আপনি যদি কোনো অচেনা জায়গায় বেড়াতে বা কাজের সূত্রেই যান,যেখানে বাঙালীর বসবাস কম,সেখানে আপনি যদি কোনো বাড়িতে দেখেন একটা টবে একটা তুলসীর চারাকে সযত্নে ধূপধুনা দিয়ে পূজা করা হয়েছে,তাহলে বুঝবেন আপনি কোনো বাঙালি বাড়িতে এসেছেন,যেখানে বাড়ির এককোণে একটা ছোট্ট তুলসীর টব থাকবেই।কারণ হিন্দু ধর্মে তুলসীকে খাওয়ার থেকে বেশী পূজা করা হয়।এর মাহাত্ম্যই আলাদা।তবে এই তুলসীরও কিন্তু ভাগ রয়েছে।গোটা পৃথিবী জুড়ে রয়েছে তুলসীর বিভিন্ন প্রজাতি।তবে আমাদের এখানে আমরা দেখতে পাই চাররকম তুলসী যার মধ্যে দুটো তুলসীর নাম আমরা সবাই জানি,রামতুলসী ও কৃষ্ণতুলসী।এছাড়াও রয়েছে কাপুরতুলসী ও ভানাতুলসী।রামতুলসী আর কৃষ্ণতুলসী প্রায় একরকম দেখতে।কিন্তু দুটো তুলসীর মধ্যে একটু তফাৎ তো রয়েইছে। সেকারণেই কিন্তু পূজার কাজে সব তুলসী চলে না।কিন্তু কেন?জানেন কি আসলে ঠিক কি তফাৎ রয়েছে এই দুই তুলসীর মধ্যে?আর আসলে কোনটা পূজাযোগ্য?চলুন জেনে নেওয়া যাক কিছু তুলসী কথা।
সাধারণত হিন্দু ধর্মে যে তুলসীকে পূজা করা করা হয়,তা হল কৃষ্ণতুলসী। কৃষ্ণতুলসীর রঙ গাঢ় সবুজ বা হালকা বেগুনীর ছোঁয়া থাকে।তুলসীকে মনে করা হয় বৈষ্ণবী।ভগবান বিষ্ণুর আরেক রূপ।কৃষ্ণ হলেন শ্রী বিষ্ণুর একটি অবতার।আর কৃষ্ণের গায়ের রঙ নীল।এই তুলসীতেও আছে নীল বর্ণ।তাই এই তুলসীর নাম কৃষ্ণতুলসী।এই তুলসীকে পূজা করা হয়।
এটা ব্রঙ্কাইটিস,ম্যালেরিয়া জ্বর,হাঁপানি,পেটের সমস্যা,ডায়াবেটিস ইত্যাদি সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।কারণ এতে আছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান।বেশ গাঢ় গন্ধ ও গাঢ় স্বাদ।এর পাতাগুলো একটু ছোট ছোট হয়।মঞ্জরিগুলো সব নীল হয়।
এই তুলসী হিন্দু ধর্মে খুবই পবিত্র বলে মানা হয়।ভগবান বিষ্ণু এই তুলসীকে পবিত্র বৃন্দা বলেছেন।আর এই তুলসীর রঙও ভগবান বিষ্ণু বা কৃষ্ণের মত। তাই একে ভগবান জ্ঞানে পূজা করা হয়।মনে করা হয় এই গাছ বাড়িতে থাকলে বাড়ির পরিবেশ খুব পবিত্র থাকে।অন্যদিকে তুলসী গাছ না থাকলে, সে বাড়ির পরিবেশ অপবিত্র ধরা হয়।
এই ধর্মীয় কারণ ছাড়াও,রয়েছে কিছু পরিবেশগত কারণ।বিভিন্ন স্টাডি থেকে দেখা গেছে,তুলসী গাছ নাকি অন্যান্য গাছের থেকে বেশী অক্সিজেন দেয় এবং চারপাশের পরিবেশকে বিশুদ্ধ রাখে এবং এই গাছ থাকলে, পোকামাকড় ,সাপ এসব কম আসে বাড়িতে।এছাড়াও এর ঔষধি ব্যবহার তো রয়েইছে।তাই এইসব পরিবেশগত ও ধর্মীও কারণের জন্য একে এতো গুরুত্ব দেওয়া হয় ও পূজা করা হয়।
রামতুলসীও অনেকটা দেখতে কৃষ্ণতুলসীরই মত।কিন্তু এর রঙ আলাদা। মানে এর রঙ এতো গাঢ় নয় বা কৃষ্ণতুলসীর মত এর এরম নীল আভা থাকে না।এটা শুধু সবুজ রঙের হয়।এটি তুলনায় একটু ঠাণ্ডা কৃষ্ণতুলসীর থেকে। কৃষ্ণতুলসী হয় গরম।যদিও এই তুলসীকেও পূজার কাজে লাগানো হয়।কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই পূজার কাজে কৃষ্ণতুলসী ব্যবহার করা হয় এবং এই তুলসীর পাতা একটু বড় হয়,কৃষ্ণ তুলসীর থেকে।এগুলি ছাড়া আর তেমন কোন পার্থক্য নেই দুটি তুলসীর মধ্যে।
এটি ঠাণ্ডা লাগার সমস্যায়,জ্বরে ব্যবহার করা হয়।লিউকোডারমিয়া,হার্টকে ভালো রাখতে ব্যবহার করা হয়।এছাড়া এটি ঠাণ্ডা হওয়ায় লিভারকে ঠাণ্ডা রাখে।লিভার টনিক হিসাবে ব্যবহার করা হয়।এছাড়াও রক্ত পরিষ্কার রাখে।স্কিনের জন্যও তাই ভালো।
এই দুটোর মধ্যে যেকোনো একটা তুলসী নিশ্চয়ই আপনার বাড়িতেও আছে বা হয়তো দুটোই আছে।এবার থেকে তাহলে এই ছোট্ট চারাটিতে রোজ জল দেবেন।তারপর দেখবেন এর উপকারিতা।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…