ এবং সক্রিয় রাখে এবং স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া গুলিকে ত্বরান্বিত করে। নিয়মিত ঘুম না হলে এই প্রক্রিয়াটি বাধা প্রাপ্ত হয় ফলত শরীরের কোষগুলি নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়।
অনিদ্রা বা ঘুম কম হওয়া অনেক সময় ডিপ্রেশন এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ক্লান্তির সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব আমাদের শরীরের সাথে সাথে আমাদের মনের ওপরেও পরে। দীর্ঘদিন ধরে ক্লান্তি আমাদের মানসিক ও শারীরিক ভাবে দুর্বল করে তোলে। এর ফলে অনেক সময় ডিপ্রেশন ও এর থেকে আংজাইটি সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ্য এবং মনকে সতেজ রাখার জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
রাতে যখন আমরা ঘুমোই তখন আমাদের কোষগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলত শরীরকে ঠিক রাখার প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক ভাবে চলতে থাকে। সাধারণত শরীরের যে কোনো সমস্যা বা শারীরিক দুর্বলতা সারিয়ে তোলার প্রক্রিয়াটি ভালো ঘুমের ওপর নির্ভর করে। তাই আমরা যদি নিয়মিত এবং শরীরের প্রয়োজন মতো না ঘুমোই তাহলে সমস্ত রকম শারীরিক প্রক্রিয়া ঠিক বেসামাল হয়ে পরে। ফলত আমাদের শরীরের যেকোনো রকম সমস্যা আমাদের ঘুম এর ওপর নির্ভর করে। উচ্ছ রক্ত চাপ, লিভার এর সমস্যা, হৃদয় জনিত সমস্যা, ডায়াবেটিস, এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত ঘুম না হওয়ার ফলে হতে পারে। এছাড়া দৃষ্টি শক্তি জনিত সমস্যা, মাইগ্রেনের সমস্যা,
ত্বকের নানা রকম সমস্যা ইত্যাদিও ঘুম হওয়া বা না হওয়ার ওপর নির্ভর করে। ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার ফলে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি এর ফলে অনেক সময় সতর্কতার অভাবে আমরা গুরুতর আঘাত ও পেতে পারি। ঠিক মতো ঘুম না হলে নানা রকম শারীরিক বিপর্যয়ের ফলে আমাদের আয়ু ও কমে যায়। তাই শরীরকে সুস্থ্য রাখতে হলে, তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে, শারীরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতাকে বজায় রাখতে সঠিক সময়ে, নিয়মিত এবং পরিমিত ঘুমের অভ্যাসটি বজায় রাখুন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…