সামনেই তো দোল আসছে। আর তার মানেই রঙ খেলে ভূত হতে হবে। এই আনন্দের সঙ্গে কোনও আপোষ করা যায় না। কিন্তু একটু ভেবে দেখেছেন কী, এই রঙ খেলার আনন্দের সঙ্গে আসলে আপনার চুল আর ত্বকের যে যথেষ্ট আপোষ করতে হচ্ছে? আসলে আজকাল তো আমরা সবাই যে রঙ ব্যবহার করি তা কেমিক্যাল যুক্ত। যদিও মুখে আমরা বলি হার্বাল রঙ ব্যবহারের কথা, কিন্তু সবাই শেষ পর্যন্ত ওই কেমিক্যাল রঙই গায়ে মাখি। আর তার ফলে ত্বক হয় শুষ্ক আর চুলের বাজে বারোটা।
কী, ভয় পেলেন নাকি? না না রঙ খেলা বন্ধের কথা ভাবতেই হবে না। বরং আসুন আজ আপনাদের এমন কিছু উপায়ের কথা বলি যার ফলে রঙও খেলবেন মজা করে আর ত্বক ও চুলও হাসবে।
অন্য উপায় বা টিপসের কথা তো বলবই। কিন্তু তার আগে ত্বক আর চুলের থেকে রং তোলার জন্য দুটো প্যাকের কথা বলি আপনাদের। এই দুটো প্যাক খুবই কার্যকরী। রঙ খেলে উঠে একটু সময় নিয়ে এই প্যাক ব্যবহার করুন। দেখবেন খুব ভালো ভাবে রঙ উঠে যাচ্ছে।
চুলের জন্য মেথি এবং দই দুটোই উপকারী। আমরা মেথির তেল যেমন ব্যবহার করি, তেমনই হেনা করতে গিয়ে বা অন্য প্যাকের মধ্যেও দই দিয়ে থাকি। এবার এই দুইয়ের কামাল দেখবেন রঙ তুলতে।
উপকরণঃ ৫ চামচ মেথি বীজ, ৪ চামচ দই।
পদ্ধতিঃ প্রথমে রঙ খেলে এসে মাথাটা জলে ভিজিয়ে দু বার শ্যাম্পু করে নিন। মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এবার চুল খানিক পরিষ্কার হয়ে এসেছে। এর মধ্যে এবার আপনি ওই প্যাক ব্যবহার করুন। মেথি বীজ আগের দিন ভিজিয়ে রাখুন রাতে।
সকালে উঠে মেথি ভালো করে বেটে নিন। এবার এর মধ্যে টক দই দিন আর মিশিয়ে নিন। এবার এই প্যাক মাথায় মেখে রেখে দিন ৩০ মিনিট মতো। তারপর আবার হাল্কা শ্যাম্পু করে নিন। চুল পরিষ্কারও হবে আর যেহেতু রঙ চুল শুষ্ক করে দিতে পারে, দই সেখানে চুল মোলায়েম রাখে।
চুলের পর এবার পালা ত্বকের যত্ন নেওয়ার। কেমিক্যাল রঙ যখন আপনার ত্বকের সংস্পর্শে আসে আর অনেক ক্ষণ থাকে, সেটা আপনার ত্বকের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। আপনার ত্বক কিন্তু ওই রঙ নেওয়ার জন্য তৈরি নয়। তাই আপনার ত্বককে দিন মধু আর দইয়ের যত্ন।
উপকরণঃ ৩ চামচ টক দই, ১ চামচ মধু, খানিক চন্দন গুঁড়ো, ২ চামচ লেবুর রস।
পদ্ধতিঃ একটি পাত্রে সবকটি উপকরণ মিশিয়ে নিন। মুখে একটা ভালো ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এবার ওই মিশ্রণটা মুখে মেখে নিন আর ২০ মিনিট মতো রেখে দিন। তারপর ধুয়ে নিন। দেখবেন সঙ্গে সঙ্গেই মুখ খুব পরিষ্কার লাগছে।
এবার আসুন আপনাদের জানাই রঙ খেলার আগের ও পরের কয়েকটি টিপস।
১. দোল খেলতে বেরনোর আগে ভালো করে ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন।
২. সারা শরীরে নারকেল বা অলিভ তেল পুরু করে দিন। বিশেষ করে চোখের নিচে আর নখে দিন কারণ ওই সব জায়গায় রঙ তাড়াতাড়ি বসে যায়।
৩. ঠোঁটে পুরু করে লিপবাম বা ভেসলিন দিন যাতে রঙ না লেগে থাকে। কারণ রঙ লেগে থাকলে তা খাবারের সঙ্গে মিশে পেটে যেতে পারে। তা খারাপ করতে পারে শরীর।
৪. চুলের মধ্যে নারকেল তেল ভালো করে মেখে নিন। তাহলে রঙ বসে যাবে না চুলে। তাড়াতাড়ি উঠে যাবে রঙ।
৫. চোখে কন্ট্যাক্ট লেন্স থাকলে তা খুলে নিন। আর চশমা পড়া থাকলে মাঝে মাঝে মুছে নিন।
১. খেলার পর সঙ্গে সঙ্গে চলে আসুন আর স্নান করে নিন। রোদে বেশি ঘুরলে রঙ বসে যায়, তুলতে সমস্যা হয়।
২. চুল থেকে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার অবশ্যই লাগাবেন।
৩. স্নান করার পর ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই লাগাবেন।
৪. রঙ তুলতে মুখে সাবান দেওয়া ঠিক নয়। সাবান মুখ শুষ্ক করে দেয়। তার বদলে ক্লিনসিং মিল্ক বা ফেস ওয়াশ ব্যবহার করুন।
৫. আপনার যদি অ্যালার্জি বা র্যা শের সমস্যা থাকে তাহলে এই কেমিক্যাল দেওয়া রঙ একেবারেই খেলবেন না। চেষ্টা করুন হার্বাল রঙ ব্যবহার করার, তাও অল্প।
এই দোলে তাই আর রিস্ক নিয়ে রঙ খেলা নয়। নিজের মতো করে আনন্দ করুন আর রঙ লাগতে দিন আপনার শরীরে আর মনে, আপনার সৌন্দর্যে নয়।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…