ভূস্বর্গের বাতাস ভারী বারুদের গন্ধে ভরে রয়েছে কাল থেকে। কিছু দিন আগেই সব সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স প্রায় হাউসফুল করে মুক্তি পেয়েছিল ‘উরি’ সিনেমাটি। সিনেমা দেখতে দেখতে অনেকেই জাতীয়তাবাদের, দেশপ্রেমের আঁচে গা সেঁকেছিলেন। অনেকেরই চোখের পাতা যেমন ভিজে গিয়েছিল, তেমনই অনেকের আবার বুকের পাটা ফুলে গিয়েছিল নিজের দেশের উপর আক্রমণের যোগ্য জবাব দিতে পেরেছিল ভারত এটা দেখে।
লোকের মুখ থেকে শুরু করে খবরের কাগজের শিরোনাম, সব জায়গায় প্রায় প্রবাদের মতো বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল একটাই কথা, ‘হাও’স দ্য জোশ’। কিন্তু সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি এই প্রশ্নই গোটা দেশবাসী এক সঙ্গে রিল লাইফ থেকে এবার রিয়েল লাইফে জিজ্ঞাসা করবে। হ্যাঁ, গোটা দেশ এখন তাকিয়ে আছে প্রশাসনের জোশ দেখার জন্য, আর সৌজন্যে ১৪ ফেব্রুয়ারির পুলওয়ামা আক্রমণ।
ঠিক কী হয়েছিল সেটা তো তদন্ত করে দেখার বিষয়। কিন্তু এ দিন ভোর ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ কাশ্মীরের উপত্যকা কেঁপে ওঠে ভয়াবহ বিস্ফোরণে। পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপোরার কাছে শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে দিয়ে ৭০টি গাড়ি যাচ্ছিল, যার মধ্যে প্রায় ২৫০০ জন জওয়ান ছিলেন। তাঁরা সকলেই ছুটি কাটিয়ে তাঁদের কাজে ফিরছিলেন। এই রাস্তাটি এমনিতেই প্রায় এক সপ্তাহ বরফ পড়ে বন্ধ থাকার পর খুলেছিল। আর তারপরই এই ভয়াবহ ঘটনা। ওই ৭০টি গাড়ির মধ্যে একটি গাড়িকে জইশ-ই-মহম্মদ দলের জঙ্গীরা নিশানা করেছিল। ভোরবেলা যখন কনভয় যাচ্ছিল তখন প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি এসে কনভয়ের একটি গাড়িতে ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটে বিস্ফোরণ। দুটি বাসে ধরে যায় আগুন।
ভালোবাসার দিনই কেড়ে নিল ভালোবাসার মানুষদের। এই গাড়িবোমা হামলায় প্রায় ৪০ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন, আর আহত হয়েছেন প্রায় ৪১ জন। আহতদের শ্রীনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীর থেকে পাঞ্জাব, বিহার থেকে উত্তরপ্রদেশ, গোটা দেশেই আজ শোকের ছায়া। কারণ এই সমস্ত অঞ্চল থেকেই কারোর ঘরের ছেলে, কারোর স্বামী আবার কারোর ভাই হয়তো গিয়েছিলেন সেনা ছাউনিতে, আর কালকের বিস্ফোরণে প্রাণ দিয়েছেন।
এই তালিকায় বাদ নেই আমাদের বাংলার নামও। হাওড়ার বাবলু সাঁতরা ছিলেন জওয়ানদের মধ্যে। চার বছরের মেয়ে, স্ত্রী, অসহায় মা সবাই পড়ে রইলেন পিছনে। ছোটবেলা বাবাকে হারানোর পর কষ্ট করে পড়াশোনা করে সিআরপিএফ এ যোগ দেন। ফেরে বাড়ির হাল। কিন্তু আজ সবই অতীত হয়ে গেল একটা আক্রমণে।
এই ঘটনাটি ঘটার পরেই দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মহম্মদ। জানা যায়, হামলাকারী আদিল আহমেদ দারের নাম। তিনি পুলওয়ামারই বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি ওই দলে যোগ দেন। তারপর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটায়। দশম শ্রেণিতে পাস করতে পারেননি আদিল। অশিক্ষাই আবার কেড়ে নিল এতোগুলো তাজা প্রাণ। পাকিস্তান যদিও এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
হিসেব বলছে, বিগত দু দশকে এমন হামলা আর হয়নি। ২০১৫ সালে গুরুদাসপুর থানায় জঙ্গি হামলায় মারা গিয়েছিলেন সাত জন। তারপর ২০১৬ সালে পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলায় মারা গিয়েছিলেন সাত জন। আর সাম্প্রতিক উরি হামলার কথা কেই বা ভুলেছে। রাতে জওয়ানরা ঘুমোনোর সময়ে অতর্কিত হামলায় প্রাণ দেন ১৮ জন। কিন্তু পুলওয়ামার হানা সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে, নিহত ৪০ জনের উপর। পরিসংখ্যান বলছে, জম্মু-কাশ্মীরে ২০১৪ থেকে ২০১৮র মধ্যে সন্ত্রাসবাদী হামলায় সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর হাড় বেড়েছে ৯৩%। গত পাঁচ বছরে সেখানে সন্ত্রাসের হাড় বেড়েছে ১৭৬%। আর এই সবই যে ঠিক, তা প্রমাণ করল পুলওয়ামার হামলা।
দিনটা ছিল ভালোবাসার। কিন্তু এরকম রক্তাক্ত ১৪ ফেব্রুয়ারি বোধহয় ইতিহাস আর দেখেনি। যে ভূস্বর্গ তার ফুলের সুবাসের জন্য খ্যাত, সেই উপত্যকাতেই আজ চলছে রক্তের হোলি খেলা। আর কত দিন চলবে এই নৃশংসতা! আর কত মানুষ হারাবে কাছের মানুষদের! উত্তরটা অজানা, হয়তো দেওয়া কঠিনও বটে। কিন্তু দেশের কোণে কোণে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে একটাই ছাইচাপা প্রশ্ন, হাও’স দ্য জোশ। জোর গলায় ‘ইয়েস স্যর’ বলার মানুষ আছে তো?
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…